ফ্যাক্ট চেক: BJP শাসিত ওড়িশার দৃশ্য দাবিতে ছড়াল BJD-র আমলে রাজনৈতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ওড়িশার জাজপুর জেলার রামবাগের ঘটনা। সেই সময় ওড়িশায় বিজেপি নয়, বরং বিজেডি-র সরকার ছিল; এবং মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নবীন পট্টনায়েক। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: BJP শাসিত ওড়িশার দৃশ্য দাবিতে ছড়াল BJD-র আমলে রাজনৈতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ভিডিও

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে প্রকাশ্য রাস্তায় এক বয়স্ক ব্যক্তিকে বেল্ট দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে দেখা যাচ্ছে অপর এক ব্যক্তিকে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বিজেপি শাসিত ওড়িশার জাজপুরে দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করায় ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে বেধড়ক মারধর করেছে বিজেপির এক পঞ্চায়েত প্রধান।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “বিজেপি শাসিত উড়িষ্যার জাজপুরে, পঞ্চায়েত প্রধানকে দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করায়, এক পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধ কে কিভাবে অত্যাচার করছে দেখুন। এই হচ্ছে বিজেপি।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ওড়িশার জাজপুর জেলার রামবাগের ঘটনা। সেই সময় ওড়িশায় বিজেপি নয়, বরং বিজেডি-র সরকার ছিল; এবং মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নবীন পট্টনায়েক। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওটির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর ওড়িয়া সংবাদমাধ্যম OdishaTV এবং Kanak News-এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এই একই ভিডিও-র বর্ধিত সংস্করণ-সহ দুটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উভয় প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পুরনো রাজনৈতিক বিবাদের জেরে ওড়িশার জাজপুর জেলার দশরথপুর ব্লকের রামবাগ এলাকায় স্থানীয় তারাপদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান লক্ষ্মীধর সাহুকে বেল্ট দিয়ে মারধর করেছে বেশ কয়েকজন যুবক।

যা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে বিজেপি-শাসিত ওড়িশার কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ ২০২২ সালে ওড়িশায় ক্ষমতায় ছিল বিজেডি তথা বিজু জনতা দল এবং মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নবীন পট্টনায়েক। অন্যদিকে, ওড়িশায় গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে প্রথমবারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি

Advertisement

এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে ভাইরাল ভিডিও এবং এর স্ক্রিনশট-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের আয়োজিত ওড়িশার পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্র করে সৃষ্ট পুরনো বিবাদের জেরে জাজপুর জেলার দশরথপুর ব্লকের তারাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান লক্ষ্মীধর সাহুকে বেল্ট দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে আট যুবক। ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলপুর-জাজপুর সড়কের রামবাগ হাই স্কুলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। সেদিন লক্ষ্মীধর সাহু তার গ্রামের এক মহিলাকে নিয়ে জাজপুর শহরে যাচ্ছিলেন। তারা যখন রামবাগে পৌঁছন তখন মঙ্গলপুর এলাকার দেবদত্ত দাস, সন্তোষ মোহান্তি এবং মানস মোহান্তি সহ মোট আট যুবক তাদের পথ আটকে লক্ষ্মীধর সাহুকে বেধড়ক মারধর করে। এই ঘটনায় জাজপুর টাউন পুলিশ তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। 

প্রতিটি প্রতিবেদনেই লক্ষ্মীধর সাহুকে পুরনো রাজনৈতিক বিবাদের জেরে মারধর করার কথা উল্লেখ করা হলেও তার এবং অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয়ের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তাই এরপর আমরা বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আজ তকে ওড়িশার সাংবাদিক অজয় নাথের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “ভাইরাল ভিডিওর আক্রান্ত লক্ষ্মীধর সাহু এবং তাকে যারা মারধর করছে তারা সকলেই বিজেডি কর্মী বা সমর্থক। আসলে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওড়িশার পঞ্চায়েত নির্বাচন আয়োজিত হয়। সেই সময় বিবাদে জড়িয়ে পড়ে বিজেডি তথা বিজু জনতা দলের দুই গোষ্ঠী। পুরনো সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিজেডির প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান লক্ষ্মীধর সাহুকে মারধর করে বিজেডি-র অন্য এক গোষ্ঠীর কয়েকজন যুবক। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।”

এর থেকে স্পষ্ট হয় যে, বিজেপি শাসিত ওড়িশার দৃশ্য দাবি করে শেয়ার করা হচ্ছে ২০২২ সালে বিজেডি সরকারের আমলের পুরনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ভিডিও।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook users

দাবি

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি শাসিত ওড়িশার জাজপুরে দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করায় ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে বেধড়ক মারধর করেছে বিজেপির এক পঞ্চায়েত প্রধান।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ওড়িশার জাজপুর জেলার রামবাগের ঘটনা। সেই সময় ওড়িশায় বিজেপি নয়, বরং বিজেডি-র সরকার ছিল; এবং মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নবীন পট্টনায়েক।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement