ফ্যাক্ট চেক: বিহারে সরকার পরিবর্তনের ডাক সাধারণ মানুষের! ছড়াচ্ছে ভোপালের অসম্পর্কিত ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি-র সঙ্গে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই, এমনকি এটি বিহারেরও নয়। বরং ভিডিওটি ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রদেশে ভোপালে ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে আয়োজিত জনসভার দৃশ্য।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বিহারে সরকার পরিবর্তনের ডাক সাধারণ মানুষের! ছড়াচ্ছে ভোপালের অসম্পর্কিত ভিডিও

আগামী ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। ভোটমুখী বাংলার প্রতিবেশী এই রাজ্যে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি জনজোয়ারের ভিডিও। যেখানে হাজার হাজার মানুষকে একটি জনসভায় একত্রিত হতে দেখা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেরই হাতে রয়েছে নীল রঙের পতাকা এবং গলায় জড়ানো আছে নীল গামছা। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বিহারে ডবল ইঞ্জিন সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনসভায় অংশ নিয়ে ক্ষমতা পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে সেই রাজ্যের সাধারণ মানুষ। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “এটা ২০০-৩০০ টাকা দিয়ে ভিড় করা জনতা নয় স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসেছে বিহার সরকার পরিবর্তনের ডাক দিতে যেখানে ডবল ইঞ্জিন সেখানে অত্যাচার বুলডোজার মিথ্যাচার ভ্রষ্টাচার অসংবিধানিক কাজ।” পাশাপাশি, ভিডিও-র ফ্রেমের উপরে লেখা হয়েছে, “এই ভিডিও মোদি মিডিয়া দেখাবেনা, ডবল ইঞ্জিন সরকার অত্যাচারের প্রতি বিহারবাসি পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি-র সঙ্গে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই, এমনকি এটি বিহারেরও নয়। বরং ভিডিওটি ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রদেশে ভোপালে ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে আয়োজিত জনসভার দৃশ্য।
সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিও এবং দাবির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম সংগ্রহ করে সেগুলি গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘Bahujan Lives Matter’ নামক একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে একাধিক ছবি এবং ভিডিও পাওয়া যায়। অন্য অ্যাঙ্গেল থেকে তোলা সেই সব ছবি ও ভিডিওর বেশ কয়েকটির ফ্রেমের সঙ্গে ভাইরাল ভিডিও-র সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। পোস্টের ক্যাপশনে সেটিকে ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে আয়োজিত জনসভার দৃশ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

পাশাপাশি, ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ‘ভীম আর্মি রাজস্থান’ নামক একটি ফেসবুক পেজেও ভাইরাল জনসভার একাধিক ছবি পাওয়া যায়। ছবিগুলি পোস্ট করে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোপালে বিজেপি তথা মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের বিরুদ্ধে ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের জনসভা। সেই পোস্টে ব্যবহৃত একটি ছবির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিও-র একাধিক ফ্রেমের তুলনা করলে সেখানে থাকা তাঁবু, মঞ্চের সামনে ভিড়ের মধ্যে রাখা ব্যারিকেড এবং মঞ্চের উপরে বাবা সাহেব আম্বেদকরের ছবি লাগানো বক্সের মধ্যএ হুবহু মিল পাওয়া যায়। যা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ভাইরাল ভিডিওটি ভোপালে ভীম আর্মির জনসভার। নিচে ভাইরাল ভিডিও-র সঙ্গে ‘ভীম আর্মি রাজস্থান’ নামক ফেসবুক পেজে প্রাপ্ত ছবির তুলনা দেখা যাবে।

এরপর বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করলে একাধিক সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও-র সঙ্গে সাদৃশ্যযুক্ত ছবি-সহ একাধিক প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভোপালে ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়। সেই সভায় প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়েছিল বলে ভীম আর্মির তরফে দাবি করা হয়েছিল। সভা থেকে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান তথা বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দলিত, আদিবাসী এবং অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষদের বিরুদ্ধে বঞ্চনা এবং নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সরকারের কাছে মোট ২৫ দফা দাবি পেশ করেন ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, বিহারে ডবল ইঞ্জিন সরকারে বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে মধ্যপ্রদেশে ভীম আর্মির পুরনো জনসভার ভিডিও।

ফ্যাক্ট চেক

facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিহারে ডবল ইঞ্জিন সরকারের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনসভায় অংশ নিয়ে ক্ষমতা পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে সে রাজ্যের মানুষ।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওটি-র সঙ্গে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই, এমনকি ভিডিওটি বিহারেরও নয়। বরং সেটি মধ্যপ্রদেশে ভোপালে ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের নেতৃত্বে আয়োজিত জনসভার দৃশ্য।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement