বিশ্বজোড়া সমকামী মানুষদের জন্য জুন মাসের একটি মাহাত্ম্য রয়েছে। একে ইংরাজিতে প্রাইড মান্থ বলা হয়ে থাকে, যার মাধ্যমে সমকামিতা উদযাপন করা হয়। তবে নেটিজেনদের একাংশ দাবি করছেন, এই মাসেই নাকি এক সমকামী যুগলের সঙ্গে এক চরম দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের একাংশ দাবি করছেন, আমেরিকার বস্টনে একটি চার্চে যখন এক সমকামী যুগলের বিয়ে হচ্ছিল, তখনই তাতে বাজ পড়ে এবং আগুন লেগে সেখানেই সবার মৃত্যু হয়।
बोस्टन के चर्च मे समलैंगिक विवाह किया जा रहा था। चर्च पे बिजली गिरी और भयानक आग लग गई जिसमे शायद ही कोई बच के निकल सका
— अखंड भारत (@hindu_desham) June 15, 2023
शायद लगता है जेसु जि गुस्सा हो गए 😳😜🤣 pic.twitter.com/azmhixUAXz
ভাইরাল সেই পোস্টে হিন্দিতে লেখা হয়েছে, "বস্টনের চার্চে সমলিঙ্গ বিবাহ চলছিল কিন্তু চার্চে বাজ পড়ে এবং ভয়াবহ আগুন লেগে যায়। সম্ভবত কাউকেই জীবিত উদ্ধার করা যায়নি।"
बोस्टन के चर्च मे समलैंगिक विवाह किया जा रहा था चर्च पे बिजली गिरी और भयानक आग लग गई जिसमे शायद भी कोई बच के निकल नहीं सका
— हिंदू_केशु🙏🚩💞🇮🇳 (@keshu_777) June 14, 2023
शायद लगता है जेससु जि गुस्सा हो गए 😳😜🤣 pic.twitter.com/XmlEXqaATz
এই পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে আগুন লাগার সময় চার্চে সমকামী বিয়ে হওয়ার দাবিটি ভুয়ো। উক্ত সময়ে চার্চ বন্ধ ছিল।
কীভাবে জানা গেল সত্যি?
সবার প্রথম কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা ওই অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে বিশদ জানার চেষ্টা করি। কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই।
গত ৪ জুন, ২০২৩-এ প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে লেখা হয় যে ওই মাসের ২ তারিখ ম্যাসাচুসেট্সের এই চার্চে একটি বিধ্বংসী আগুন লাগে। প্রায় ১৬০ বছর পুরনো এই চার্চের আগুন নেভাতে প্রায় ১০০ জন দমকল কর্মীকে কাজে লাগতে হয়।
যদিও এই প্রতিবেদনে কারোর হতাহত হওয়ার কথা লেখা হয়নি। এমনকি, আগুন লাগার সময় কোনও সমকামী যুগলের বিয়ে, বা কোনও অনুষ্ঠান চলছিল, এমন কিছুই লেখা হয়নি। এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে আমরা মার্কিন ও বিশেষত বস্টনের নিউজ রিপোর্টও খতিয়ে দেখা শুরু করি।
বস্টন ২৫ নিউজ, যার লোগো ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে প্রকাশিত রিপোর্টে লেখা হয় যে ১৮০০-র শতকে এই চার্চটি পুরোপুটি কাঠের তৈরি ছিল। যে কারণে আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ভস্মীভূত হয়ে চার্চটিও ভূপতিত হয়।
এ বাদেও আমরা মার্কিং সংবাদ মাধ্যমের আরও দুটি রিপোর্ট খতিয়ে দেখি। সেখানেও সমকামী যুগল বা কোনও বিয়ে সম্পর্কে কিছু লেখা হয়নি। প্রত্যেক রিপোর্টেই উল্লেখ পেয়েছে আগুন লাগার সময় চার্চটি বন্ধ ছিল।
এই নিয়ে আরও কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি)-র একটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেই প্রতিবেদনে স্থানীয় দমকল বিভাগের প্রধানকে উদ্ধৃত করা হয়, এবং জানানো হয় যে তিনি ইমেল মারফৎ নিশ্চিত করেছেন যে আগুন লাগার সময় চার্চটি বন্ধ ছিল। সেখানে কোনও বিয়ে হচ্ছিল না। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সও এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
অর্থাৎ চার্চে আগুন লাগার সময় সমকামী যুগলের বিয়ের দাবিটি যে ভুয়ো, তা বুঝতে বাকি থাকে না।
বস্টনের একটি চার্চে সমকামী যুগলের বিয়ে চলাকালীন বাজ পড়ে চার্চে আগুন লেগে যায়। সম্ভবত কেউই বাঁচতে পারেনি।
যখন চার্চে আগুন লাগে তখন সেখানে কেউ ছিল না, তা ছিল তালাবন্দি। এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই।