scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: সুন্দরী মহিলার ‘হালালা’কে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরে বাংলাদেশে ১২ জনের মৃত্যু? না, ভাইরাল ভিন্ন ঘটনার ভিডিও

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে ‘হালালা’র কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটিতে চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব পদের আসল দাবিদার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

সম্প্রতি বাংলাদেশের গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় হিল্লা বা ‘হালালা’ বিয়ের ধর্মীয় নির্দেশ বা নিয়ম সম্পর্কে জানতে আসা এক মহিলার সঙ্গে ২ ঘন্টার চুক্তিতে বিয়ে করেন এক মাদ্রাসা পরিচালক ইসমত আলী আশিকি নমক এক ব্যক্তি। এরপর স্থানীয় মসজিদের ইমাম  ইমাম কপিল উদ্দিনের নির্দেশে ওই মহিলার সঙ্গে মসজিদের সিঁডিতেই সহবাস করেন অভিযুক্ত ইসমত আলী। ঘটনা প্রকাশে আসতেই ইমামকে বরখাস্ত করে মসজিদ কমিটি।

আর এই ঘটনার রেষ কাটতে না কাটতেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বাংলাদেশে হালালাকে কেন্দ্র করে বিবাদ সংক্রান্ত একটি ভিডিও। যেখানে একটি মসজিদের ভিতরে বেশকিছু ব্যক্তিকে একে অপরের সঙ্গে মারামারি করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সেটিতে বাংলাদেশে এক সুন্দরী মহিলার ‘হালালা’ কে করবে সেই সংক্রান্ত বিবাদের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। আর এই ঘটনার জেরে তবলিগি জামাতের ১২ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “সুন্দরী মহিলার হালালা কে করবে তা নিয়ে বাংলাদেশে শুরু হওয়া বিবাদে এখন পর্যন্ত ১২ জন তাবলিগী ৭২ -এর হুর পেয়েছে..!” (সব বানান অপরিবর্তিত।) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে ‘হালালা’ কিংবা তবলিগি জামাতের ১২ জন সদস্যের মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটিতে চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব পদের আসল দাবিদার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল ভিডিও ও দাবির সত্যতা জানতে সেটির কি-ফ্রেম নিয়ে গুগলে সার্চ করলে ২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর একটি ফেসবুক প্রোফাইলে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে করে সেখানে লেখা হয়েছে, “আহারে আমাদের সোনার বাংলাদেশ !! র*ক্তাক্ত জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম। কেয়ামত বেশি দূরে নয়।” ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশি সংবাদমাধ্য বাংলা ট্রিবিউনের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এই একই ভিডিও পোস্ট করে লেখা হয়েছে, “বায়তুল মোকাররমে পুরনো ও নতুন খতিবের অনুসারীদের হা/তা/হা/তি।” 

Advertisement

এরপর উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী সার্চ করলে ২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর শ্যামল সিলেট নামক একটি বাংলাদেশি পোর্টালে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে লেখা হয়েছে, “জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পুরনো ও নতুন খতিবের অনুসারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।”  

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী সার্চে ২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম কালবেলায় এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে মসজিদের ভিতরে চলা বিবাদের একটি ছবি-সহ লেখা হয়েছে, “রাজধানীর পল্টনে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের মধ্যে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকজন মুসল্লি আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের আগে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  জানা গেছে, বায়তুল মোকাররমের বর্তমান ও সাবেক দুই খতিবের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নামাজের আগে নিয়মানুযায়ী বায়তুল মোকাররম মসজিদের বর্তমান খতিব মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বয়ান করছিলেন। এমন সময় পুরানো খতিব মুফতি রুহুল আমিন (আত্মগোপনে থাকা) তার অনুসারীদের নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করেন। নতুন খতিবের কাছে থাকা মাইক্রোফোনে পুরনো খতিব হাত দিলে বর্তমান খতিবের অনুসারীরা প্রতিবাদ করেন। এরপর দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যায়।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব পদের আসল দাবিদার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের ভিডিও মিথ্যে দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিওটিতে বাংলাদেশে এক সুন্দরী মহিলার ‘হালালা’ কে করবে সেই সংক্রান্ত বিবাদের জেরে তবলিগি জামাতের ১২ জন সদস্যের নিহত হওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

ফলাফল

ভিডিওটির সঙ্গে ‘হালালা’র কোনও সম্পর্ক নেই। সেটিতে চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব পদের আসল দাবিদার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement