ফ্যাক্ট চেক: বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি মহিলাদের ওপর পুলিশি অত্যাচার? ভাইরাল ভিডিওটি অসম্পর্কিত

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি দিল্লি কিংবা কোনও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের মারধরের দৃশ্য নয়। বরং এটি ২০২৪ সালের তামিলনাড়ুর একটি ভিডিও, যেখানে পুলিশ কিছু বৃহন্নলাদের লাঠিচার্জ করেছিল।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি মহিলাদের ওপর পুলিশি অত্যাচার? ভাইরাল ভিডিওটি অসম্পর্কিত

সম্প্রতি দেশের একাধিক রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিক হেনস্তার খবর উঠে এসেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। এমনকি যা নিয়ে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য কিছু মহিলাকে লাঠি দিয়ে মারতে মারতে তাড়িয়ে দিচ্ছে। 

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বিজেপি শাসিত দিল্লিতে পুলিশ বাঙালি মহিলাদের মারধর করছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন,“দিল্লিতে বিজেপির পুলিশের ভূমিকা দেখুন, বাঙালি অধ্যুষিত "হিন্দ-কলোনিতে" কোনোও মহিলা কনস্টেবল ছাড়াই বাঙালি মহিলাদের উপর লাঠিচার্য করছে লাথি মারছে অমিত শাহের পুলিশ।।” (সব বানান অপরিবর্তিত)  

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি দিল্লি কিংবা কোনও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের মারধরের দৃশ্য নয়। বরং এটি ২০২৪ সালের তামিলনাড়ুর একটি ভিডিও, যেখানে পুলিশ কিছু বৃহন্নলাদের উপর লাঠিচার্জ করেছিল।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওটির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর একটি ফেসবুক প্রোফাইলে এই একই ভিডিও-সহ একটি পোস্ট পাওয়া যায়। তামিল ভাষায় লেখা ভিডিওর ক্যপশন থেকে জানা যায়, কোনও একটি বিষয় পুলিশের সঙ্গে  বিতর্কের জেরে প্রায় ৪০ জন বৃহন্নলা বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ তিরুনেলভেলি জেলার পানাগুডি থানার বাইরে জড়ো হয়েছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে বলার পরে তারা না যাওয়ায় তাদের উপর লাঠিচার্জ করা হয়েছিল।

এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে তামিল ভাষায় এই সংক্রান্ত একাধিক প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেইসব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পানাগুডি থানার পুলিশ বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছিল যে বৃহন্নলা বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ রাতে যানবাহনের পথ আটকে টাকা আদায় করে। এমনকি কিছু প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে তারা হাইওয়েতে পতিতাবৃত্তিও করত। 

Advertisement

এইসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুই বৃহন্নলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পানাগুডি থানায় ডাকা হয়েছিল। আর এর পরেই আটক বৃহন্নলাদের সমর্থনে থানার বাইরে প্রতিবাদ শুরু করে তাদেরই সহযোগী একদল বৃহন্নলা। এমনকি প্রতিবাদের সময় তারা তাদের পোশাকও খুলে ফেলে, পুলিশকে গালিগালাজ করে এবং থানার কাছে রাখা ফুলের টব ভেঙে দেয়। হট্টগোল বেড়ে গেলে পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করে। পুলিশের মারধরে পাঁচজন বৃহন্নলা আহত হয় এবং তারা পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, তামিলনাড়ুর পুরনো অসম্পর্কিত ভিডিও সম্প্রতি বিজেপি শাসিত রাজ্যে পুলিশ বাঙালি মহিলাদের মারধর করছে দাবি করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি শাসিত দিল্লিতে পুলিশ বাঙালি মহিলাদের মারধর করছে।

ফলাফল

ভিডিওটি দিল্লি কিংবা কোনও বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের মারধরের দৃশ্য নয়। বরং এটি ২০২৪ সালের তামিলনাড়ুর একটি ভিডিও, যেখানে পুলিশ কিছু বৃহন্নলাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement