ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশে হিন্দু ব্যক্তিকে খুন, দেহ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে মুসলিমরা? না, ভিডিওর ব্যক্তিটি মুসলিম

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটি হিন্দু নয় বরং মুসলিম। তার নাম মোঃ মিজান সরদার এবং চলতি বছরের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মাদারীপুর উপজেলার পূর্ব চিড়াই পাড়া গ্রামের একটি আম গাছে তার ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশে হিন্দু ব্যক্তিকে খুন দেহ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে মুসলিমরা? না, ভিডিওর ব্যক্তিটি মুসলিম

বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮৮টি মামলা দায়ের ও ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও। যেখানে একটি আম গাছ থেকে গলায় শিকল ও তালা দেওয়া আবস্থায় এক ব্যক্তির দেহ ঝুলতে দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি তাকে ঘিরে রয়েছে বেশকিছু মানুষ। ভিডিওর এক পর্যায়ে দেহটিকে গাছ থেকে নামিয়ে পাশের একটি ধানের জমিতে শুইয়ে রাখা হয়েছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে এক হিন্দু ব্যক্তিকে খুন করে তার দেহ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে মুসলিমরা। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “বাঙলাদেশের মাদারীপুরে এক হিন্দু ব্যক্তিকে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে জি**হা**দি মু**স**লি**মরা।” (সব বানান অপরিবর্তিত।)


ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটি হিন্দু নয় বরং মুসলিম। তার নাম মোঃ মিজান সরদার এবং চলতি বছরের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মাদারীপুর উপজেলার চিড়াই পাড়া গ্রামের একটি আম গাছে তার ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওর সত্যতা জানতে সেটির কি-ফ্রেম সার্চ করলে ২০২৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর একটি ফেসবুক প্রোফাইলে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে সেখানে লেখা হয়েছে, “মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের পূর্ব চিড়াইপাড়া গ্রামে আম গাছের সাথে শিকল পড়া অবস্থায় মিজান সরদার(৫২) নামে এক কৃষকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ।”

এরপর উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী সার্চ করলে Jagonews24.com নামক একটি বাংলাদেশি পোর্টালে ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট-সহ একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “আমগাছে গলায় শিকল বাঁধা ও তালা দেওয়া অবস্থায় মিজান সরদার (৫০) নামে এক কৃষকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।  নিহত মিজান সরদার মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদী ইউনিয়নের বণিকপাড়া গ্রামের মৃত আবু আলী সরদারের ছেলে।” প্রতিদিনের ক্রাইম নামক অপর একটি বাংলাদেশি পোর্টালেও এই একই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

এরপর ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-২৪-এ এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের পূর্ব চিড়াই পাড়া গ্রামের  আম বাগানের গাছ থেকে শিকলে ঝুলানো অবস্থায় মিজান সরদার (৫০) নামে এক কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে সদর থানা পুলিশ। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) চিড়াইপাড়া গ্রামের আলমগীর মাতুব্বরের মাছের ঘেরে আম গাছ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার রাতে মিজান বাড়ি থেকে বের হয়ে টুবিয়া বাজার সংলগ্ন সোলাইমান মাতুব্বরের বাড়িতে ওয়াজ মাহফিলে যায়। ওয়াজ শেষে রাতে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি।”

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “সকাল ১১টার দিকে এক শিশু আলমগীর মাতুব্বরের মাছের ঘেরের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় আম গাছের সঙ্গে শিকল পড়া অবস্থায় মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে মাদারীপুর সদর থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি গাছ থেকে নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। মাদারীপুর সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, আমরা এসে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি।” এই একই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে অপর এক বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদনেও

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, মুসলিম ব্যক্তির ভিডিও শেয়ার করে বাংলাদেশে হিন্দু ব্যক্তিকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে এক হিন্দু ব্যক্তিকে খুন করে তার দেহ গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে মুসলিমরা।

ফলাফল

ভিডিওর ব্যক্তিটি হিন্দু নয় বরং মুসলিম। তার নাম মোঃ মিজান সরদার এবং সে বাংলাদেশের মাদারীপুর উপজেলার পূর্ব চিড়াই পাড়া গ্রামের মৃত আবু আলী সরদারের ছেলে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement