ফ্যাক্ট চেক: বিহারে BJP-র হয়ে ভোট প্রচারে গিয়ে জনগণের হাতে আক্রান্ত পুলিশ? ভিডিও-র সত্যতা জানুন

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে বিহার পুলিশের তরফে বিজেপির হয়ে ভোট প্রচারের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং গত ৫ সেপ্টেম্বর বিহারের জামুই জেলার বারহাট থানার কাদুয়াতারি গ্রামে অবৈধ মদ তৈরির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের উপরে হামলা চালায়।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বিহারে BJP-র হয়ে ভোট প্রচারে গিয়ে জনগণের হাতে আক্রান্ত পুলিশ? ভিডিও-র সত্যতা জানুন

সামনেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে কোনও একটি স্থানে পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে বহু সংখ্যক মানুষ লাঠি-সোটা নিয়ে কয়েকজন পুলিশ কর্মী তাড়া করতে এবং তাদের আটকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিহারের জামুই গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের বিজেপিতে ভোট দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় থানার পুলিশ কর্মীরা। এই ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে পুলিশের উপরে হামলা চালায় এবং তাদেরকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয় গ্রামবাসীরা। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “বিহারের জামুই গ্রামে, কিছু পুলিশ কর্মী গিয়ে বলছিল  বিজেপিকে ভোট দেবেন। বাকিটা ইতিহাসl l” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে বিহার পুলিশের তরফে বিজেপির হয়ে ভোট প্রচারের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং গত ৫ সেপ্টেম্বর বিহারের জামুই জেলার বারহাট থানার কাদুয়াতারি গ্রামে অবৈধ মদ তৈরির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের উপরে হামলা চালায়।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিও এবং দাবির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর Bihar Tak-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই একই ভিডিও-সহ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিহারের জামুই জেলার বারহাট থানার কাদুয়াতারি গ্রামে অবৈধ দেশি মদ তৈরির কারখানায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেই সময় গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের বহু সংখ্যক মানুষ পুলিশের উপরে হামলা চালায়। এই ঘটনায় ৪ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়।



এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য-সহ প্রতিবেদেন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে কাদুয়াতারি গ্রামে অবৈধভাবে দেশি মদ তৈরি করা হচ্ছে বলে খবর ছিল স্থানীয় বারহাট থানার পুলিশের কাছে। সেই মতো শুক্রবার সন্ধ্যায় বারহাট থানার পুলিশের একটি দল কাদুয়াতারি গ্রামের অবৈধ মদ তৈরির ডেরাগুলি অভিযান চালায়। সেই সময় গ্রামের উত্তেজিত আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন পুলিশের উপর হামলা চালায় এবং পুলিশ কর্মীদের আটকে মারধর করে।

Advertisement

এই ঘটনায় পুলিশ কর্মীরা কোনও রকমভাবে সেখান থেকে পালিয়ে গ্রামবাসীদের হাত থেকে নিজেদের জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হয়। যদিও এই হামলায় ৪ জন পুলিশ কর্মী আহত হন। তারা হলেন বারহাট থানার এসআই উর্মিলা কুমারী, পিএসআই শুভম ঝা, চৌকিদার সুদামা পাসওয়ান এবং কনস্টেবল চন্দন কুমার। তাদের বারহাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করা হয়। আর এই হামলার পর জেলা পুলিশের তরফে ভিডিও দেখে মোট ৪৫ জনকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এবং এদের মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

তবে আমরা আমাদের অনুসন্ধানে এমন কোনও তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি যেখানে এই ঘটনার সঙ্গে পুলিশের তরফে বিজেপির হয়ে ভোট প্রচারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আমরা কাদুয়াতারি গ্রামের বাসিন্দা পাপ্পু মুর্মু, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান বিট্টু যাদব, আজ তকের জামুই জেলা সাংবাদিক রাকেশ কুমার সিং এবং জামুইয়ের পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ দয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁরা প্রত্যেকে আজ তক ফ্যাক্ট চেককে নিশ্চিত করেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে বিহার পুলিশের তরফে বিজেপি কিংবা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোট প্রচারের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং এটি অবৈধ মদ বিরোধী অভিযান নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের বিবাদের ঘটনা।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, বিহারে বিজেপির হয়ে ভোট প্রচারে গিয়ে জনগণের হাতে আক্রান্ত পুলিশ দাবিতে ছড়াল দেশি মদ বিরোধী অভিযানের ভিডিও। 

ফ্যাক্ট চেক

Facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিহারে বিজেপির হয়ে ভোট প্রচারে গিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশ।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে পুলিশের তরফে বিহারে বিজেপির হয়ে ভোট প্রচারের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং বিহারের জামুই জেলার কাদুয়াতারি গ্রামে অবৈধ মদ তৈরির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় স্থানীয়দের হাতে আক্রান্ত হয় পুলিশ।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement