ফ্যাক্ট চেক: 'লাভ জিহাদ' নয়! ভাইরাল ছবিটি এক দক্ষিণী অভিনেত্রীর, যিনি প্রাক্তন প্রেমিকের নিগ্রহের শিকার হন

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম তদন্ত করে দেখেছে যে, যে মহিলার ছবি পোস্ট করা হয়েছে, তাঁর নাম অঙ্কিতা বিজয় নয়। তিনি মালায়ালম অভিনেত্রী অনিকা বিক্রমণ। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাইয়ের বিরুদ্ধে তিনি নিগ্রহের অভিযোগ করেছিলেন। গোটা ঘটনার সঙ্গে 'লাভ জিহাদ'বা সাম্প্রদায়িক কোনও যোগ নেই।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: 'লাভ জিহাদ' নয়! ভাইরাল ছবিটি এক দক্ষিণী অভিনেত্রীর, যিনি প্রাক্তন প্রেমিকের নিগ্রহের শিকার হনলাভ জিহাদ' নয়! ভাইরাল ছবিটি এক দক্ষিণী অভিনেত্রীর, যিনি প্রাক্তন প্রেমিকের নিগ্রহের শিকার হন

চোখ ফোলা। রক্ত জমাট হয়ে কালশিটে পড়ে গিয়েছে। শরীরের একাধিক আঘাতের দাগ। নিগ্রহের চিহ্ন স্পষ্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে এক মহিলার এমনই কয়েকটি 'ভয়ানক' ছবি। যা পোস্ট করে অনেকেই দাবি করেছেন যে, ওই মহিলার নাম অঙ্কিতা বিজয়। যিনি আব্দুল নামে এক যুবকের প্রেমে পড়েন এবং তার দ্বারাই এমন ভয়ঙ্কর ভাবে নিগ্রহের শিকার হন। গোটা ঘটনাকে 'লাভ জিহাদ'-মোড়ক পেশ করছেন নেটিজেনদের একাংশ।

ফেসবুকে ছবিগুলো পোস্ট করে লেখা হয়েছে, "লাভজিহাদ কি ভয়ংকর করুন পরিণতি: জিহাদী নূরানী আলো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। অংকিতা বিজয় নামে এক সাম‍্যবাদি সেকুলার হিন্দু মেয়ে আব্দুলের প্রেমে পড়ে নিজ ধর্ম ও জন্মদাতা মা-বাবার আত্মীয় স্বজন সব ত্যাগ করে জান্নাতী হতে চেয়ে ছিল কিন্তু তার প্রেমিক আব্দুলই তাকে জীবিত অবস্থায় নরক দেখিয়ে দিলো।। তার শরীরের বিভিন্ন যায়গায় জান্নাতের উজ্জ্বল আলো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। যেসব হিন্দু মেয়েরা জান্নাতের আলোয় আলোকিত হওয়ার আশায় আছেন তাদের জন্য পোস্টটি উৎসর্গ করলাম। তাহার আব্দুল তো এমন ছিলো না"   (পোস্টের বানান অপরিবর্তিত)

একই দাবি-সহ ছবিগুলো আরও অনেকেই পোস্ট করেছেন।  

যদিও ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম তদন্ত করে দেখেছে যে, যে মহিলার ছবি পোস্ট করা হয়েছে, তাঁর নাম অঙ্কিতা বিজয় নয়। তিনি মালায়ালম অভিনেত্রী অনিকা বিক্রমণ। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাইয়ের বিরুদ্ধে তিনি নিগ্রহের অভিযোগ করেছিলেন। গোটা ঘটনার সঙ্গে 'লাভ জিহাদ'বা সাম্প্রদায়িক কোনও যোগ নেই।

কীভাবে এগোল অনুসন্ধান?

তদন্তের শুরুতে ভাইরাল ছবিগুলোর মধ্যে একটির রিভার্স সার্চ করলে, ২০২৩ সালের ৭ মে Hindustan Times ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের দিকে আমাদের নজর পড়ে।  সেই প্রতিবেদনেও ভাইরাল ছবির মতো একই ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল। এবং সেখান লেখা হয়েছিল যে, ছবিটি দক্ষিণী (মালয়ালম) অভিনেত্রী অনিকা বিক্রমণের। যিনি তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক, অনুপ পিল্লাইয়েরর দ্বারা শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন। ফেসবুকে ছবিগুলো পোস্ট করে নিজেই নিগ্রহের বর্ণনা দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছিলেন যে, সম্পর্কে থাকাকালীন তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত অভিযুক্ত। প্রথমবার চেন্নাইতে তাঁকে মারধর করেছিলেন অনুপ এবং দ্বিতীয়বার মারধর করলে বেঙ্গালুরুতে পুলিশের কাছে অভিযোগও জানিয়েছিলেন অনিকা।

Advertisement

এই খবরটি দেখার পর, আমরা কিওয়ার্ড সার্চ করে অনিকা বিক্রমণের নিগ্রহ সংক্রান্ত আরও খবর খুঁজে দেখার চেষ্টা করি। ২০২৩ সালের ওই একই দিনে সম্প্রচারিত CNNnews18-এর আরও একটি টুইট আমাদের নজরে পড়ে। সেখানেও একই তথ্য দেওয়া হয়েছিল। এবং ভাইরাল ছবিগুলো সেখানেও দেখতে পাওয়া যায়।

এছাড়া, Manorama Online, Ndtv এবং Zee News-এর ওয়েবসাইটেও আমরা এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন খুঁজে পাই। প্রতিটা ক্ষেত্রেই অভিযুক্তের নাম অনুপ পিল্লাই উল্লেখ করা হয়েছিল। কোথাও ওই ঘটনার সঙ্গে 'লাভ জিহাদ'-এর যোগ রয়েছে বলে কোনও খবর প্রকাশিত হয়নি।

India Today-র ইউটিউব চ্যানেলেও আমরা খবর একই তথ্য-সহ এবং একই ছবি দেখতে পাই।

ফলে সমস্ত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে একথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, ভাইরাল ছবিতে নিগ্রহের শিকার হওয়া যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে, তাঁর নাম অঙ্কিতা বিজয় নয়। তিনি মালায়ালম অভিনেত্রী অনিকা বিক্রমণ। যিনি প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাইয়ের দ্বারা নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

 

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভাইরাল ছবিটি অঙ্কিতা বিজয় নামের এক মহিলার। যিনি আব্দুল নামে এক যুবকের প্রেমে পড়েছিলেন এবং ভয়ঙ্কর নিগ্রহের শিকার হন।

ফলাফল

ভাইরাল ছবিতে নিগ্রহের শিকার হওয়া যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে, তাঁর নাম অঙ্কিতা বিজয় নয়। তিনি মালায়ালম অভিনেত্রী অনিকা বিক্রমণ। যিনি প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাইয়ের দ্বারা নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement