সম্প্রতি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে নেটিজেনদের একাংশ দাবি করছেন, গেহলট নাকি বলেছেন যে জল থেকে বিদ্যুৎ বেরিয়ে গেলে তা আর চাষের কাজে ব্যবহার করা যায় না।
ভিডিওটি শেয়ার করে অনেকেই গেহলটকে এক হাত নিয়েছেন। ভিডিওটিতে গেহলটকে হিন্দিতে বলতে শোনা যাচ্ছে, "এই যে বাঁধটি নির্মাণ করা হচ্ছে, তাতে বিদ্যুৎ তৈরি হবে। এর ফলে জল থেকে বিদ্যুৎ বেরিয়ে যাবে। তারপর সেই জল চাষের জমিতে গেলে তো কোনও লাভই হবে না। কারণ তাতে কোনও শক্তিই থাকছে না।"
अरे भाई कहेना क्या चाहते हो??? 😂😂😂
— Sanket Sharma (@SanketSharmaBJP) May 13, 2022
पानी से बिजली पैदा हुई तो पानी से ताक़त निकल जायेगी |🤣🤣🤣
सही में, क्या ऐसा हो सकता है ?@INCIndia @RahulGandhi @ashokgehlot51 @INCRajasthan @priyankagandhi pic.twitter.com/NnHMijqrdR
অনেকেই ভিডিওটি শেয়ার করে গেহলটের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে লিখছেন যে, তিনি আসলে বলতে কী চাইছেন?
ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) তদন্ত করে পেয়েছে যে এই ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর। মূল অংশ থেকে কয়েক সেকেন্ডের ক্লিপ কেটে বিভ্রান্তিকরভাবে একে প্রচার করা হচ্ছে।
ভাইরাল ভিডিওটির আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।
আফয়া তদন্ত
অশোক গেহলট ঠিক কী মন্তব্য করেছেন তা জানতে আমরা এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন ২০১৮ সালে প্রকাশিত ইন্ডিয়া টুডে-র একটি প্রতিবেদন নজরে পড়ে।
সেখানে লেখা ছিল, ২০১৮ সালে প্রথমবার গেহলটের বক্তব্যের এই সম্পাদিত অংশটুকু ভাইরাল হয়েছিল। কিন্তু গেহলট কি সত্যি এমন বলেছিলেন? বলেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেটি তাঁর মন্তব্য় ছিল না। এক পুরানো ঘটনা প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি ওই সময় কী ঘটেছিল তার বিবরণ দিচ্ছিলেন।
এই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর গেহলট তাঁর নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে পূর্ণাঙ্গ বক্তব্যের ভিডিওটি পোস্ট করেন। এবং সঙ্গে লিখে দেন যে এটাই আসল এবং পূর্ণাঙ্গ ভিডিও। সেখানে গেহলটকে বলতে শোনা যায়, "আমার মনে আছে যখন আমি ছোট ছিলাম, এবং ভাকরা লঙ্গল বাঁধ পণ্ডিত নেহেরু উদ্বোধন করেছিলেন। তখন জনসংঘের (যে দল পরবর্তীকালে বিজেপির রূপ পায়) লোকেরা ঘুরে ঘুরে নেহেরুর নামে বদনাম করতেন।"
ये इनकी असलियत है और इनकी फितरत में है कि मुझ जैसे साधारण इंसान को भी #ScientistGehlot का दर्जा दे देते हैं।
— Ashok Gehlot (@ashokgehlot51) June 5, 2018
This is the original, which was edited.. pic.twitter.com/KGygG7RPMn
এরপর গেহলট বলেন, "ওরা বলতেন যে বাঁধ তৈরি হওয়ার ফলে জল থেকে বিদ্য়ুৎ চলে যাবে। এমনটা হলে সেই জল আর চাষের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।" অর্থাৎ ভাইরাল পোস্টে যে পুরো ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়নি, তা এর মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভিডিওটি আসলে কেটেছেঁটে ভাইরাল করা হচ্ছে যা শুনলে মনে হবে গেহলট নিজেই এমনটা বলছেন।
কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা খুঁজে পাই যে ২০১২ সালেও একবার কোনও একটি সভায় বক্তব্য রাখার সময় গেহলট এই একই কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। এই ভিডিওটি গুজরাট কংগ্রেসের ইউটিউব চ্যানেল থেকে শেয়ার করা হয়েছিল।
সুতরাং, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি যে কাটছাঁট করে বিভ্রান্তিকর দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে তা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।
(দিল্লি থেকে যশ মিত্তলের ইনপুট-সহ)
অশোক গেহলট বলছেন যে জল থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করার পর সেই জল আর চাষের কাজে ব্যবহার করা যায় না কারণ তা শক্তি হারিয়ে ফেলে।
গেহলটের বক্তব্যের ভিডিওটি বিভ্রান্তিকরভাবে মূল অংশ থেকে কেটে শেয়ার করা হচ্ছে। আসলে তিনি ১৯৬৩ সালের কথা বলছিলেন যখন ভাখরা লঙ্গল বাঁধ নিয়ে জনসংঘ এমন গুজব ছড়াত বলে তিনি জানান।