
ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিওটি শেয়ার করে নেটিজেনদের একাংশ দাবি করেছেন যে, এই ভাবে পশ্চিমবঙ্গে একজন হিন্দু মহিলাকে জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে।
এই ভিডিওটি শেয়ার করে হিন্দিতে লেখা হয়েছে যে, "পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা দেখুন। ইসলামিকদের দ্বারা হিন্দু মহিলাকে জোর করে বন্ধক বানিয়ে কলমা পড়ানো হচ্ছে। হিন্দু সমাজের মেয়েরাই ইসলামিকদের প্রধান লক্ষ্য।" ভিডিওটি শেয়ার করে বেঙ্গল ফাইলসের হ্যাশট্যাগ দেওয়া হয়েছে।
बंगाल का हाल देखिए।
— Joy Kumar Basak (@JoyKumarBasak11) April 1, 2022
इस्लामियों द्वारा बंगाल में हिंदू महिला को जबरन बंधक बनाकर कलमा पढ़ाया जा रहा है।
हिंदू समाज की लड़कियां इन इस्लामियों का लक्ष्य है।@TarekFatah @AsYouNotWish @jihadwatchRS @KapilMishra_IND #bengalfiles #StopConversion pic.twitter.com/FZnKRsEHi1
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির আর্কাইভ এখানে ও এখানে দেখতে পাবেন।
ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম তদন্ত করে পেয়েছে যে ভাইরাল ভিডিওটি আসলে পশ্চিমবঙ্গের নয়, বরং বাংলাদেশের। একই সঙ্গে এই ভিডিওতে ধর্মান্তকরণও দেখানো হচ্ছে না। বরং এটি একটি জিন ছাড়ানোর ভিডিও বলে জানা গিয়েছে।
আফয়া তদন্ত
ইনভিড টুলের মাধ্যমে ভিডিওটিকে কিফ্রেমে ভেঙে সার্চ করার পর আমরা বেশ কয়েকটি একই ভিডিও ভিন্ন ভিন্ন দাবির সঙ্গে ফেসবুকে দেখতে পাই। এর মধ্যে বেশিরভাগ ভিডিওই ২০১৯ সালে প্রকাশ পেয়েছিল। সেই ভিডিওগুলিতে দাবি করা হয় এটি নাকি বাংলাদেশে এক হিন্দু মহিলাকে ধর্মান্তকরণের দৃশ্য।
ভিডিওর মাঝে এক জায়গায় ওই তথাকথিত হিন্দু মহিলাকে স্পষ্টভাবে ঝরঝরে ইসলামিক আয়ত বলতে শোনা যায়। যা থেকে কিছুটা সন্দেহ জাগে।
তবে ভিডিওটির শেষের দিকে তাকে জোর করে বলানো হয়, আমি এবার হিন্দু থেকে মুসলমান ধর্মে পরিবর্তন করলাম।
এই একই ভিডিওটি 'অপসরা' নামের একটি টুইটার প্রোফাইল থেকেও শেয়ার করা হয়। সেখানে অবশ্য বেশ কয়েকজন ব্যবহারকারী কমেন্ট করে জানান যে ভিডিওটি আসলে বাংলাদেশের, এবং তা ধর্মান্তকরণের নয়। বরং এটি আসলে বাংলাদেশের এক ধরনের রীতি যাকে জিন ছাড়ানো বলা হয়। ইসলামিক মতে, অনেকের শরীরে কিছু সময় জিন ভর করে যা ইসলামিক ধর্মগুরুরাই ছাড়াতে পারেন।
#StopConversion #bengalfiles @missionkaali pic.twitter.com/DCgAbfRuXA
— Apsara 🇮🇳 (@Indigen_Apsara) March 30, 2022
এরপর কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা ইন্ডিয়া টুডের একটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন খুঁজে পাই। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশ পাওয়া এই প্রতিবেদনে তদন্ত করে ধর্মান্তকরণের বিষয়টি নস্যাৎ করা হয়। আরও একাধিক ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনেও একই বিষয়টি উঠে আসে।
ইন্ডিয়া টুডে-র সেই প্রতিবেদনেই উল্লেখ করা হয় যে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ভিডিও সেই সময় বেশ কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেলে উপস্থিত ছিল। যদিও বর্তমানে সেই ভিডিওগুলি সেখান থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। তাও একথা স্পষ্ট করেই বলা যায় যে ভিডিওটি আসলে পশ্চিমবঙ্গের তো নয়-ই, একই সঙ্গে ধর্মান্তকরণেরও নয়।
দেখুন কী ভাবে বন্ধক বানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু মহিলার ধর্ম পরিবর্তন করা হচ্ছে।
ভাইরাল ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের নয়, বরং বাংলাদেশের। এ ক্ষেত্রে ধর্ম পরির্তন নয়, বরং জিন ছাড়ানো হচ্ছিল বলেই জানা গিয়েছে।