ফ্যাক্ট চেক: সাত নেতামন্ত্রীর নাম ফাঁসের হুমকি মানিকের? আফয়ার তদন্তে প্রকাশ্যে আসল সত্যি

ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, এমন কোনও মন্তব্য করেননি মানিক ভট্টাচার্য। যে দাবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিকর এবং অসত্য।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: সাত নেতামন্ত্রীর নাম ফাঁসের হুমকি মানিকের? আফয়ার তদন্তে প্রকাশ্যে আসল সত্যিবর্তমানে ইডির হেফাজতে রয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলাকে ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেফতার হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। গ্রেফতারির বিরোধিতায় ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ আদালতে গিয়েছেন তিনি। বিষয়টি এখনও বিচারাধীন হলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে অন্য চর্চা। 

ইতিমধ্যে ফেসবুকে একটি চাঞ্চল্যকর স্ক্রিনশট শেয়ার করতে শুরু করেছে নেটিজেনদের একাংশ। যেখানে লেখা রয়েছে, "আমি মুখ খুললে সব তৃণমূল নেতা জেলে যাবে, সরকার পড়ে যাবে। আমাকে দুর্নীতি করতে বলে এখন পাশে দাড়াচ্ছে না,আমি সব বলে দেবো।" (পোস্টটির বানান অপরিবর্তন করা হয়নি)

স্ক্রিনশটটি শেয়ার করে একজন লিখেছেন, "মন্ত্রী পার্থ চোর,বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য চোর, অনুব্রত চোর,শিক্ষা দপ্তরটাই জেলে। এখন মানিক বলছে আমি সব বলে দেব। আমাকে দুর্নীতি করতে বলে এখন কেউ পাশে নেই।" (পোস্টটির বানান অপরিবর্তন করা হয়নি)। পোস্টের আর্কাইভ লিঙ্কটিও দেওয়া হল। 

সত্যিই কি ইডি বা কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থার সামনে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার হুমকি দিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য?

ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, এমন কোনও মন্তব্য করেননি মানিক ভট্টাচার্য। যে দাবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিকর এবং অসত্য।

আফয়া অনুসন্ধান

গত কয়েক মাস ধরেই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি এবং সেই সংক্রান্ত খবর শিরোনামে রয়েছে। সেজন্য তদন্তের শুরুতেই আমরা এই সংক্রান্ত পুরনো ও নতুন খবরগুলো খুঁজে দেখি। প্রথমেই কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা এই সংক্রান্ত কোনও খবর পাইনি। মানিক ভট্টাচার্য তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার হুমকি দিলে, সেই খবর কোনও না কোনও সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করত। যা কিওয়ার্ড সার্চ করে আমাদের নরে আসেনি।

 'আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন'-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১১ অক্টোবর ইডির হাতে গ্রেফতার হন মানিক ভট্টাচার্য। গ্রেফতারির বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। এ নিয়ে নানাবিধ আইনি প্রক্রিয়া চলছে। 

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, দলীয় বিধায়কের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান কী? 

সেই উত্তরও আমাদের সামনে এসেছে। 'টিভিনাইন বাংলা' সূত্রে খবর, মানিক ভট্টাচার্ষকে নিয়ে তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে শাসকদল। রাজ্যের মন্ত্রী স্নেহাশিষ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দল মানিক ভট্টাচার্যের পাশে নেই। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, আইন আইনের পথে চলবে। আদালত যা সিদ্ধান্ত সেটাই চূড়ান্ত। কিন্তু মানিকের নাম মুখে নেননি তিনি।

এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল গুঞ্জন শুরু হয় যে, ইডির সামনে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার হুমকি দিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য। সঙ্গে শেয়ার হতে থাকে এই ধরনের পোস্ট ও স্ক্রিনশট।

এই গুঞ্জনের উৎস কী?

আফয়া অনুসন্ধানে ধরা পড়েছে 'SAHIL BANGLA TV &EDUCATION' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ১৭ অক্টোবর প্রথম এই খবরটি সম্প্রচারিত হয়। সেখান থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে থাকে, ইডির কাছে সাত তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীর নাম জানানোর হুমকি দিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য এবং শীঘ্রই তৃণমূল সরকার ভেঙে পড়বে। 

যদিও কোনও বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যমে এমন কোনও খবর আমাদের নজরে পড়েনি। বরং 'ABP Live'-এর একটি প্রতিবেদন  থেকে আমরা জানিতে পারি যে, ইডির সামনে একটি বিষয়ে মুখ খুলেছেন মানিক ভট্টাচার্য। আত্মীয়ের সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে ৮ কোটি  টাকা এল কীভাবে? এই বিষয়ে নাকি ED কাছে মুখ খুলেছেন মানিক ভট্টাচার্য 

সুতরাং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত এবং প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে প্রমাণিত হয় যে, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার কোনও হুমকি মানিক ভট্টাচার্য দেননি। অন্তত তেমন কোনও খবর এ যাবৎকালে কোনও বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে দাবি উঠেছে সেটি ভুল।  

ফ্যাক্ট চেক

Facebook

দাবি

ইডির সামনে সাত তৃণমূল নেতামন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন মানিক ভট্টাচার্য। এর ফলে তৃণমূল সরকার পড়ে যেতে পারে। এমনটাই নাকি তিনি জানিয়েছেন।

ফলাফল

একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রথম এই খবরটি সম্প্রচারিত হয়। এরপর তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। যদিও কোনও বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়নি। সুতরাং, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে দাবি উঠেছে সেটি ভুল।  

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement