এ বারের ফুটবল বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই তা নানা কারণে একাধিকবার শিরোনামে উঠে এসেছে। কখনও সমকামীদের প্রতি কাতারের চরমপন্থী ও রক্ষণশীল মনোভাবের কারণে, কখনও আবার স্টেডিয়ামের ভিতরে বিয়ার নিষিদ্ধ করার কারণে। তবে ইসলামিক দেশে এই বিশ্বকাপ আয়োজিত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই তার নানা আঙ্গিকে ধর্মীয় ছাপ পড়েছে।
সেই আবহেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হতে শুরু করেছে। ভিডিয়োটিতে এক ব্যক্তিকে একটি যন্ত্রের সাহায্য়ে কোনও ফুটবল মাঠের মধ্যে একটি ইসলামিক পতাকা নিয়ে উড়তে দেখা যাচ্ছে।
ভিডিয়োটি শেয়ার করে অনেকেই একে চলতি কাতার বিশ্বকাপের ঘটনা বলে দাবি করেছেন। এক মিনিটের এই ভিডিয়োটি শেয়ার করে তার সঙ্গে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "কালেমার পতাকা উড়লো কাতার বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামে, মাশাআল্লাহ।"
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই দাবিটি সত্যি নয়। ভাইরাল ভিডিয়োটি কমপক্ষে তিন বছর পুরনো ও কাতারের নয়।
আফয়া অনুসন্ধান
ভাইরাল ভিডিয়োটির থেকে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করতেই আমরা ওই ভিডিয়োর সঙ্গে সাদৃশ্য রাখে এমন একটি ছবি ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে খুঁজে পাই। সেখানে লেখা হয় যে এটি সৌদি আরবের কিং কাপ ২০১৯ এর ফাইনাল ম্যাচের অনুষ্ঠানের সময় ধারণ করা দৃশ্য।
২০১৯ সালের মে মাসের ২ তারিখে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। সেই ম্যাচ শুরুর আগেই এই অনুষ্ঠান প্রদর্শিত হয় যখন ইসলামিক কালেমার পতাকা সেখানে ওড়ানো হয়।
এই সূত্র ধরে আমরা ইউটিউবে আসল ভিডিয়োটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা সৌদি টাইমস্ নামের একটি চ্যানেলে ওই দিনের ম্যাচের টুকরো কিছু ভিডিয়ো খুঁজে পাই। তার মধ্যে এই ভাইরাল অংশটিও ছিল। উল্লেখ্য, এই ভিডিয়ো ২০১৯ সালের ৬ মে ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছিল। যা থেকে দিনের আলোর মতো একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় যে এটি কখনই কাতার বিশ্বকাপের ভিডিয়ো হতে পারে না।
এ ছাড়া লাইফ অব সৌদি আরিবিয়া নামের একটি পেজেও আমরা এই ভিডিয়ো খুঁজে পেয়েছি যা ২০১৯ সালের ৪ মে আপলোড করা হয়েছিল।
অর্থাৎ ভাইরাল ভিডিয়োটি যে বিভ্রান্তিকর দাবির সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে, তা এর থেকেই সাফ হয়ে যায়।
কাতার বিশ্বকাপে ইসলামিক কালেমার পতাকা ওড়ানো হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিয়োটি কাতারের নয়, বরং সৌদি আরবের। ২০১৯ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া কিং কাপের ফাইনাল ম্যাচের দরুণ এই দৃশ্য ধারণ করা হয়।