ফ্যাক্ট চেক: ২১০ হজ যাত্রী-সহ বিমান লোহিত সাগরে ভেঙে পড়ার দাবি ভিত্তিহীন, ভিডিওটি ২০১৯ সালের 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো। এমন কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। সঙ্গে ভিডিওটি ২০১৯ সালের একটি পৃথক ঘটনার। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: ২১০ হজ যাত্রী-সহ বিমান লোহিত সাগরে ভেঙে পড়ার দাবি ভিত্তিহীন, ভিডিওটি ২০১৯ সালের 

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় চমকে দেওয়া একটি পোস্ট বেশ ভাইরাল হচ্ছে। এই পোস্টে একটি বিমানকে সমুদ্রের মধ্যে ডুবে যেতে দেখা যাচ্ছে। পোস্টটি শেয়ার করে লেখা হচ্ছে যে ২১০ জন হজযাত্রীকে নিয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে উড়ে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে লোহিত সাগরে পড়ে গিয়েছে। 

৩০ সেকেন্ডের দীর্ঘ এই ভিডিওতে একটি যাত্রীবাহী বিমানকে ক্রমশ সমুদ্রে তলিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে যার আশেপাশে ছোট আকারের বোটও রয়েছে। ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, "গতকাল পশ্চিম আফ্রিকার মৌরিতানিয়া থেকে সৌদি আরবে হজ্বের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া একটি বিমান লোহিত সাগরের উপকূলে এসে বি*ধ্বস্ত হওয়া এবং দুই'শত দশজন হজ্ব যাত্রী নি*হত হওয়ার শিরোনাম সংক্রান্ত যেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, দেখুন সেই ভিডিও।"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো। এমন কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। সঙ্গে ভিডিওটি ২০১৯ সালের একটি পৃথক ঘটনার। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে 

বাস্তবে যদি এই ধরনের কোনও বিমান দুর্ঘটনা ঘটে থাকতো, তবে এমন ঘটনা গোটা বিশ্বে তোলপাড় ফেলে দেওয়ার মতো এবং এই ঘটনা নিয়ে পৃথিবীজোড়া সংবাদ মাধ্যমে খবরও প্রকাশ পেতো। কিন্তু এই ধরনের কোনও খবর কোনও বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ না পাওয়ায় ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। 

উল্টে আমরা এমন কিছু প্রতিবেদন পাই যেখানে লেখা হয়, মৌরিতানিয়া এয়ারলাইন্স ভাইরাল দাবিটি অস্বীকার করেছে। মৌরিতানিয়ার ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও বলেছে যে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি এবং তাদের সমস্ত যাত্রী নিরাপদে মক্কায় পৌঁছেছেন।

ভাইরাল ভিডিওটি কোথাকার ও কবেকার?

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে ওই একই বিমান ডোবার একই ধরনের ভিডিও পাওয়া যায় আরেকটি ফেসবুক পেজে। এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর। যা থেকে বোঝা যায় যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়কার নয় অন্তত ৫ বছর আগেকার। 

Advertisement

ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল, একটি এয়ারবাস A330 ইচ্ছাকৃতভাবে জলে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে একে কেন্দ্র করে স্কুবা ডাইভিংয়ের মতো অ্যাক্টিভিটির আয়োজন করা যায়। 

এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে হুরিয়ত ডেইলি নিউজ নামের একটি ওয়েবসাইটের একটি খবর পাওয়া যায় যা ২০১৯ সালের ১৫ জুুন প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই খবরে ওই একই যাত্রীবাহী বিমান ডোবার ছবি প্রকাশ করে লেখা হয়, পর্যটনে আরও গতি আনতে  তুরস্কের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের এদির্নে প্রভিন্সের ইব্রিস বন্দরের এক কিলোমিটার দূরে সমুদ্রগর্ভে ওই বিমানটিকে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে ওই এলাকায় স্কুবা ডাইভিংয়ের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানান এলাকার ডেপুটি গভর্নর আলি উইসাল।

ডাইভ ম্যাগাজিন নামক ইউটিউব চ্যানেলে ওই বিমানটি ডোবানোর একটি পৃথক ভিডিও পাওয়া যায়। যা নীচে দেখা যাবে। 

২০১৬ সালেও একই ভাবে তুরস্কের পক্ষ থেকে একটি A300 বিমান সমুদ্রে ডোবানো হয়েছিল। এই বিষয়ে ডেইলি মেলের একটি খবর এখানে পড়া যাবে। 

সবমিলিয়ে পরিষ্কার হয়ে যায় যে একটি অসম্পর্কিত ভিডিও এবং ভিত্তিহীন দাবির মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

হজের উদ্দেশ্যে আফ্রিকার মৌরিতানিয়া থেকে সৌদি আরবে যাওয়া একটি বিমান দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে সাগরে পড়ে এবং ২১০ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। 

ফলাফল

এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। ভিডিওটি ২০১৯ সালে তুরস্কের সমুদ্রে ইচ্ছাকৃত একটি বিমান ডোবানোর দৃশ্য। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement