ফ্যাক্ট চেক: মোদীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ভারতে শুরু ব্যাপক আন্দোলন? জানুন ভাইরাল ছবির আসল রহস্য 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ছবিটিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের দৃশ্য নয়। বরং ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট আর জি করকাণ্ডের ন্যায়বিচারের দাবিতে কলকাতার রাজপথে মহিলাদের মশাল হাতে রাত দখল ও প্রতিবাদ মিছিলের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: মোদীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ভারতে শুরু ব্যাপক আন্দোলন? জানুন ভাইরাল ছবির আসল রহস্য 

গণঅভ্যুত্থানের কারণে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তারপর গত ৮ আগস্ট দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনূস। আর সেই সার্বিক পরিস্থির মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, মশাল হাতে মহিলাদের মিছিলের একটি ছবি। 

ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে চলছে ব্যাপক আন্দেলন। ক্ষমতা পরীবর্তন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের পথেই হাঁটছে ভারতের জনগণ। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ছবিটি পোস্টকার্ড আকারে শেয়ার করে তার উপরে লিখেছেন, “ভারতে চলেছে মদি হটাও আন্দেলন বাংলাদেশের পথেই হাটছে ভারত।” পাশাপাশি ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, “গভীর চিন্তায় আছে ভারত।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) এই একই দাবি-সহ আরও পোস্ট দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ছবিটিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের দৃশ্য নয়। বরং ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট আর জি করকাণ্ডের ন্যায়বিচারের দাবিতে কলকাতার রাজপথে মহিলাদের মশাল হাতে রাত দখল ও প্রতিবাদ মিছিলের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

প্রথমত, ভাইরাল দাবিটি সন্দেহজনক। কারণ সম্প্রতি ভারতের কোনও স্থানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করার লক্ষ্যে কোনও আন্দোলন শুরু হলে সেই সংক্রান্ত খবর অবশ্যই ভারতীয় তথা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হবে। কিন্তু এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চে এমন কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি যা থেকে এই দাবির সত্যতা প্রমাণ হয়। এর থেকে অনুমান করা যায় যে ভাইরাল ছবিটি মোদী বিরোধী অন্দোলনের নয় বরং অন্য কোনও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও হতে পারে।

এরপর ভাইরাল ছবিটির সত্যতা জানতে সেটি নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে এই একই ছবি-সহ ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট নিউজ-১৮-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ছবিটি ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট রাতে কলকাতায় একটি মশাল মিছিলের সময় তোলা হয়েছিল। সেদিন রাতে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে মহিলারা কলকাতার রাজপথে মশাল হাতে মিছিল করেন। 

Advertisement

২০২৪ সালের ১৬ আগস্ট দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে এই একই ছবি-সহ অপর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাধীনতা দিবসের কয়েক ঘন্টা আগে আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে মধ্যরাতে সিটি অব জয় কলকাতার রাস্তায় মহিলাদের প্রতিবাদ মিছিল। রাত দখলের এই মিছিলে যোগ দিতে ১৪ আগস্ট রাতে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ৮বি বাসস্ট্যান্ডে মহিলাদের পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছিলেন হাজার হাজার পুরুষও। 

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী সার্চে ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট এই সময়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “রাতের রাজপথ দখল করল মেয়েরা। প্রতিবাদে গর্জে উঠল গোটা বাংলা। আরজি করকাণ্ডে ন্যায়বিচারের দাবিতে নজিরবিহীন প্রতিবাদ দেখল গোটা বাংলা। কলকাতা থেকে কালনা, বনগাঁ থেকে বালি, সর্বত্র পথে নামলেন শয়ে শয়ে নারী। ব্যানার, ফেস্টুন, মশাল হাতে রাতের শহরের দখল নিলেন তাঁরা। নিহত নির্যাতিতা তরুণীর ন্যায়ের দাবিতে রাতের দখল নিল মেয়েরা।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করার লক্ষ্যে ভারতে আন্দোলন শুরু হয়েছে দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে আর জি করকাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতার রাজপথে মহিলাদের মশাল মিছিলের ছবি।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

বাংলাদেশের পথেই হাঁটছে ভারতের জনগণ। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করার লক্ষ্যে ভারতে শুরু হয়েছে ব্যাপক আন্দোলন।

ফলাফল

ভাইরাল ছবিটি ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট আর জি করকাণ্ডের ন্যায়বিচারের দাবিতে কলকাতার রাজপথে মহিলাদের মশাল হাতে রাত দখল ও প্রতিবাদ মিছিলের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement