ফ্যাক্ট চেক: বিজেপি কাউন্সিলরের পুলিশকে মারধরের ভিডিও ছড়াচ্ছে তৃণমূল বিধায়কের দৌরাত্ম্য দাবিতে

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি তৃণমূল বিধায়কের পুলিশ কর্মীকে মারধরের নয়। বরং সেটিতে ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ কুমারকে এক পুলিশ কর্মীকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বিজেপি কাউন্সিলরের পুলিশকে মারধরের ভিডিও ছড়াচ্ছে তৃণমূল বিধায়কের দৌরাত্ম্য দাবিতে

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে কোনও একটি সভাকক্ষে বা রেস্তোরাঁর ভিতরে সাদা পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তিকে একজন পুলিশ কর্মীকে বেধড়ক মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওর এক পর্যয়ে পুলিশ কর্মীটিকে মেঝেতে পড়ে যেতেও দেখা যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল বিধায়ক মনসুর মহম্মদ দিমির একজন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীকে নির্মমভাবে প্রহার করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “টি.এম.ছি.পি-দাদাগিরি দেখুন...💚🔥 বাংলার বিধায়ক মনসুর মহম্মদ দিমিরকে দেখুন...👇 ভাবুন যখন পুলিশের ইউনিফর্মে কর্তব্যরত পুলিশের এই যখন অবস্থা তখন বাংলার সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হতে পারে...💔 এই ভিডিওটি এতো পরিমাণে শেয়ার করুন যাতে এটি সারা ভারতে দেখা যায়...” (সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি তৃণমূল বিধায়কের পুলিশ কর্মীকে মারধরের নয়। বরং সেটিতে ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ কুমারকে এক পুলিশ কর্মীকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। উপরন্তু, মহম্মদ দিমির নামে তৃণমূলের কোনও বিধায়কই নেই। 

কীভাবে জানা গেল সত্য?

প্রথমত, ভাইরাল ভিডিওটি সন্দেহজনক। কারণ সেখানে যে ব্যক্তিকে ওই পুলিশ কর্মীকে মারতে দেখে যাচ্ছে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল বিধায়ক মনসুর মহম্মদ দিমির হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ওয়েবসাইটে আমরা এই নামে কোনও বিধায়ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। যা থেকে অনুমান করা যায় যে ভিডিওটির সঙ্গে অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে।

এরপর ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা জানতে আমরা সেটি থেকে একাধিক স্ক্রিনশট নিয়ে সেগুলিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন আমরা ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর সংবাদ সংস্থা ANI UP/Uttarakhand-এর অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে এই একই ভিডিও-র বর্ধিত সংস্করণ-সহ একটি পোস্ট খুঁজে পাই। ভিডিওটি পোস্ট করে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ একজন সাব-ইন্সপেক্টরকে মারধর করেন। ওই সাব-ইন্সপেক্টর একজন মহিলা আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে মণীশের রেস্তোরাঁয় এসে ওয়েটারের সঙ্গে তর্কে জড়ালে তাঁকে মারধর করা হয়। অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

Advertisement

এরপর উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী সার্চ করলে দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট-সহ এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ চৌধুরীর মালিকানাধীন একটি রেস্তোরাঁয় তোলা হয়। অপর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুখপাল সিং পাওয়ার নামের মোহিউদ্দিনপুর পুলিশ আউট পোস্টের একজন এসআই মদ্যপ অবস্থায় তাঁর আইনজীবী বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে মণীশের রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। কিন্তু খাবার দিতে দেরি হওয়ায় রেস্তোরাঁর কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন ওই পুলিশ অফিসার। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রেস্তোরাঁ মালিক মণীশ কুমার সুখপাল সিংকে বেধড়ক মারধর করেন।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ কুমারের এক পুলিশ কর্মীকে মারধরের ভিডিও মিথ্যে দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিওতে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল বিধায়ক মনসুর মহম্মদ দিমিরকে একজন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীকে বেধড়ক মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। 

ফলাফল

মহম্মদ দিমির নামে কোনও বিধায়কই নেই পশ্চিমবঙ্গে। ভাইরাল ভিডিওটিতে ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বিজেপি কাউন্সিলর মণীশ কুমারকে এক পুলিশ কর্মীকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement