scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: ঠিক কী কারণে গ্রেফতার চিন্ময় দাস? মিথ্যে দাবিতে ছড়াচ্ছে নানা পোস্ট 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল পোস্টটি জাল। চ্যানেল ২৪ এমন কোনও পোস্ট প্রকাশ করেনি। সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার হওয়ার কারণও ভিন্ন। যা নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে নেটপাড়ায়। 

Advertisement

বাংলাদেশের সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রধান মুখ সন্ন্যাসী চিন্ময় দাসের গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে নানা অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল বাংলাদেশে। এরপর গতকালই ইসকন স্পষ্ট করেছে যে চিন্ময় দাসের সঙ্গে আগেই সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছিল। তবে ঠিক কী কারণে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তা নিয়ে ছড়াচ্ছে নানা ধরনের পোস্ট। 

যেমন চ্যানেল ২৪ নামের এক বাংলাদেশী সংবাদ মাধ্যমের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে শেয়ার করা হচ্ছে। সেই পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে শিশু ধর্ষণ এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখার জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

এই পোস্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে ও ভাইরাল ফটোকার্ডে লেখা হয়েছে, "জানা যায় শিশু বলাৎকার ও উস্কানীমূলক বক্তব্যের জন্য গ্রেপ্তার হয় ইসকন নেতা: চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল পোস্টটি জাল। চ্যানেল ২৪ এমন কোনও পোস্ট প্রকাশ করেনি। সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার হওয়ার কারণও ভিন্ন। যা নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে নেটপাড়ায়। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি

চ্যানেল ২৪-এর পক্ষ থেকে যদি সত্যিই এমন কোনও ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়ে থাকতো যেখানে চিন্ময় দাসের গ্রেফতারি সম্পর্কে এমন তথ্য উঠে এসেছে, তবে তা অবশ্যই সেই চ্যানেলের ফেসবুকে পেজে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হবে। কিন্তু এমন কোনও ফটোকার্ড কোথাও দেখা যায়নি। যা থেকে বোঝা যায় যে এটি ভুয়ো।

এ বাদেও এমন কোনও খবরও আমাদের নজরে পড়েনি যেখানে দাবি করা হয় যে শিশু ধর্ষণ বা উস্কানিমূলক বক্তব্যের কোনও অভিযোগে চিন্ময় দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। 

Advertisement

কী কারণে গ্রেফতারি?

ঠিক কী কারণে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা জানতে কিছু কিওয়ার্ডের সার্চের দরুন বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ প্রতিদিনে গত ১ নভেম্বর একটি রিপোর্ট। যেখানে রাষ্ট্রদ্রোহ বিষয়ক মামলার কথা উল্লেখ পেয়েছিল। 

সেখানে লেখা হয়, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া ধ্বজা লাগানোর অভিযোগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ’-এর ২ সন্ন্যাসী-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহ মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনাটি ঘটে চট্টগ্রামে, গত ২৫ অক্টোবর। খবর অনুযায়ী, ‘বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ’-এর ডাকে এক সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন কয়েক হাজার হিন্দু। বন্দরনগর চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া রঙের আর একটি পাতাকা টাঙানো হয়। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় দাস ও ইসকন প্রবর্ত্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ দাশ ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে।

এই ঘটনার পরই ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি সকলের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাস ও লীলারাজ দাশ দাশ ব্রহ্মচারী-সহ মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। যে ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ২৫ অক্টোবর ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় চিন্ময় দাসকে। বিতর্কিত পতাকার ছবিও এই প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে।

চিন্ময় দাসের গ্রেফতারি নিয়ে সার্চ করলে পশ্চিমবঙ্গের দ্য ওয়াল-সহ বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমেও এই একই ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। যা থেকে কার্যত পরিষ্কার হয় ঠিক কেন রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল চিন্ময় দাসকে। 

সেই সঙ্গে এটাও উল্লেখ্য, ভাইরাল পোস্টের ইনসেটে একজন গেরুয়া বসনধারী ব্যক্তির ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আকারে-ইঙ্গিতে যাকে চিন্ময় দাস বলেই বোঝাতে চাওয়া হচ্ছে। তবে তিনি চিন্ময় দাস নন বরং রাজস্থানের কেশত্রপাল মন্দিরের পুরোহিত বাবা বালকনাথ। এই বিষয়ে আজতক বাংলায় একটি ফ্যাক্ট চেক এখানে দেখা যাবে। 

সব মিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছে যে ভাইরাল হওয়া পোস্টটি ভুয়ো এবং বাস্তবের সঙ্গে কোনও যোগ এর নেই। 

ফ্যাক্ট চেক

facebook users

দাবি

চ্যানেল ২৪-এর ফটোকার্ডে লেখা হয়েছে যে শিশু ধর্ষণ ও উস্কানিমূলক ভাষণের জন্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ফলাফল

এই ফটোকার্ডটি ভুয়ো। ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সনাতনীদের একটি সমাবেশের পর বাংলাদেশের পতাকার উপর গেরুয়া পতাকা লাগানোর কারণে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে পরে গ্রেফতার হন চিন্ময়।  

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement