scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: 'জয় শ্রীরাম' বলানোর ভিডিও নয়, নাবালিকা হেনস্থা করে মারধর খেয়েছিল এই ব্যক্তি

আজকর ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভিডিওটি সম্পাদিত। আসল ঘটনাটি দুবছর আগেকার এবং রাজধানী দিল্লিতে এক নাবালিকা হেনস্থা সংক্রান্ত ঘটনা।

Advertisement

এক মুসলিম ব্যক্তিকে মারধর করার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তি রক্তাত্ত মুখ মুছছেন এবং বাকি কয়েকজন ঘিরে তাঁকে মারধর করছেন।

ভিডিওতে কয়েকজনের কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, যা শুনে মনে হবে কেউ বা কারা ওই ব্যক্তিকে বলপূর্বক 'জয় শ্রীরাম' বলতে বাধ্য করছেন। একই ধরনের দাবি করে ফেসবুকে অনেকেই এই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "ভারতে এক মুসলিমকে দিয়ে “জয় শ্রীরাম” বলানোর জন্য নির্মমভাবে মারধর করছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। অথচ, এসব হিপোক্রিট কুকুরগুলোই আবার বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার কথা বলতে আসে! হাসিনার পতনের পর হিন্দুদের উপর নির্যাতনের অজস্র গুজব রটিয়েছে এই ভারতীয় কুলাঙ্গারগুলোই।"

আজকর ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভিডিওটি সম্পাদিত। আসল ঘটনাটি দুবছর আগেকার এবং রাজধানী দিল্লিতে এক নাবালিকা হেনস্থা সংক্রান্ত ঘটনা।

কীভাবে জানা গেল সত্যি

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করতেই আমরা এই একই ভিডিওর একটি পুরনো সংস্করণ খুঁজে পাই। সেখানে এই ভিডিওটি আরও স্বচ্ছভাবে দেখা যাচ্ছিল। এই ভিডিওটি এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করা হয়েছিল ২০২২ সালের মে মাসে। যা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় যে এটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। সঙ্গে আরও একটি বিষয় লক্ষণী যে এখানে জয় শ্রী রাম বলতে জোর করা নিয়ে কোনও তথ্য উল্লেখ পায়নি।

২০২২ সালের ১২ মে পোস্ট করা এই দু বছর আগেকার ভিডিওতে ক্যাপশনে লেখা হয়েছিল যে দিল্লিতে এক মুসলিম মানুষকে মারধর করার। এ ব্যতীত আর কোনও তথ্য সেখানে প্রকাশ করা হয়নি। এই বিষয়টিকে সূত্র ধরে আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর একটি টুইট পাই।

Advertisement

ওই বছর ১২ মে-র এই টুইটে লেখা হয়, ইরফান খান নামক এই ব্যক্তিকে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছিল কারণ তাঁর বিরুদ্ধে এক ১৩ বছরের নাবালিকাকে নির্যাতন ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। এই অভিযোগ ওঠার পর ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি খবরে জানা যায়, ঘটনাটি দিল্লির শাহদারা জেলায় ঘটে। ৩৭ বছর বয়সী ইরফান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে ওই নাবালিকার পরিবার জানায়, দিনকয়েক ধরেই তাদের বাড়ির মেয়েকে বিরক্ত করত ওই ব্যক্তি। শেষে একদিন শ্লীলতাহানির চেষ্টার করে।

"জয় শ্রীরাম বোল"-অডিওটি অন্য ঘটনার

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির অডিওতে কয়েকজনকে হিন্দিতে কথা বলতে শোনা যায়। সেই কথাগুলো ছিল, "জয় শ্রী রাম বোল। জয় শ্রী রাম বোল। জয় শ্রী রাম বোলনে মে কেয়া হ্যায়? বোলনা পড়েগা। জয় শ্রী রাম বোল আওর জা। জয় শ্রী রাম বোল। মেরি বাত সুন।"

এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা CNN-News18 ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড হওয়া একটি ভিডিও খুঁজে পাই। ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট ভিডিওটি আপলোড করে লেখা হয় যে, এটি মধ্য প্রদেশের উজ্জয়ন জেলার মাহিদপুরের ঘটনা। যেখানে একজন বিক্রেতা একটি সাম্প্রদায়িক বাত বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সংবাদ সূত্র অনুযায়ী, কিছু লোক তাকে "জয় শ্রী রাম" বলতে বাধ্য করেছিল।

সাত থেকে ২৩ সেকেন্ডের মধ্যে এই ক্লিপের অডিওটি শোনার পরে, এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে এই অডিওটি প্রশ্নযুক্ত ভিডিওতে যুক্ত করা হয়েছিল। আসল ঘটনায় জয় শ্রীরাম বলতে বলা হয়নি।

 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ভারতে একজন মুসলিম ব্য়ক্তিকে মারধর করে জয় শ্রী রাম বলতে বাধ্য করা হচ্ছে।

ফলাফল

এই ঘটনাটি দিল্লির এবং ২০২২ সালের মে মাসে ঘটেছিল। এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৩ বছরের একটি মেয়েকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে, স্থানীয়রা মারধর করেন। এই ভিডিওটির অডিও পরিবর্তন করা হয়েছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement