ফ্যাক্ট চেক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাসভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে এই শিবলিঙ্গ উদ্ধার করা হয়নি

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই শিবলিঙ্গটি শেখ মুজিবুর রহমানের ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়নি। বরং একটি অন্ধ্রপ্রদেশের একটি মন্দিরে রয়েছে। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাসভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে এই শিবলিঙ্গ উদ্ধার করা হয়নি

বুধবার ভারতীয় সময় রাত তখন ৯টা। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনলাইনে বক্তব্য রাখা শুরু করলে ঢাকা ধানমন্ডি ৩২-এর বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালাতে শুরু করে প্রতিবাদী উন্মত্ত জনতা। প্রথমে আগুন লাগানোর পর ৩৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে ভাঙচুর। বুলডোজার এনে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় নানা ইতিহাসের সাক্ষী এই ভবননে। তারপর থেকে একটি সোনালী রঙের শিবলিঙ্গের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে ওই বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে নাকি এই শিবলিঙ্গটি উদ্ধার করা হয়েছে। 

এই শিবলিঙ্গের ছবিটি পোস্ট করে বেশ কয়েকটি পেজ থেকে লেখা হয়েছে, "ধানমন্ডি ৩২ এর শিবলিঙ্গ এখন দেশজুুড়ে আলোচনায়।" 

কেউ আবার লিখেছেন, "ধানমন্ডি ৩২ থেকে শিবলিঙ্গ উদ্ধার। বুঝেন এবার কারা কারা এর পূজা করত!" 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই শিবলিঙ্গটি শেখ মুজিবুর রহমানের ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়নি। বরং একটি অন্ধ্রপ্রদেশের একটি মন্দিরে রয়েছে। 

যেভাবে জানা গেল সত্যি

ভাইরাল ছবিটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজার পর ওই একই ছবি আমরা দেখতে পাই একটি পিন্টারেস্টের পোস্টে। এই ওয়েবসাইটে আলোচিত ছবিটি কয়েক বছর ধরেই রয়েছে। যা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় যে কোনও ভাবেই এই ছবি ধানমন্ডি ৩২-এর হওয়া সম্ভব না। 

ছবিটি পোস্ট করে সেখানে লেখা হয়, এই শিবলিঙ্গটি গুডিমাল্লাম মন্দিরে রয়েছে। যা পরশুরামেশ্বর স্বামী মন্দির নামেও পরিচিত। 

পাশাপাশি ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর এই একই ছবি পোস্ট করা হয়েছিল তীর্থ যাত্রা নামের একটি ফেসবুক পেজে। সেখানেও উল্লেখ করা হয় যে অন্ধ্রপ্রদেশে অবস্থিত গুডিমাল্লাম মন্দিরের স্থাপনা ও এই শিবলিঙ্গ নিয়ে নানা বিশ্বাস কথিত আছে। 

Advertisement

গুগল লেন্সের মাধ্যমে খোঁজা হলে তা আমাদের সোজাসুজি গুগল ম্যাপে নিয়ে চলে যায় এবং ম্য়াপে মজুত থাকা এই মন্দিরের ছবিগুলি দেখা যায়, ওই একই শিবলিঙ্গ বর্তমানে সোনার গয়না ও নানা মালায় সেজে উঠেছে। 

এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে এশিয়ানেট নিউজ এবং দ্য প্রিন্টের একাধিক প্রতিবেদন আমরা খুঁজে পাই যেখানে উল্লেখ করা হয় যে এটি ১.৫ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট এই শিবলিঙ্গের বয়স কেউ কেউ বলেন খৃষ্টপূর্ব তিন শতক আগেকার। অন্য এক মহলের ইতিহাসবিদের আবার দাবি, এটির বয়স প্রায় ১৯০০ বছর। 

বাংলাদেশি সংবাদ মাধ্যম প্রথম আলোর খবর অনুসারে, ধানমন্ডি ৩২-এর ধ্বংসস্তূপ থেকে অনেকেই রড, লোহালক্কড় ও ইট নিয়ে গেছেন। পাশাপাশি জানানো হচ্ছে যে বহু পুরনো বই, আসবাবও সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এই বাড়ি থেকে শিবলিঙ্গ উদ্ধার হয়েছে, এমন দাবি কোনও বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ মাধ্যমে করা হয়নি। 

ফলে শিবলিঙ্গের সঙ্গে ধানমন্ডি ৩২-এর শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙার কোনও সম্পর্কই যে নেই, তা বুঝতে বাকি থাকে না। 
 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ধানমন্ডি ৩২-এর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয়েছে এই শিবলিঙ্গ।

ফলাফল

এমন কোনও শিবলিঙ্গ সেখানে পাওয়া যায়নি। ছবি অন্ধ্রপ্রদেশের একটি মন্দিরের।  

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement