ফ্যাক্ট চেক: বাংলার প্রথম বন্দে ভারতের চালক নদীয়ার শুভেন্দু নয়, ফেসবুকে ছড়াল মিথ্যা দাবি

ফেসবুক পেজ থেকে পোস্টকার্ডটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এই পোস্টকার্ড  থাকা যুবকের নাম শুভেন্দু বড়াই, যিনি রাজ্যের প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনের চালক। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বাংলার প্রথম বন্দে ভারতের চালক নদীয়ার শুভেন্দু নয়, ফেসবুকে ছড়াল মিথ্যা দাবিবাংলার প্রথম বন্দে ভারতের চালক নদীয়ার শুভেন্দু নয়, ফেসবুকে ছড়াল মিথ্যা দাবি

পূর্ব ভারতের রেল মানচিত্রে ৩০ ডিসেম্বর ছিল একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনই হাওড়া স্টেশন থেকে সূচনা হয় পূর্ব ভারতের প্রথম সেমি হাই স্পিড বুলেট ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তাঁর মায়ের পরলোকগমনের কারণে তিনি ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। হাওড়া থেকে ছেড়ে ট্রেনটি যায় নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত। 

আর এই যাত্রার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টকার্ড বেশ ভাইরাল হয়েছে। এই পোস্টকার্ডে রেলের নীল পোশাক পরিহিত এক যুবককে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। একটি ফেসবুক পেজ থেকে পোস্টকার্ডটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এই পোস্টকার্ড  থাকা যুবকের নাম শুভেন্দু বড়াই, যিনি রাজ্যের প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনের চালক। 

পোস্টকার্ড লেখা হয়েছে, "চাকদহের গৌরব। রাজ্যে প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি, এবং সেই ট্রেনের চালক হলেন নদীয়া চাকদহের গৌরব শুভেন্দু বড়াই।"

ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি সত্যি নয়। রাজ্যের প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চালক ছবিতে থাকা এই যুবকটি নয়।

আফয়া তদন্ত 

সবার প্রথম আমরা কীওয়ার্ড সার্চ করে দেখার চেষ্টা করি বাংলার প্রথম বন্দে ভারত ট্রেনের চালক ঠিক কে ছিলেন? সার্চের ফলে বেশ কিছু ফলাফল আমাদের সামনে আছে। সংবাদ প্রতিদিনইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার মত ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে লেখা হয়, প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের লকো পাইলট ছিলেন অনিল কুমার নামের হাওড়া ডিভিশনের এক চালক।

এবিপি আনন্দের একটি প্রতিবেদনও আমরা এই নিয়ে দেখতে পাই। সেখানে উল্লেখ পায়, "বন্দে ভারতের প্রধান চালক অনিল কুমার বর্ধমানের বাসিন্দা। তিনি যখন ট্রেন চালিয়ে নিয়ে বর্ধমান স্টেশনে যান, তখন তাঁর স্ত্রী সুনীতা দেবীও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এবিপি আনন্দ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুনীতা কুমারী জানান, ১৯৯০ সালে রেলের অ্যাসিন্ট্যান্ট ড্রাইভার হিসাবে কাজে যোগ দেন অনিল কুমার। বরাবরই কর্মপ্রিয় অনিল কুমারের লক্ষ্য ছিল, সবথেকে গুরত্বপূর্ণ ট্রেনগুলো চালানো। বিভিন্ন মেল, এক্সপ্রেস চালানোর পাশাপাশি পূর্বা, শতাব্দি, রাজধানী ও দুরন্ত ট্রেনও চালিয়েছেন তিনি। চলতি মাসের ৭ তারিখে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর জন্য স্পেশাল ট্রেনিংয়েএ উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে যান। ট্রেনিং শেষে ১৯ তারিখ তিনি বর্ধমানের বাড়িতে ফিরে আসেন।"

Advertisement

আকাশবাণী কলকাতার ফেসবুক পেজ থেকে অনিল কুমারবাবুর একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করা হয় যেখানে তাঁকে বন্দে ভারতের চালকের আসনে বসে থাকতে দেখা যায়। কথোপথনের সময় তিনি এই দিনটিকে তাঁর জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন বলে জানান। নীচে সেই ভিডিয়োটি দেখা যাবে। 

কে ছিলেন সহকারী লোকো পাইলট?

সুনীলের সহকারী লোকো পাইলট কি ভাইরাল পোস্টকার্ডে থাকা ওই যুবক ছিলেন? না, এ কথাও সত্যি নয়। অনিল কুমারের সহকারী লোকো পাইলট ছিলেন কমলেশ কুমার। এই বিষয়ে আমাদের অবগত করেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী। এশিয়ানেটের একটি খবরেও কমলেশ কুমারের কথা উল্লেখ করা হয়। 

যাত্রার আগে অনিল কুমার ও কমলেশ কুমারের ছবিও আমরা খুঁজে পাই। যা থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে ভাইরাল পোস্টকার্ডে থাকা যুবকের পক্ষে কোনও পক্ষেই বাংলার প্রথম বন্দে ভারতের চালক হওয়া সম্ভব নয়। 

যদিও আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি যে ভাইরাল পোস্টকার্ডে থাকা যুবকটি ঠিক কে, তবে একটা কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় তিনি রাজ্যের প্রথম বন্দে ভারতের লোকো পাইলট নয়।

ফ্যাক্ট চেক

facebook page

দাবি

পোস্টকার্ডে থাকা যুবক নদীয়ার চাকদহের বাসিন্দা শুভেন্দু বড়াই যিনি বাংলার প্রথম বন্দে ভারতের চালক।

ফলাফল

এই যুবক প্রথম বন্দে ভারতের চালক নয়। প্রথম বন্দে ভারতের লোকো পাইলট হলেন অনিল কুমার আর কমলেশ কুমার।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook page
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement