ফ্যাক্ট চেক: পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা দাবিতে ছড়াল ওড়িশায় বিদ্যুৎ কর্মীকে মারধরের ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের নয় এবং এই ঘটনার সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং এটি ওড়িশার খোরধা জেলার বালিপাটনা থানার মুকুন্দদাসপুর গ্রামের ঘটনা।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা দাবিতে ছড়াল ওড়িশায় বিদ্যুৎ কর্মীকে মারধরের ভিডিও

সম্প্রতি সামাজাকি যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে কালো লুঙ্গি ও নীল-হলুদ রঙের জার্সি পরিহিত এক ব্যক্তি প্যান্ট-শার্ট পরা অপর এক ব্যক্তিকে একটি লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগালি দিতে দেখা যাচ্ছ। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্রয় পেয়ে এক বিদ্যুৎ কর্মীকে বেধড়ক মারধর করেছে বিদ্যুৎ চুরির অভিযুক্ত এক মুসলিম ব্যক্তি।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন,“দেখুন পশ্চিমবংলাকে পশ্চিম বাংলাদেশে পরিণত করেছে মমতাজ বেগম। মমতার দুধেল গাই মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বিদ্যুত চুরি করেছে। বিদ্যুৎ আধিকারিরা যখন বলতে গেছে তখন মমতার অনুপ্রেরণায়,এই চোর মোহাম্মদ শামসুদ্দিন রা কোথায় পৌঁছেছে দেখুন, সে বিদ্যুৎ আধিকারিকে বেধড়ক মারধর করছে ---- এতো বাংলাদেশের মব জাস্টিসকে হার মানালো মমতাজীর দুধেল গাইরা।” (সব বানান অপরিবর্তিত)  

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের নয় এবং এই ঘটনার সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং এটি ওড়িশার খোরধা জেলার বালিপাটনা থানার মুকুন্দদাসপুর গ্রামের ঘটনা।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওটির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৫ সালের ৯ জুলাই একটি রেডিট হ্যান্ডেলে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওর বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ওড়িশার মুকুন্দদাসপুর গ্রামে কয়েক মাস ধরে বিদ্যুতের বিল না দেওয়া মহম্মদ শামসুদ্দিন নামক এক ব্যক্তি টাটা পাওয়ারের কর্মীদের নৃশংসভাবে মারধর করেছে।

এরপর উক্ত সূত্র ধরে এই সংক্রান্ত পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে চলতি বছরের ৮ জুলাই ওড়িশা টিভির অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ভাইরাল ঘটনার ভিডিও-সহ এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৮ জুলাই ওড়িশার খোরধা জেলার বালিপাটনা থানার মুকুন্দদাসপুর গ্রামের ওয়ার্ড সদস্য মহম্মদ শামসুদ্দিন নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিদ্যৎ চুরির অভিযোগের তদন্তে যায় টাটা পাওয়ারের বিল সংগ্রহকারী দলের আধিকারিকরা। তদন্তে গিয়ে টাটা পাওয়ারের আধিকারিকরা অভিযুক্ত মহম্মদ শামসুদ্দিনকে বিদ্যৎ চুরি করতে দেখতে পান। 

Advertisement

পাশপাশি শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে আগের বকেয়া বিল পরিশোধ না করারও অভিযোগ তোলেন বিদ্যুৎ বিভাগের আধিকারিকরা। এমতো অবস্থায় রাজেশ সাহু নামক টাটা পাওয়ারের এক কর্মী শামসুদ্দিনকে বকেয়া বিল পরিশোধের অনুরোধ করেন এবং বিল পরিশোধ না করলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করার সতর্ক দেন। তখন শামসুদ্দিন ওই বিদ্যুৎ কর্মী রাজেশ সাহু বেধড়ক মারধর করার পাশাপাশি তাকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন। এই ঘটনার পর আহত ওই বিদ্যুৎ কর্মী স্থানীয় বালিপাটনা থানা শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেন। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, ওড়িশার খোরধা জেলায় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীকে মারধরের ভিডিও বিভ্রান্তি ছড়াতে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে মিথ্যে সম্পর্ক তৈরি করে শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্রয় পেয়ে বিদ্যুৎ চুরির অভিযুক্ত এক মুসলিম ব্যক্তি এক বিদ্যুৎ কর্মীকে বেধড়ক মারধর করেছে।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের নয় এবং এই ঘটনার সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং এটি ওড়িশার খোরধা জেলার বালিপাটনা থানার মুকুন্দদাসপুর গ্রামের ঘটনা।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement