ফ্যাক্ট চেক: আন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান বিচারপতি পদে মোদী-ঘনিষ্ঠ দলভীর ভান্ডারী? না, দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো

নেটিজেনদের একাংশের দাবি, মোদী ঘনিষ্ঠ দলভীর ভান্ডারি নামক এক ব্যক্তি নাকি আন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: আন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান বিচারপতি পদে মোদী-ঘনিষ্ঠ দলভীর ভান্ডারী? না, দাবিটি পুরোপুরি ভুয়োআন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান বিচারপতি পদে মোদী-ঘনিষ্ঠ দলভীর ভান্ডারী?

সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট বেশ ভাইরাল হয়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ দলভীর ভান্ডারি নামক এক ব্যক্তি নাকি আন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। একে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরাট বড় কূটনৈতিক জয় বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে। 

জনৈক ফেসবুক ব্যবহারকারী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সঙ্গে আরেক ব্যক্তির ছবি সংকলিত এক দীর্ঘ পোস্ট করেছেন। সেই পোস্টে লেখা হয়েছে, "আন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান বিচারপতি নির্বাচিত হয়েছেন! ভারতের জন্য দারুণ জয়!!! প্রধানমন্ত্রী মোদির চাণক্য কূটনীতি। বিশ্বমঞ্চে ব্রিটেনের পরাজয়। .প্রধানমন্ত্রী মোদিজি কীভাবে বিশ্বজুড়ে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তার এটি একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান বিচারপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিচারপতি দলভীর ভান্ডারী। .ভারতের বিচারপতি দলভীর সিং 193 ভোটের মধ্যে 183 ভোট পান (প্রতিটি দেশ থেকে একজন প্রতিনিধিত্ব করেন) এবং ব্রিটেনের বিচারপতি ক্রিস্টোফার গ্রিনউডকে পরাজিত করেন। ব্রিটেনের এই পদে ৭১ বছরের একচেটিয়া শাসন ভেঙে দেন তিনি। এই অর্জনের জন্য গত ৬ মাস ধরে কাজ করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিদেশ মন্ত্রক! 193টি দেশের প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করা এবং তাদের কাছে একজন ব্রিটিশ প্রার্থী যে সহজেই জয়ী হবেন তার ব্যাপারে ভারতের অবস্থান ব্যাখ্যা করা খুবই কঠিন কাজ ছিল। .11 রাউন্ডের ভোটে, বিচারপতি দলভীর ভান্ডারী সাধারণ পরিষদে 193 ভোটের মধ্যে 183টি এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের 15 সদস্যের মধ্যে 15টি ভোট পান। বিচারপতি দলভীর ভান্ডারি ৯ বছরের জন্য এই পদে থাকবেন। .এই 183টি দেশ কি "অন্ধ মোদীভক্ত" যারা ভারতকে ভোট দিয়েছে! আমাদের স্বাধীনতার 70 বছর পর আমাদের প্রধানমন্ত্রী মোদিজি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে কতটা বিনয়ী, শ্রদ্ধাশীল এবং মহান সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তার এটি একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।" 

ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো। আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে প্রধান বিচারপতি হিসেবে কোনও পদই নেই। 

Advertisement

আফয়া অনুসন্ধান 

সবার প্রথম আমরা এই সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করে খোঁজার চেষ্টা করি সম্প্রতি এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে কিনা। কিন্তু এমন কোনও নিউজ রিপোর্ট আমরা দেখতে পাইনি যেখানে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়। এত বড় ঘটনা ঘটে থাকলে তা নিয়ে কোনও খবর হবে না, এমনটা বেশ অস্বাভাবিক। 

এরপর আমরা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের ওয়েবসাইট খুলে সেখানকার নানা তথ্য খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করি। কিন্তু এই আদালতে কোনও প্রধান বিচারপতি রয়েছেন, এমন তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটেই কোথাও লেখা হয়নি। 

ওই ওয়েবসাইট থেকেই আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। সেখানে লেখা হয়, এই আদালতে মোট ১৫ জন বিচারপতি নির্বাচন করা হয় যাঁদের প্রত্যেকের মেয়াদ নয় বছর করে থাকে। নিয়মানুযায়ী, প্রত্যেক তিন বছর অন্তর ৫ জন করে নতুন বিচারপতি নির্বাচন করা হয়। এই নির্বাচন নিউইর্য়কে অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক আদালত হল সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জ অর্থাৎ ইউনাইটেড নেশনসের প্রধান বিচারবিভাগীয় শাখা। 

আন্তর্জাতিক আদালতের ওয়েবসাইটে বর্তমানে সক্রিয় সদস্যদের তালিকা খুললে দেখা যায়, সকল বিচারপতিদের মধ্যে বর্তমানে সভাপতি পদে রয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধি জোয়ান ই ডোনোগে ও সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন রাশিয়ার প্রতিনিধি কিরিল গেভোরগিয়ান। 

সেই তালিকাতেই আমরা ভারতের প্রতিনিধি দালভীর ভান্ডারির নামও দেখতে পাই, তাঁর নামের পাশে শুধুমাত্র 'বিচারপতি' কথাটিই লেখা ছিল। সঙ্গে এও লেখা ছিল যে তিনি ২৭ এপ্রিল ২০১২ থেকে, অর্থাৎ নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার দু'বছর আগে থেকেই বিচারপতি পদে ছিলেন। ৬ এপ্রিল ২০১৮ সালে তাঁকে পুনরায় বিচারপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। 

সুতরাং, ভাইরাল পোস্টের দাবিটি যে অসত্য, তা আমাদের অনুসন্ধান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 

 


 
 

ফ্যাক্ট চেক

facebook users

দাবি

নরেন্দ্র মোদীর বিরাট কূটনৈতিক জয়। ভারতীয় দালভীর ভান্ডারীকে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

ফলাফল

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে প্রধান বিচারপতি নামক কোনও পদই নেই। মোদী ক্ষমতায় আসার প্রায় দু বছর আগে, ২০১২ এপ্রিল মাস থেকে দালভীর ভান্ডারী এই আদালতের বিচারপতি পদে রয়েছেন।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement