ফ্যাক্ট চেক: কলকাতার RN Tagore হাসপাতালে স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে স্ত্রীর কিডনি দেওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন

আজতক ফ্য়াক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই ঘটনাটি সাম্প্রতিক নয়, এমনকি কলকাতারও নয়। বরং এই ঘটনাটি ২০১৬ সালের, মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: কলকাতার RN Tagore হাসপাতালে স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে স্ত্রীর কিডনি দেওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন

সম্প্রতি ফেসবুকে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা এক ব্যক্তি ও মহিলার দুটি ছবির একটি কোলাজ বেশ ভাইরাল হয়েছে। এই ছবিটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, কলকাতার মুকুন্দপুরের আরএন টেগোর হাসপাতালে স্বামীকে বিবাহ বার্ষিকীর দিন কিডনি দিয়ে প্রাণরক্ষা করেছেন এক স্ত্রী। 

পোস্টের দাবি অনুযায়ী, অসুস্থ ব্যক্তির নাম সুধীর এবং প্রাণ বাঁচানো স্ত্রীর নাম সুপ্রিয়া। ছবি-সহ এই পোস্ট শেয়ার করে ক্য়াপশনে লেখা হয়েছে, "কলকাতা মুকুন্দপুর RN Tagore হাসপাতালে স্বামী সুধীর বাবুকে কিডনি দিয়ে নতুন জীবন দিলেন স্ত্রী সুপ্রিয়া। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন বেঁচে থাকুক ভালোবাসা।" 

আজতক ফ্য়াক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই ঘটনাটি সাম্প্রতিক নয়, এমনকি কলকাতারও নয়। বরং এই ঘটনাটি ২০১৬ সালের, মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের। 

যেভাবে জানা গেল সত্যি

ভাইরাল ছবির কোলাজটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজা হলে ওই একই ছবি দেখা যায় বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম কালের কণ্ঠের একটি খবরে। ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর এই খবরেও ওই দুটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল। যেখানে ওই একই ব্যক্তি ও মহিলাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। 

ছবিটি প্রকাশ করে লেখা হয়, এই ঘটনাটি মধ্য প্রদেশের ইন্দোর শহরে ঘটেছিল। কিডনির সমস্যায় ভোগা স্বামী রবিদত্ত সোনিকে বাঁচাতে স্ত্রী প্রভা প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ডায়লিসিস চলে। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় ডাক্তার জানিয়ে দেন কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। তখন চিকিৎসকদের প্রভা জানান, তিনিই স্বামীকে কিডনি দেবেন। 

এভাবেই নিজেদের ১৭তম বিবাহ বার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখেন রবিদত্ত ও প্রভা। তবে এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে ২০১৮ সালে এমন কোনও খবর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া যায়নি। 

নামগুলি-সহ বেশ কিছু ফিল্টারের সাহায্যে সার্চ করলে ওই একই ঘটনার উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায় দৈনিক ভাস্কর এবং নিউজ ১৮ হিন্দিতে। তবে এই প্রতিবেদনগুলি ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের নয়, বরং এই খবরগুলি প্রকাশ করা হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৩ জুন। 

Advertisement

সেই খবরগুলিতে লেখা হয়, রবিদত্ত সোনির বয়স ছিল ৪৫ বছর। বিগত আট মাস যাবত কিডনির রোগে ভুগেছিলেন। চলেছিল ডায়লিসিসও। কিন্তু ক্রমাগত ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বাড়তে থাকায় চিকিৎসকেরা জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। প্রথমে রবিদত্তের মা কিডনি দিতে চাইলেও ডাক্তাররা জানান, তাঁর বয়স বেশি হওয়ায় অস্ত্রপচার সম্ভব নয়। 

এরপর স্ত্রী প্রভা এগিয়ে আসেন ও নিজের কিডনি রবিদত্তকে দিতে চান। সেই প্রস্তাবে চিকিৎসকেরাও রাজি হয়ে যান। এরপর ২০১৬ সালের ২১ জুন সফলভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। ১৭তম বিবাহ বার্ষিকীর দিন স্বামীকে সবথেকে দামি উপহার দেন স্ত্রী প্রভা। 

অন্যদিকে, কলকাতার আরএন টেগোর হাসপাতালে সাম্প্রতিককালে এমন কোনও ঘটনা বা অস্ত্রপচারের কোনও খবর আমাদের নজরে আসেনি। 

ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি ব্যবহার করে যে ধরনের দাবি করা হচ্ছে, তা আদতে বিভ্রান্তিকর। 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

কলকাতার আরএন টেগোর হাসপাতালে স্বামী সুধীরকে কিডনি দিয়ে নতুন জীবন উপহার দিলেন স্ত্রী সুপ্রিয়া। 

ফলাফল

এই ঘটনাটি কলকাতা নয় বরং ইন্দোরের। ২০১৬ সালের জুন মাসে এই ঘটনা ঘটে। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement