
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য মিলে দুই ব্যক্তিকে ধরপাকড় করে গাড়িতে তোলার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হচ্ছে। পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে এই ভিডিওটি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, কাশ্মীরের এই স্থানীয় নেতা জঙ্গিদের মদত করায় তাকে প্রেফতার করা হয়েছে।
ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "কাশ্মীরের এই স্হানীয় নেতা জঙ্গিদের সঙ্গে যুক্ত থাকায় কাশ্মীর পুলিশ ও ভারতীয় সেনা তৎপরতায় তাকে গ্রেফতার করেছে।"
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিওটি ২০২৪ সালের নভেম্বরের, যখন জম্মু পুলিশ কাটরা রোপওয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী দুই শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাকে গ্রেফতার করেছিল।
সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে
আমরা লক্ষ্য করি যে ভাইরাল ভিডিওটিতে “কাশ্মীর লিংকস নিউজ”- নামের একটি চ্যানেলের লোগো রয়েছে। অনুসন্ধান করে আমরা একই নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুঁজে পাই যেখানে ভিডিওটি ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর আপলোড করা হয়েছিল। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট হয় যে এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং পহেলগাম আক্রমণের কয়েকমাস আগের।
ভিডিওটির বিবরণে বলা হয়, জম্মুর কাটরায় একটি বিক্ষোভের সময় এই দুই শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কাটরা থেকে বৈষ্ণোদেবী মন্দির পর্যন্ত প্রস্তাবিত রোপওয়ে লাইনের বিরুদ্ধে এঁরা প্রতিবাদ করছিলেন। রিয়াসি আপডেটসের ভিডিও প্রতিবেদনে এই নেতাদের নাম ভূপিন্দর সিং এবং সোহান চাঁদ বলে জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের নভেম্বরে কাটরা থেকে শ্রী মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দির পর্যন্ত প্রস্তাবিত রোপওয়ে প্রকল্পের বিরুদ্ধে কাটরায় কিছু স্থানীয় মানুষ এবং দোকানদার প্রতিবাদ করেছিলেন । এই বিক্ষোভ পরে সহিংস হয়ে ওঠে, যেখানে কিছু পুলিশ আহত হয় এবং পুলিশের গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর পুলিশ আটজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে।
গ্রেটার কাশ্মীর এবং দ্য হিন্দুর নিউজ রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর, কাটরার বনগঙ্গা মার্গে পুলিশ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ভূপেন্দ্র সিং জামওয়াল এবং সোহান চাঁদকে হেফাজতে নেয়। তবে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়।
ফলে এটা স্পষ্ট যে জম্মুতে রোপওয়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পর পুলিশি পদক্ষেপের ভিডিওটি পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা পরবর্তী প্রেক্ষাপটে একটি মিথ্যে দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে।
পহেলগাঁও হামলার পর জঙ্গিদের সাহায্য করায় কাশ্মীরের এক স্থানীয় নেতাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
এই ভিডিওটি ২০২৪ সালের নভেম্বরের, যখন জম্মু পুলিশ কাটরা রোপওয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী দুই শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাকে গ্রেফতার করেছিল।