ফ্যাক্ট চেক: পার্ক সার্কাসে অগ্নিকাণ্ডের পুরনো ভিডিও ভুয়ো, সাম্প্রদায়িক দাবিতে ভাইরাল 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে সাম্প্রতিক বা সাম্প্রদায়িক হিংসার কোনও সম্পর্ক নেই। এটি জানুয়ারি মাসের একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: পার্ক সার্কাসে অগ্নিকাণ্ডের পুরনো ভিডিও ভুয়ো, সাম্প্রদায়িক দাবিতে ভাইরাল 

মুর্শিদাবাদে সাম্প্রাদায়িক হিংসার আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হচ্ছে যেখানে পার্ক সার্কাস স্টেশন ভবনের মাথার ওপর থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে। ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করে ইঙ্গিত করা হচ্ছে যে এই স্টেশনে আগুন লাগিয়ে সংখ্যালঘু সমাজের ব্যক্তিরা 'দাঙ্গা' করছেন।

ভিডিওটির ক্যাপশনে সরাসরি এই দাবি না করে লেখা হয়েছে, "তোরা নাকি ভারতীয়  আসলে তোরা কোনো দেশরই হতে পারবি না । এরা না নিজেরা শান্তিতে থাকে না কাউকে থাকতে দেই এই গুলো নাকি পোষ্ট করলে আমরা দাঙ্গা লাগাই  তাহলে ওরা কি করছে এই গুলো।"

প্রসঙ্গত, কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকা মুসলিম-অধ্যুষিত। ফলে এখানে "তোরা", "এরা" কথাগুলি কাদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে সাম্প্রতিক বা সাম্প্রদায়িক হিংসার কোনও সম্পর্ক নেই। এটি জানুয়ারি মাসের একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে 

ভাইরাল ভিডিওটির থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে ওই একই ভিডিও আমরা দেখতে পাই একটি ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে। যা গত চলতি বছরের গত ২৬ জুলাই পোস্ট করা হয়েছিল। ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "আগুন লেগেছে। খুব জোরে।"  

এর থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয় যে সম্প্রতি ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে হওয়া হিংসাত্মক বিক্ষোভের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ এই বিল চলতি এপ্রিল মাসে আইনে রূপান্তরিত হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এর আগে হয়নি। 

এরপর কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আমরা খোঁজার চেষ্টা করি এই বছর জানুয়ারি মাসের ওই সময় নাগাদ পার্ক সার্কাস স্টেশন বা স্টেশনের চত্বরে কোনও আগুন লেগেছিল কিনা। তখন গত ২০ জানুয়ারি প্রকাশিত একাধিক নিউজ রিপোর্ট পাওয়া যায় যা আনন্দবাজার, টিভি ৯ বাংলা, এবং সংবাদ প্রতিদিনের মতো সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছিল। 

Advertisement

খবরগুলিতে লেখা হয়, ২০ জানুয়ারি দুপুর ২টোর পর দিয়ে পার্ক সার্কাস সংলগ্ন একটি কেকের কারখানায় বিধ্বংসী আগুন লাগে। ওই কারখানা স্টেশনের একদম পাশে হওয়ায় পুরো স্টেশন চত্বর এমনভাবে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় যে অনেকেই ভাবতে শুরু করেন স্টেশনেই আগুন লেগেছে। আগুনের দাপট এতটাই ছিল যে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পরেও কারখানার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। 

সেই সঙ্গে আমরা জ়ি ২৪ ঘণ্টার ইউটিউব চ্যানেলে আগুনের একটি পৃথক ভিডিও পাই। যেখানে স্টেশন ভবনের উপরের অংশ অন্য দিক থেকে দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিওটি দেখলে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে আগুন স্টেশনে লাগেনি। ভাইরাল ভিডিওটি যেহেতু ভবনের নীচের দিক থেকে দেখা যাচ্ছে তাই আগুন স্টেশন ভবনে লেগেছে এমনটা মনে হতে পারে। নীচে সেই ভিডিওটি দেখা যাবে। 

ফলে সবমিলিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে গত ২০ এপ্রিল ঘটে যাওয়া একটি অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওকে ভুয়ো এবং সাম্প্রদায়িক দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে। 

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পার্ক সার্কাস স্টেশনে আগুন লাগিয়ে দাঙ্গা ছড়ানো হচ্ছে। 

ফলাফল

এই ভিডিওটি গত ২০ জানুয়ারির যখন স্টেশন সংলগ্ন একটি কেকের কারখানায় আগুন লেগেছিল। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement