ফ্যাক্ট চেক: নেপালের পশুপতিনাথ মন্দিরে ভাঙচুরের দাবিতে ভাইরাল সরকারি দফতরে হামলার ভিডিও

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি অসত্য। পশুপতিনাথ মন্দিরে হামলার খবরের কোনও সত্যতা নেই। ভাইরাল ভিডিওটি একটি সরকারি দফতরের তোরণ ভাঙচুর করার।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: নেপালের পশুপতিনাথ মন্দিরে ভাঙচুরের দাবিতে ভাইরাল সরকারি দফতরে হামলার ভিডিও

নেপালের রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের পর সেখানকার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন সুশীলা কার্কি। এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হচ্ছে। যা ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে যে নেপালে হিন্দুদের পীঠস্থান রূপে পরিচিত পশুপতিনাথ মন্দিরে হামলা করা হয়েছে।

এই ভিডিওতে জনাকয়েক তরুণকে একটি সুদৃশ্য তোরণের উপর উঠে নেপালের পতাকা ওড়াতে এবং লাঠি দিয়ে তোরণের উপরের অংশ ভাঙার চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি যারা শেয়ার করছেন তাদের দাবি এটি পশুপতিনাথ মন্দির বা মন্দির চত্বর।

উদাহরণস্বরূপ, ভিডিওটি পোস্ট করে কেউ কেউ লিখেছেন, “নেপালে হিন্দুদের পবিত্র পশুপতি মন্দির লুটপাটের পর ভাঙার কাজ চলছে, এদিকে বিজেপি বলছে নেপালে হিন্দু জাগ্রত হচ্ছে!!! ও আচ্ছা এইবার বোঝা গেল, তাহলে এটাই হিন্দু জাগ্রত হওয়ার লক্ষণ।”

একই দাবিতে আরও অনেকে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন।

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি অসত্য। পশুপতিনাথ মন্দিরে হামলার খবরের কোনও সত্যতা নেই। ভাইরাল ভিডিওটি একটি সরকারি দফতরের তোরণ ভাঙচুর করার।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

যদি নেপালের পশুপতিনাথ মন্দিরে সত্যি কোনও হামলা বা ভাঙচুর হয়ে থাকতো, তবে সেই সম্পর্কে খবরও নানা সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া যেত। কিন্তু এমন কোনও বিশ্বাসযোগ্য খবর পাওয়া যায়নি যেখানে বলা হয় যে পশুপতিনাথ মন্দিরে হামলা চালিয়ে লুঠপাট করা হয়েছে।

ভাইরাল ভিডিওতে যে তোরণটি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তার উপর হিন্দির মতো হরফেই কয়েকটি শব্দ লেখা ছিল। বাংলায় যার উচ্চারণ দাঁড়ায়, “সুদূরপশ্চিম প্রদেশ সভা ধনগড়ী, কৈলালী।” কৈলালী হলো পশ্চিম নেপালে অবস্থিত একটি জেলা।

এই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে অমর উজালার একটি রিপোর্ট পাওয়া যায়। যেখানে উল্লেখ করা হয় যে পশ্চিম নেপালের ধনগড়ী, কৈলালী এলাকায় কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সরকারি দফতরগুলিতে লুঠপাট চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। 

Advertisement

ভিডিওতে যে তোরণটি দেখা যাচ্ছে গুগল ম্যাপে আমরা এর ঠিকানাটি খুঁজে পাই। সেখানে দেখা যায়, এটি কৈলালী জেলার প্রধান সরকারি আইনসভা তথা সচিবালয়। সেই সঙ্গে এই জেলার সচিবালয়ের সরকারি ওয়েবসাইটও পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে গুগল ম্যাপে কৈলালী জেলায় ঠিক ওই একই গেটটিও খুঁজে পাওয়া যায়।

গুগল ম্যাপে দেখা যায়, কৈলালী জেলার এই আইনসভা থেকে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থিত পশুপতিনাথ মন্দিরের সড়কপথে দূরত্ব অন্তত ৬৫০ কিলোমিটার। অর্থাৎ, দুই স্থানের মধ্যে কোনও সংযোগ খোঁজা অর্থহীন। যদিও ভাইরাল ভিডিওটি কবেকার সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। 

উল্লেখ্য, নেপালে আন্দোলন চলাকালীন বাস্তবের পশুপতিনাথ মন্দিরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। যা ছড়িয়ে দাবি করা হয় যে সেখানে হামলা চালানো হয়েছে। তবে আজতক ফ্যাক্ট চেকের রিপোর্টে উঠে আসে যে ভাইরাল ভিডিওটি ছিল জুলাই মাসের এবং একটি ধর্মীয় উৎসবের সঙ্গে যুক্ত রীতির।

ফলে পশুপতিনাথ মন্দিরে হামলা চালিয়ে লুঠপাট করার দাবি যে ভিত্তিহীন, তা বোঝাই যায়।

ফ্যাক্ট চেক

facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে নেপালের পশুপতিনাথ মন্দিরে ভাঙচুর করা হচ্ছে।

ফলাফল

ভিডিওতে কৈলালী জেলার সচিবালয়ের তোরণ ভাঙচুর করতে দেখা যাচ্ছে। পশুপতিনাথ মন্দিরে ভাঙচুর, লুঠপাটের কোনও খবর নেই।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement