scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: এই আপেল গাছের নীচে বসেই মাধ্যাকর্ষণের অস্তিত্ব টের পান স্যার আইজ্যাক নিউটন? 

নেটিজেনদের একাংশ ছবিটি শেয়ার করে দাবি করছেন, এই গাছটিই নাকি সেই বিশ্ব বিখ্যাত আপেল গাছ, যা কেমব্রীজ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ট্রিনিটি কলেজে রয়েছে।

Advertisement
ফ্য়াক্ট চেক: এই আপেল গাছের নীচে বসেই মাধ্যাকর্ষণের অস্তিত্ব টের পান নিউটন?  ফ্য়াক্ট চেক: এই আপেল গাছের নীচে বসেই মাধ্যাকর্ষণের অস্তিত্ব টের পান নিউটন? 

পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কীভাবে আবিষ্কার হয়েছিল, সেই গল্প কম-বেশি সকলেরই জানা। কয়েকশো বছর আগে স্যর আইজ্যাক নিউটন যদি ওই আপেল গাছের নীচে না বসতেন, তবে সেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির খোঁজ হয়তো আরও কিছু বছর পর পাওয়া যেত।  তবে আপেল গাছের নীচে তাঁর বসার সেই গল্পটি কয়েক শতক ধরে চলে আসছে। সেই সূত্র ধরেই এ বার একটি গাছের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করেছে। 

নেটিজেনদের একাংশ ছবিটি শেয়ার করে দাবি করছেন, এই গাছটিই নাকি সেই বিশ্ব বিখ্যাত আপেল গাছ, যা কেমব্রীজ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ট্রিনিটি কলেজে রয়েছে। দাবি অনুযায়ী, নিউটন নাকি এই গাছের তলাতেই বসেছিলেন যখন আপেল উপর থেকে পড়েছিল। ছবিটি শেয়ার করে লেখা হয়েছে, "এটাই সেই বিশ্ব বিখ্যাত আপেল গাছ যার নিচে স্যার আইজ্যাক নিউটন বসেছিলেন।"

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, এই গাছটির নাম "নিউটনের আপেল গাছ" হলেও ভাইরাল হওয়া দাবিটি সঠিক নয়। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি?

ভাইরাল ছবিটিকে রিভার্স সার্চ করে অন্য দিক থেকে তোলা ওই একই গাছের ছবি আমরা একটি ওয়েবসাইটে খুঁজে পাই। ২০২০ সালের জুন মাসে পোস্ট করা এই ছবিও লেখা হয় যে এটি ট্রিনিটি কলেজে থাকা "নিউটনের আপেল গাছ"। তবে বিষয়টি খটকা লাগার মতো। কারণ, আইজ্যাক নিউটনের মৃত্যু হয়েছিল ১৭২৭ সালে। এবং গড়ে একটি আপেল গাছের জীবনকাল ৮০-১০০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। আসল গাছটির পক্ষে কোনও ভাবেই এতদিন বেঁচে থাকা সম্ভব না। 

এই নিয়ে কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত বিবিসি-র একটি খবর দেখতে পাই। খবর অনুযায়ী, একটি ঝড়ে এই গাছটি সমূলে উপড়ে ভেঙে পড়েছিল। ওই প্রতিবেদনে কেমব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগান পরিদর্শক ডা. স্যামুয়েল ব্রকিংটনের কিছু মন্তব্য তুলে ধরা হয়। 

Advertisement

ডা. স্যামুয়েল ব্রকিংটন বিবিসি-কে বলেন, এই গাছটি ১৯৫৪ সালে পোঁতা হয়েছিল। এবং তারপর থেকে, বিগত ৬৮ বছর ধরে এই গাছটি কেমব্রীজের শোভা বাড়ানোর কাজ করছে। তিনি আরও জানান, যে গাছটির নীচে বসে স্যর আইজ্যাক নিউটন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিষয়টি আবিষ্কার করেছিলেন, এটি সেই গাছটির ক্লোন (যা একই রকমের দেখতে, কিন্তু একই নয়)। 

নিউটনের আবিষ্কৃত ইতিহাসের সাক্ষী থাকা গাছটি আদৌ এখন রয়েছে কিনা সেই বিষয়টি জানতে আমরা কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করি। তখন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা স্নুপন্সের একটি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন আমাদের চোখে পড়ে। সেখানে লেখা হয়, বহুল চর্চিত ওই আপেল গাছটি ইংল্যান্ডের লিংকনশায়ারের উল্সথ্রোপ ম্যানর হাউসে রয়েছে। সংবাদ সূত্র অনুযায়ী, স্যর আইজ্যাক নিউটনের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা লিংকনশায়ারের উল্সথ্রোপ ম্যানর হাউসেই হয়েছিল।

বিবিসি-র আরেকটি খবরেও একই তথ্য উল্লেখ করা হয়। এখন এলাকাটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে এবং কেউ চাইলে সেখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন, এবং স্বচক্ষে নিউটনের সেই বিশ্ব বিখ্যাত গাছটি দেখেও আসতে পারেন। 

অর্থাৎ, কেমব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে থাকা গাছটি যে নিউটনের আসল আপেলের গাছ নয়, তা বুঝতে আর কোনও সংশয় থাকে না। 
 

ফ্যাক্ট চেক

Social media Users

দাবি

এই সেই আপেল গাছ যার নীচে বসে স্যর আইজ্যাক নিউটন মাধ্যাকর্ষণের অস্তিত্ব টের পেয়েছিলেন। 

ফলাফল

এই গাছটির নাম "নিউটনের আপেল গাছ" হলেও ভাইরাল হওয়া দাবিটি সঠিক নয়। এই গাছটি আসলটির ক্লোন। আসল গাছটি ইংল্যান্ডের লিংকনশায়ারের উল্সথ্রোপ ম্যানর হাউসে রয়েছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement