বাংলাদেশে হিন্দুদের বা হিন্দু পুজো মণ্ডপ ও মন্দিরগুলোর উপর আক্রমণের বেশ কিছু খবর প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মাঝে, ফেসবুকে আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হল।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি পোস্ট করে দাবি করেছেন, "রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বটেরতল মাঝিপাড়া গ্রামের মন্দিরে ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে মৌলবাদীরা।"
এই একই ভিডিও ও একই দাবি সহ পোস্টের আর্কাইভ দেখুন এখানে ও এখানে।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে, এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর।
তদন্তে নেমে প্রথমেই আমাদের ভিডিওটি দেখতে পাওয়া দমকলবাহিনীর পোশাক দেখে সন্দেহ জাগে। বাংলাদেশের দমকলবাহিনী গোটা দেশজুড়ে একই ধরনের পোশাক ব্যবহার করে থাকে, কিন্তু সেই পোশাকের রঙ খাকি নয়। অথচ, ভিডিওর দমকলবাহিনীর কর্মীরা কিন্তু খাকি রঙের পোশাক পড়ে রয়েছেন।
সুতরাং, এই ভিডিওটির সঙ্গে বাংলদেশের যোগাযোগ থাকার সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ।
এর পর আমরা ইনভিড টুলের সাহায্যে ভিডিওটি কিফ্রেমে ভেঙে নিয়ে কিফ্রেমগুলোকে রিভার্স সার্চ করতেই এই ভিডিওটির মূল সূত্র ফেসবুকে খুঁজে পাই। ১৩ই অক্টোবর ফেসবুকে ত্রিপুরা ২৪*৭ নামের একটি সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজে এই একই ভিডিও আপলোড করা হয়েছিল। সেখানে দাবি করা হয়েছে, মহাসপ্তমীর রাতে ত্রিপুরার ঢালাই জেলার কমলপুরে মরাছড়া বাজারের সন্নিকটে একটি দুর্গা মণ্ডপে আগুন লেগে যায়। এই ভিডিওটি সেই সময়ে তোলা হয়েছিল।
বিষয়টিকে আরও নিশ্চিত করতে আমরা ত্রিপুরা দমকল বাহিনীর ঢালাই ডিভিশনের আইসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করি। কমলপুর ফায়ার স্টেশন এই ঢালাই ডিভিশনের অন্তর্গত।
"১২-১৩ তারিখ রাতে কমলপুর স্টেশনের অধীনে মরাছোড়া বাজারের সন্নিকটে একটি দুর্গা মণ্ডপে আগুন লেগেছিল। আমাদের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। ফেসবুকে বাংলাদেশের রংপুরের বলে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি আসলে ত্রিপুরার ভিডিও," আইসি জ্যোতিষ দাস আজতক-কে জানান।
সুতরাং, এই ফেসবুক পোস্টের দাবি যে বিভ্রান্তিকর তা বলাইবাহুল্য।
রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বটেরতল মাঝিপাড়া গ্রামের মন্দিরে ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে মোলৌবাদীরা।
ভিডিওটির সঙ্গে বাংলদেশের বর্তমান সাম্প্রদায়িক হামলার কোনও সম্পর্ক নেই। ভিডিওটি ত্রিপুরার ঢালাই জেলার কমলপুরের। ১২-১৩ অক্টোবর রাতে কমলপুরে মরা ছোড়া বাজারের সন্নিকটে একটি দূর্গা মণ্ডপে আগুন লেগেছিল।