ফ্যাক্ট চেক: লাদাখের BJP কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের দৃশ্য দাবিতে ছড়াল নেপালের ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, যদিও এটা সত্যি যে সম্প্রতি লেহ-তে বিজেপির একটি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। তবে ভাইরাল ভিডিওটি লাদাখ বা ভারতেরও নয়। বরং এটি চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের ভরতপুর পৌরসভা কার্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগের দৃশ্য।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: লাদাখের BJP কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের দৃশ্য দাবিতে ছড়াল নেপালের ভিডিও

পূর্ণ রাজ্যের দাবিতে উত্তাপ্ত হয়ে উঠেছে লাদাখ। বিক্ষোভ এবং অশান্তি রুখতে কার্ফু চলছে কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলে। অন্যদিকে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে অন্দোলনের প্রধান মুখ, সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্য সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে।

যেখানে কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে একটি ভবনে হামলা চালাতে এবং তাতে আগুন লাগিয়ে দিতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বিক্ষোভকারীরা লাদাখে বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুর কারে তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে এর ফ্রেমের উপরে লিখেছেন, “এবার লাদাখে বিজেপির অফিস সাফাই চলছে।” (সব বানান অপরিবর্তিত) 

অন্যদিকে এই একই ভিডিও শেয়ার করে অন্য এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “ভারতের লাদাখে স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনের এক পর্যায়ে পুলিশের রায়টকারে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা নিহত ৪ জন।”

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, যদিও এটা সত্যি যে সম্প্রতি লেহ-তে বিজেপির একটি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। তবে ভাইরাল ভিডিওটি লাদাখ বা ভারতেরও নয়। বরং এটি চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের ভরতপুর পৌরসভা কার্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগের দৃশ্য।

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করার সময় আমরা এটির ভবনের সামনে একটি ব্যানার দেখতে পাই। যেখানে নেপালি ভাষয়া “भरतपुर महानगरपालिकाको’ বা ‘ভরতপুর মেট্রোপলিটন পৌরসভা’ লেখা দেখতে পাই। উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নেপাল ভিত্তিক একটি ফেসবুক প্রোফাইলে অন্য অ্যাঙ্গেল থেকে তোলা এই একই ভবনে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও বিক্ষোভের ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে নেপালি ভাষায় সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্নীতি এবং সাধারণ মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে ভরতপুর মেট্রোপলিটন সিটি অফিসের সামনে জেন-জি এবং জেন-ওয়াইদের বিক্ষোভ। পাশাপাশি, হ্যাশট্যগ হিসাবে সেখানে #nepalimovie, #nepalitiktok এবং #tiktoknepal ব্যবহার করা হয়েছে।

Advertisement

এরপর এই সংক্রান্ত একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করলে নেপাল ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম Synergy FM-এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর একাধিক ক্লিপের সমন্বয়ে তৈরি ভাইরাল ভিডিওর ভবনটিতে বিক্ষোভের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে সেখানে লেখা হয়েছে, “জেন-জিদের আন্দোলনের সময় ভরতপুর মেট্রোপলিটন সিটি অফিস এভাবেই পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” উপরের উভয় ভিডিও এবং ভবনটির ব্যানারে নেপালি ভাষায় লেখা “भरतपुर महानगरपालिकाको” থেকে সন্দেহ তৈরি হয় যে ভিডিওটি লাদাখের না হয়ে বরং নেপালের হলেও হতে পারে।

তবে বিষয়টি সম্পর্কে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হতে এরপর আমরা গুগল ম্যাপে নেপালের ভরতপুরের মহেন্দ্র হাইওয়ের লায়ন্স চকে অবস্থিত ‘भरतपुर महानगरपालिकाको’ বা ভরতপুর মেট্রোপলিটন পৌরসভা কার্যালয়টি খুঁজে বের করি। গুগল ম্যাপে প্রাপ্ত ভরতপুর মেট্রোপলিটন পৌরসভা কার্যালয়ের সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর ভবনটির হুবহু মিল পাওয়া যায়। নীচে গুগল ম্যাপে প্রাপ্ত নেপালের ভরতপুর মেট্রোপলিটন পৌরসভা কার্যালয়টি দেখা যাবে। 

অন্যদিকে এখানে উল্লেখ্য, গত ২৪ সেপ্টেম্বর পূর্ণ রাজ্যের দাবিতে লাদাখের একাধিক এলাকায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। অন্দোলনের এক পর্যয়ে লেহ-তে বিজেপির একটি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। তবে ভাইরাল ভিডিওর ভবনটি লাদাখের বিজেপি কিংবা কোনও পুলিশ কার্যালয় নয়। বরং সেটি নেপালের ভরতপুর পৌরসভা কার্যালয়ের দৃশ্য।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, নেপালের ভরতপুর পৌরসভা কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের দৃশ্য লাদাখের বিক্ষোভ দাবিতে প্রচার।

ফ্যাক্ট চেক

facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিক্ষোভকারীরা লাদাখে বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুর কারে তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিওটি লাদাখ বা ভারতেরও নয়। বরং এটি চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের ভরতপুর পৌরসভা কার্যালয়ে বিক্ষোভকারীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগের দৃশ্য।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement