ফ্যাক্ট চেক: জাতিসংঘের অধিবেশনে নেতানিয়াহুকে হেনস্থা দাবিতে ছড়াল ইজরায়েলি সাংসদের ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিও-র ব্যক্তিটি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নয়। এমনকি ভিডিওটি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনেরও নয়। বরং ভিডিও-র ব্যক্তিটি হলেন ইজরায়েলের ক্ষমতাসীন দল লিকুদ পার্টি তথা দেশটির আইনসভার নেসেটের সদস্য এলি দাল্লাল। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: জাতিসংঘের অধিবেশনে নেতানিয়াহুকে হেনস্থা দাবিতে ছড়াল ইজরায়েলি সাংসদের ভিডিও

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে একটি ভবনে ভিড় অতিক্রম করে যাওয়ার সময় হঠাৎই মেঝেতে পড়ে যান এক ব্যক্তিকে। এমতো পরিস্থিতিতে সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মীদের তাঁকে উদ্ধার করে ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সময় ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে মারধর ও হেনস্থা করা হয়েছে। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সময় গণহত্যাকারী ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন তানিয়াহুকে মারধর ও হেনস্থা করেন এবং বক্তব্যের শুরুতে হল ছেড়ে বেরিয়ে যায় অন্যান্য সদস্যরা, এই খবর পুঁজিবাদের দালাল মিডিয়া দেখায় না ,একজন ইজরায়েল নাগরিক এই ভিডিও আপলোড দেয়।” (সব বানান অপরিবর্তিত) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিও-র ব্যক্তিটি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নয়। এমনকি ভিডিওটি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনেরও নয়। বরং ভিডিও-র ব্যক্তিটি হলেন ইজরায়েলের ক্ষমতাসীন দল লিকুদ পার্টি তথা দেশটির আইনসভার নেসেটের সদস্য এলি দাল্লাল। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিও এবং দাবির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম সংগ্রহ করে সেগুলি গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর একটি এক্স হ্যান্ডেলে এই একই ভিডিও-সহ হিব্রু ভাষায় একটি পোস্ট পাওয়া যায়। সেই পোস্টে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ইজরায়েলের কফার সাবায় ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় বিক্ষোভের মুখে পড়েন আইনসভা নেসেটের সদস্য এলি দাল্লাল। এমতো অবস্থায় সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা যখন তাঁর যাওয়ার জন্য পথ তৈরির চেষ্টা করছিলেন তখন তিনি মেঝেতে পড়ে যান।

পাশাপাশি উক্ত এক্স হ্যান্ডেলে এই ঘটনার ভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে তোলা অন্য একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। যেখানে ভাইরাল ভিডিওর পড়ে যাওয়া ব্যক্তি-সহ সেখানে উপস্থিত অন্যান্য পুলিশ কর্মীদের স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। যা দেখে এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নয়।

Advertisement

তবে এরপর ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে ভাইরাল ভিডিও এবং এর স্ক্রিনশট-সহ টাইমস অফ ইজরায়েল-সহ একাধিক ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ইজরায়েলের কফার সাবায় দেশটির ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির তরফে ইজরায়েলি নববর্ষ উদযাপন সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠান কক্ষের বাইরে গাজার সঙ্গে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি করা এবং হামাসের হাতে ইজরায়েলি বন্দিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বন্দিদের আত্মীয়-সহ ইজরায়েলের একাধিক বিরোধী দল ও সরকার বিরোধী সংগঠন। 

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, এমতো অবস্থায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত লিকুদ পার্টি তথা দেশটির আইনসভার নেসেটের সদস্য এলি দাল্লাল বিক্ষোভকারীদের মধ্য দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। পরিস্থিতি উত্তাপ্ত হয়ে উঠলে সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা এলি দাল্লালকে ঘটনাস্থল থেকে বার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এই সময় এলি দাল্লাল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মেঝেতে পড়ে যান। যদিও পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি, এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য যে আমরা আমাদের অনুসন্ধানে সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সময় ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে হেনস্থা করা সংক্রান্ত কোনও তথ্য বা প্রতিবেদন খুঁজে পাইনি।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে হেনস্থা করা হয়েছে দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে তাঁর দলের সদস্য এলি দাল্লালর পড়ে যাওয়ার ভিডিও।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সময় ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে মারধর ও হেনস্থা করা হয়েছে।

ফলাফল

ভিডিও-র ব্যক্তিটি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নয়। বরং তিনি ইজরায়েলের ক্ষমতাসীন দল লিকুদ পার্টি তথা দেশটির আইনসভার নেসেটের সদস্য এলি দাল্লাল। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement