ফ্যাক্ট চেক: বালুরঘাটের BDO-কে বিজেপি নেতার চেয়ার মারার ঘটনাটি ২০২২ সালের, সাম্প্রতিক সময়ের নয়

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ঘটনাটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের। ঘটনার পরবর্তী সময়ে ওই বিজেপি নেতার গ্রেফতারি, কারাবাস এবং জামিনও হয়ে গিয়েছে।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বালুরঘাটের BDO-কে বিজেপি নেতার চেয়ার মারার ঘটনাটি ২০২২ সালের, সাম্প্রতিক সময়ের নয়

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সিটিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া ওই ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে চেয়ার তুলে অপর এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে যে সম্প্রতি এই ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট বিডিও অফিসে ঘটেছে।

যে ব্যক্তি চেয়ার তুলে অপরজনকে মারছেন, তিনি বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার বলে দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে। ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “এই গোবর খেকোকে এখনই গ্রেফতার করে পিটিয়ে ছাল তুলে নেওয়া হোক , সালা এটা উত্তর প্রদেশ পেয়েছে। বালুরঘাটে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ। বিডিও অনুজ সিকদারকে মারধরের অভিযোগ এক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। বিডিওকে তাঁর ঘরেই চেয়ার ছুড়ে মারে বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার বলেই অভিযোগ। এই ঘটনায় বিডিওর মাথায় ও হাতে চোট লেগেছে।”

ক্যাপশন থেকেই স্পষ্ট, ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেছে এমনই দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বালুরঘাটে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ হয়েছে বলেও দাবি।

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ঘটনাটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের। ঘটনার পরবর্তী সময়ে ওই বিজেপি নেতার গ্রেফতারি, কারাবাস এবং জামিনও হয়ে গিয়েছে।

সত্য উন্মোচল হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তা রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজা হলে ওই একই ভিডিও পাওয়া যায় TV9 বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে। তবে ভিডিওটি আপলোড করা হয়েছিল ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর। ভিডিও-র ক্যাপশন ছিল, “বিডিওকে চেয়ার ছুড়ে মারল বিজেপি নেতা, এমনই অভিযোগে উত্তপ্ত বালুরঘাট।”

এর থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় যে ভাইরাল ভিডিওটি কোনও ভাবেই সাম্প্রতিক সময়ের নয়। খবরে বলা হয়, স্থানীয় একটি পঞ্চায়েতে আনা অনাস্থা প্রস্তাব মুলতুবি হয়ে যেতেই বিডিও-কে তাঁর ঘরে ঢুকে চেয়ার ছুড়ে মারার অভিযোগ ওঠে বিজেপি নেতা সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে। বিডিও কোনও কথা না শোনায়, তাঁর উপর চেয়ার দিয়ে হামলা চালান বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার, এই অভিযোগে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরে বালুরঘাট থানার বাহিনীও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

Advertisement

২০২২ সালের ১৪ অগস্ট এই নিয়ে এবিপি আনন্দেও একটি খবর প্রকাশ পায়। সেখানে লেখা হয়, এই ঘটনার পর বালুরঘাটের বিডিও অনুজ শিকদারকে বালুরঘাটের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হাতে ও মাথায় চোট পেয়েছিলেন। তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান বালুরঘাটের তৎকালীন জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা।

কী কারণে হামলা?

খবর অনুযায়ী, বালুরঘাটের ৬ নম্বর ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেছিলেন বিজেপি সদস্যরা। তবে প্রধান তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর বিজেপি পক্ষ থেকে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। কিন্তু যেদিন ভোটাভুটি হওয়ার কথা, সেদিন তা ভেস্তে গেলে পুলিশ ও বিডিও-র বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে একপর্যায়ে বিডিও-র উপর হামলা চালিয়ে দেন সুভাষ সরকার।

২০২৩ সালের ৯ অক্টোবর প্রকাশিত আনন্দবাজার ডট কমের একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এই ঘটনায় দু’মাস জেল খাটার পর জামিন পান সুভাষ সরকার। সেই সঙ্গে ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর সংবাদ প্রতিদিনেও এই নিয়ে একটি খবর প্রকাশ পায়। যেখানে বলা হয়, গোটা মামলায় বিজেপি নেতা সুভাষ সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করে বালুরঘাটের আদালত। বিডিওর উপর হামলার ঘটনায় বিজেপি নেতা সুভাষ সরকারকে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।

অর্থাৎ বুঝতে বাকি থাকছে না যে ২০২২ সালের এই অভিযুক্ত নেতা দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সাজা ঘোষণাও হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে ভিডিওটি ফের ভাইরাল হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি নেতা সুভাষ নেতা সুভাষ সরকার বালুরঘাটের বিডিও-কে চেয়ার তুলে মারছেন। এর জেরে বিডিও-র হাতে-মুখে চোট লেগেছে।

ফলাফল

এই ঘটনাটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের। সেই সময়েই সুভাষ সরকারকে গ্রেফতার করা হয়ছিল এবং আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement