ফ্যাক্ট চেক: ভারতের বাঁধ থেকে বাংলাদেশে জল ছেড়ে দেওয়ার দৃশ্য দাবি করে ভাইরাল পাকিস্তানের ভিডিও

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারত তাদের বাঁধের জল ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: ভারতের বাঁধ থেকে বাংলাদেশে জল ছেড়ে দেওয়ার দৃশ্য দাবি করে ভাইরাল পাকিস্তানের ভিডিও

বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাংলাদেশের মোট ১১টি জেলার প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর তথ্য অনুযায়ী গতকাল পর্যন্ত এই বন্যার করাণে দেশটি মৃত্যু হয়েছে মোট ২৩ জনের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু বাংলাদেশি নাগরিক বন্যার কারণ হিসাবে ভারতের বাঁধ থেকে জল ছেড়ে দেওয়াকে দায়ী করছেন। 

আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে বাঁধ থেকে জল ছাড়ার একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে একটি বাঁধ থেকে ব্যাপক গতিতে জল বেরিয়ে যাচ্ছে।  ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারত তাদের বাঁধের জল ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে তার থেকে মাছবুত বাব দেওয়া দরকার।” পাশাপাশি ভিডিও-র ফ্রেমের উপরে তিনি লিখেছেন, “বাংলাদেশের অনেক বড় ক্ষতি করে দিল ভারত।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) এমনই একটি পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল দাবিটি মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর। আসলে ভিডিওতে যে বাঁধটি দেখা যাচ্ছে সেটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার সিন্ধু নদের উপর অবস্থিত টারবেলা বাঁধ।

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল দাবির সত্যতা এবং ভিডিওতে যে বাঁধটি দেখা যাচ্ছে সেটি ভারতের কিনা সেই সংক্রান্ত তথ্য জানতে আমরা ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে সেগুলির রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন আমরা গত ৫ আগস্ট এই একই ভিডিও ‘হামিদ ৯৫’ নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টেও খুঁজে পাই। টিকটকে পোস্ট করা ভিডিওটির আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে। ভিডিওটি শেয়ার করে তার ক্যাপশনে বাঁধটিকে ‘টারবেলা বাঁধ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

এরপর আমরা কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘টারবেলা বাঁধ’ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করি। তখন আমরা ২০০২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাশার Earth Observatory-র সরকারি ওয়েবসাইটে এই বাঁধ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। সেখান থেকে আমরা জানতে পারি ‘টারবেলা’ পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার সিন্ধু নদের উপর অবস্থিত একটি আর্থ-ফিল্ড বাঁধ। এটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া ১৯৬০ সালের জল চুক্তির উপরে ভিত্তি করে ১৯৭৭ সালে তৈরি করা হয়। এটি বিশ্বের বৃহত্তম আর্থ-ফিল্ড বাঁধ। যেটি সিন্ধু নদের তলদেশ থেকে ১৪৭ মিটার উপরে অবস্থিত।

Advertisement

এরপর আমরা উপরে প্রাপ্ত তথ্যকে সূত্র হিসাবে ধরে গুগুল ম্যাপে টারবেলা বাঁধটি খুঁজে বার করি। গুগুল ম্যাপে আমরা বাঁধটির যে ছবি দেখতে পাই তার সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর বাঁধটিকে পাশাপাশি রেখে তুলনা করলে উভয়ের মধ্যে হুুবহু মিল লক্ষ্য করা যায়। নিচে গুগুল ম্যাপ থেকে টারবেলা বাঁধের প্রাপ্ত ছবির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর তুলনা দেখা যাবে।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে ভারতের বাঁধ থেকে বাংলাদেশে জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানের টারবেলা বাঁধের ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে ভারতের বাঁধ থেকে বাংলাদেশে জল ছেড়ে দেওয়ার দৃশ্য।

ফলাফল

ভিডিওতে যে বাঁধটি দেখা যাচ্ছে সেটি ভারতের নয় বরং পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার সিন্ধু নদের উপর অবস্থিত টারবেলা বাঁধ।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement