ফ্যাক্ট চেক: কুম্ভমেলায় দলিত মহিলাকে অর্ধনগ্ন করে নির্যাতন উচ্চবর্ণদের? না, ভিডিওটি গুজরাটের

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি উত্তর প্রদেশের নয়। পাশাপাশি ভিডিওটির সঙ্গে কুম্ভমেলা কিংবা জাতিগত বৈষম্যের কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে ভিডিওটি চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি গুজরাটের দাহোদ জেলার ধলসিমাল গ্রামে তোলা হয়েছিল।  

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: কুম্ভমেলায় দলিত মহিলাকে অর্ধনগ্ন করে নির্যাতন উচ্চবর্ণদের? না, ভিডিওটি গুজরাটের

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে বেশ কয়েকজনকে হাতে লাঠিয়ে নিয়ে একজন মহিলাকে প্রায় অর্ধনগ্ন করে গ্রামের রাস্তায় ঘোরাতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, নিম্নবর্ণের মানুষ হয়েও উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে আয়োজিত মহাকুম্ভের মেলায় যাওয়ার অপরাধে ওই মহিলাকে অর্ধনগ্ন করে মেরেছে সেখানকার উচ্চবর্ণের লোকেরা।

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “এটাই অসভ্য জাতি ভারত। ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে একজন আদিবাসী মহিলাকে উলঙ্গ করে প্রকাশ্য রাস্তায় মারতেছে উচু জাতের লোকেরা। ওই মহিলার অপরাদ সে নিচু জাতের হয়ে কুম্ভ মেলায় গিয়েছিল বলে। এর আবার বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলে।”(সব বানান অপরিবর্তিত)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি উত্তর প্রদেশের নয়। পাশাপাশি ভিডিওটির সঙ্গে কুম্ভমেলা কিংবা জাতিগত বৈষম্যের কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে ভিডিওটি চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি গুজরাটের দাহোদ জেলার ধলসিমাল গ্রামে তোলা হয়েছিল।  

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা জানতে সেটির কি-ফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি গুজরাটি সংবাদমাধ্যম ‘Zee 24 Kalak’এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এই একই ভিডিও-সহ একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায় ভিডিওটি গুজরাটের দাহোদ জেলার একটি গ্রামের। 

এরপর উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী সার্চ করলে ২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভাইরাল ভিডিওর একটি স্ক্রিনশট-সহ The Siasat Daily-তে এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, পরকীয়ার অভিযোগে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার গুজরাটের দাহোদ জেলার ধলসিমাল গ্রামে এক আদিবাসী মহিলাকে অর্ধনগ্ন করে বাইকে বেঁধে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়। নির্যাতিতা ওই মহিলার স্বামী খুনের অপরাধে জেলবন্দি। আর এই পরিস্থিতি মধ্যে তিনি অন্য এক পুরুষের প্রেমে পড়েন। এই খবর তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জানার পর তারা ওই মহিলাকে তাঁর বাপের বাড়ি থেকে বলপূর্বকভাবে অর্ধনগ্ন করে বাইকে বেঁধে নিয়ে যায়।

Advertisement

এরপর বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমরা গুজরাটের দাহোদ জেলার পুলিশ সুপার ডাঃ রাজদীপ সিং ঝালার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “ভাইরাল ভিডিওটি চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি গুজরাটের দাহোদ জেলার ধলসিমাল গ্রামে তোলা হয়েছিল। এর সঙ্গে উত্তর প্রদেশের কিংবা কুম্ভমেলার কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে ধলসিমাল গ্রামের আদিবাসী পরিবারের এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকে অর্ধনগ্ন করে গ্রামে ঘোরায়। এটি একটি পারিবারিক সমস্যা এবং এখানে কোনও উচ্চবর্ণ-নিম্নবর্ণের বিষয় নেই। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তারা সকলেই আদিবাসী।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে গুজরাটের দাহোদের ভিডিও কুম্ভমেলায় নিম্মবর্ণের মহিলাকে মারা হয়েছে দবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook Users

দাবি

ভিডিতে দেখা যাচ্ছে, উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে আয়োজিত মহাকুম্ভের মেলায় যাওয়ার অপরাধে এক নিম্নবর্ণের মহিলাকে অর্ধনগ্ন করে মেরেছে সেখানকার উচ্চবর্ণের লোকেরা।

ফলাফল

ভিডিওটি উত্তর প্রদেশের নয়। পাশাপাশি ভিডিওটির সঙ্গে কুম্ভমেলা কিংবা জাতিগত বৈষম্যের কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে ভিডিওটি চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি গুজরাটের দাহোদ জেলার ধলসিমাল গ্রামে তোলা হয়েছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement