ফ্যাক্ট চেক: বারাণসীর গণধর্ষণে অভিযুক্তদের ভিডিওকে চাকরিহারা শিক্ষকদের বলে ছড়াচ্ছে মিথ্যে দাবি 

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি পুরোপুরি মিথ্যে। ভিডিওতে যে যুবকদের দেখা যাচ্ছে তাদের বারাণসীতে একটি গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: বারাণসীর গণধর্ষণে অভিযুক্তদের ভিডিওকে চাকরিহারা শিক্ষকদের বলে ছড়াচ্ছে মিথ্যে দাবি 

গত ৯ এপ্রিল কসবার ডিআই অফিসে চাকরিহারা শিক্ষকদের লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। যা নিয়ে সমালোচনায় মুখর নানা মহল। এই আবহে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে কয়েকজন পুলিশকর্মীকে দেখা যাচ্ছে চারজন যুবকের হাত ধরে একে-একে প্রিজন ভ্যানে তুলতে। 

ভিডিওটি পোস্ট করে বলা হচ্ছে যে, ডিআই অফিসে চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্যে এই যুবকেরা ছিলেন, যারা প্রত্যেকেই বহিরাগত। যে কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। 

ওই চার ব্যক্তির ছবি ভিডিওটির সঙ্গে আলাদাভাবে জুড়ে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,  "বহিরাগত চার (4) গুন্ডা পুলিশের হাতে। চলুক 4th ডিগ্রী। প্রশ্ন হলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দেওয়ার পর যে সকল শিক্ষকরা নিজ নিজ স্কুলে ফিরে গিয়েছে তারা নিশ্চয়ই আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি বা গুন্ডামি করতে আসেনি। তাহলে,,, যারা উন্নয়ন বিরোধী, বাংলাদ্রোহী রাজনৈতিক দুষ্কৃতীদের প্ররোচনার ফাঁদে পা দিয়ে প্রশাসনকে আগাম না জানিয়ে আন্দোলনের নামে তাণ্ডব করতে এসেছিল এবং সম্ভবত যে ৪ জন গ্রেফতার হয়েছে তারা কারা? আমার মতে --- পুলিশ যেটা করেছে ঠিক করেছে। আগাম না জানিয়ে আন্দোলনের নামে তাণ্ডব চালিয়ে পুলিশের গায়ে হাত তুলবে... আর,,,পুলিশ কিছু ব্যবস্থা নেবে না বসে বসে ললিপপ খাবে? আর অবলীলায় তাণ্ডব করতে দেবে ---এটা সম্ভব নয়।"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি পুরোপুরি মিথ্যে। ভিডিওতে যে যুবকদের দেখা যাচ্ছে তাদের বারাণসীতে একটি গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। 

যেভাবে জানা গেল সত্যি

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি থেকে একটি স্ক্রিনশট নিয়ে তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে দেখা যায় ওই একই ভিডিও-র ফ্রেম সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর একটি প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হয়েছে। 

২০২৫-এর ৯ এপ্রিল প্রকাশিত এই রিপোর্টে লেখা হয় যে, বারাণসীর গণধর্ষণের ঘটনায় মোট ৯ অভিযুক্তকে দায়রা আদালতের তরফে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। বারাণসী ক্যান্টনমেন্টের সহকারী পুলিশ কমিশনার বিধুশ সাক্সেনা জানিয়েছেন যে, বাকি অভিযুক্তদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। এই মামলায় মোট ২৩ জন অভিযুক্ত বলে জানা গিয়েছে। 

Advertisement

এরপর কিওয়ার্ড সার্চের সাহায্যে আমরা ওই একই ভিডিওটি সংবাদ সংস্থা এএনআই-র এক্স হ্যান্ডেলে খুঁজে পাই। ৮ এপ্রিল ওই ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয় যে গণধর্ষণে অভিযুক্ত ৯ জনকে আদালত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে। অন্যদিকে, কসবায় শিক্ষদের উপর লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে ৯ এপ্রিল। যা থেকে কার্যত প্রমাণ হয়ে যা ভিডিওটির সঙ্গে কলকাতার এই ঘটনার কোনও সম্পর্কই নেই। 

পুলিশ কি কোনও চাকরিহারাকে গ্রেফতার করেছে?

ভাইরাল পোস্টে আরও দাবি করা হয়েছে যে পুলিশ চারজন বহিরাগতকে গ্রেফতার করেছে। এই দাবিও ভিত্তিহীন। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পুলিশ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কাউকে গ্রেফতার করেনি। বরং দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে। 

টিভি৯ বাংলা এবং দ্য ওয়ালে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ডিআই অফিসের অফিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা করা হয়েছে, অপর মামলাটি পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে দায়ের করেছে। তবে নির্দিষ্ট কারোর নামে নয়, বরং অজ্ঞাত পরিচয়দের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

ফলে এর থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবিতে এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে।

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কসবার ডিআই অফিসে চাকরিহারাদের আন্দোলন থেকে গ্রেফতার হওয়া চার বহিরাগত যাদের পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে।

ফলাফল

আলোচ্য ভিডিওটি বারাণসীর যেখানে একটি গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে, কসবা-কাণ্ডে পুলিশ দুটি মামলা করলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement