ফ্যাক্ট চেক: শুভেন্দুর বাড়ি ঘেরাও করে ‘চোর-চোর’ স্লোগান? না, ভাইরাল অসম্পর্কিত ভিডিও

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিও শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির নয়। বরং এতে শিক্ষক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলকাতায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে চাকরি হারা শিক্ষকদের বিক্ষোভ এবং পর্ষদের আধিকারিকদের চোর বলে কটাক্ষ করতে দেখা যাচ্ছে। 

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: শুভেন্দুর বাড়ি ঘেরাও করে ‘চোর-চোর’ স্লোগান? না, ভাইরাল অসম্পর্কিত ভিডিও

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে একটি আবাসনের সামনে দাঁড়িয়ে একজন মহিলা কাউকে উদ্দেশ্য করে ‘তোরা চোর’ বলে চিৎকার করতে এবং তাদের আবাসনের বাইরে বেরিয়ে আসতে বলছেন। পাশাপাশি তার পিছনে দাঁড়িয়ে এই একই দাবি করতে দেখা যাচ্ছে আরও একাধিক ব্যক্তিকে। 

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি ঘেরাও করে ‘চোর চোর’ স্লোগান দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন,“শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি ঘেরাও করেছে সাধারণ মানুষ , চোর চোর স্লোগান দিচ্ছে । দেখুন ভিডিও।" (সব বানান অপরিবর্তিত) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিও শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির নয়। বরং এতে শিক্ষক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলকাতায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে চাকরি হারা শিক্ষকদের বিক্ষোভ এবং পর্ষদের আধিকারিকদের চোর বলে কটাক্ষ করতে দেখা যাচ্ছে। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করার সময় আমরা সেটিতে সংবাদ পোর্টাল বঙ্গ টিভির বুম ও সাংবাদিক রোজিনাকে দেখতে পাই। সেই সূত্র ধরে এই সংক্রান্ত একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করলে ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল বঙ্গ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে এই একই ভিডিওর একটি বর্ধিত সংস্করণ তথা বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। "নাম একবার" আমাদের না খাইয়ে নিজেরা খাবার খাওয়া" শিরোনামের সেই প্রতিবেদনটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে আমরা জানতে পারি সেটি কলকাতার সল্টলেকের নিবেদিতা ভবনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে চাকরি হারা শিক্ষকদের বিক্ষোভের দৃশ্য। 

ভাইরাল ভিডিওতে যে মহিলাকে ‘তোরা চোর’ বলে চিৎকার করতে দেখা যাচ্ছে বঙ্গ টিভির ভিডিওতে তার পুরো বক্তব্য পাওয়া যায়। যা থেকে জানা যায় ওই মহিলার নাম সায়ন্তিকা আচার্য। তিনি জানান, “আমরা যোগ্য কিন্তু আমাদের চাকরি ওনারা খেয়েছেন। এই চোর, বেইমান এবং দুর্নীতি পরায়ন সরকারের মধ্য কোনও মানবিকতা নেই। থাকলে আমাদের চাকরি খেতো না। আমরা শিক্ষকরা এখানে না খেয়ে বসে আছি। আথচ তারা পুলিশের হাত দিয়ে এগরোল কিনতে পাঠিয়েছে।”

Advertisement

এরপর উপরে উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে একাধিক সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেই সব প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবি তুলে ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি'র কর্মীরা আচার্য নিবেদিতা ভবনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসেও অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়। এদিন পর্ষদ অফিসের ভেতরেই অনশনে বসেন গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি'র আটজন কর্মী। বাকিরা বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি নিয়ে চলতি বছরের ১৫ জুন বঙ্গ টিভিতে "শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি ঘেরাও" কত বড় মিথ্যাচার ফাঁস করলেন রোজিনা" শিরোনামে অন্য একটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে বঙ্গ টিভির সাংবাদিক রোজিনা ভাইরাল ভিডিও ছড়িয়ে যে দাবি করা হচ্ছে সেটিকে ভুয়ো বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি ঘেরায়ের নয়। এমনকি এর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী কিংবা বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। বরং এটি গত ২১ এপ্রিল চাকরি হারা শিক্ষকদের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ঘেরাও অভিযানের দৃশ্য। যেখানে ক্ষুদ্ধ শিক্ষকরা যোগ্য ও অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে পর্ষদের সভাপতি-সহ বাকি অধিকারিকদের আটকে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।   

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি ঘেরাও করে ‘চোর চোর’ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে দাবি করে শেয়ার করা হচ্ছে চাকরি হারা শিক্ষকদের বিক্ষোভের ভিডিও।

ফ্যাক্ট চেক

Facebook users

দাবি

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি ঘেরাও করে ‘চোর চোর’ স্লোগান দিচ্ছে সাধারণ মানুষ।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিও শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির নয়। ঘটনাটি ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিলের এবং এতে শিক্ষক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলকাতায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে চাকরি হারা শিক্ষকদের বিক্ষোভ এবং পর্ষদের আধিকারিকদের চোর বলে কটাক্ষ করতে দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement