scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: মায়ানমারে নারী নির্যাতনের অসম্পর্কিত ভিডিয়ো ফের ছড়ানো হচ্ছে মণিপুরের ঘটনা বলে

একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক মহিলাকে রাস্তার উপর ফেলে সেনার পোশাকে থাকা কয়েকজন নৃশংসভাবে মেরে চলেছেন।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: মায়ানমারে নারী নির্যাতনের অসম্পর্কিত ভিডিয়ো ফের ছড়ানো হচ্ছে মণিপুরের ঘটনা বলে ফ্যাক্ট চেক: মায়ানমারে নারী নির্যাতনের অসম্পর্কিত ভিডিয়ো ফের ছড়ানো হচ্ছে মণিপুরের ঘটনা বলে

জাতিগত সংঘর্ষে দু-মাসেরও বেশি সময় ধরে জ্বলছে মণিপুর। দুই মহিলার বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া এই চরম ন্যক্কারজনক ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে বহু ছবি ও ভিডিয়ো যা মণিপুরে ঘটেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। 

এমনই একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এই মহিলাকে রাস্তার উপর ফেলে সেনার পোশাকে থাকা কয়েকজন নৃশংসভাবে মেরে চলেছেন। ভিডিয়োতে হামলাকারীদের হাতে বন্দুক ধরে থাকতেও দেখা যাচ্ছে। 

ভিডিয়োটি শেয়ার করে অনেকেই লিখছেন, "মণিপুরে বেটি বাঁচাও।" অর্থাৎ এই ঘটনাটিকে মণিপুরের বলে দাবি করা হয়েছে। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষ ভিডিয়োটি শেয়ার করেছেন।

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, এই ভিডিয়োটির সঙ্গে মণিপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কোনও সম্পর্ক নেই। এটি মায়ানমারের ঘটনা ও আগের বছর ঘটেছিল। 

কীভাবে জানা গেল সত্যি

সবার প্রথম ভাইরাল ভিডিয়ো থেকে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে আমরা তার রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। রিভার্স সার্চের মাধ্যমে আমরা ওই একই ভিডিয়োর স্ক্রিনশট সহ একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন খুঁজে পাই। ৯ ডিসেম্বর ২০২২-এ প্রকাশিত হওয়া এই প্রতিবেদনের ছবিগুলি দেখলে পরিষ্কার হয়ে যায় যে এই ভিডিয়োটি কোনও ভাবেই মণিপুরের সাম্প্রতি ঘটনাবলীর সঙ্গে যুক্ত হওয়া সম্ভব নয়।

কারণ মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে দু-মাসের সামান্য বেশি। কিন্তু এই ভিডিয়োটির অস্তিত্ব গত বছরও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছিল। সেই প্রতিবেদনে লেখা হয়, এটি মায়ানমারের ঘটনা যেখানে এক মহিলাকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছিল। এ বাদে আর কোনও তথ্য ওই ওয়েবসাইটে ছিল না। 

Advertisement

এই বিষয়টি সূত্র ধরে আমরা বেশ কিছু কিওয়ার্ড সার্চ করি এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ইলেভন মায়ানমার ডট কম নামের একটি সংবাদ মাধ্যমের খবর দেখতে পাই। সেখানে এই ঘটনাটিকে মায়ানমারের তামু শহরের ঘটনা বলে জানানো হয়। মায়ানমারের তামু শহরটি মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে একশো কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থিত। 

খবর অনুযায়ী, ওই মহিলাটিকে যাদের মারতে দেখা যাচ্ছে তারা মায়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকারের সশস্ত্র শাখা পিপল ডিফেন্স ফোর্সের চতুর্থ ব্যাটালিয়নের সদস্য। ৬ ডিসেম্বর ২০২২ মায়ানমার নাও-এর রিপোর্টে মানায়মার সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সচিব নাইং হুটো আউঙ-এর এই ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য তুলে ধরা হয়। তিনি জানান যে, এই নৃশংস ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি বিশদ তদন্ত করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনে আরও জানা যায় যে, এই ভিডিয়োতে যে নির্যাতিতাকে দেখা গিয়েছে তাঁর নাম আই মার তুন এবং ঘটনাটি মায়ানমারের তামু শহরে ২০২২ সালের মে মাসে ঘটেছিল। 

প্রসঙ্গত, গত জুন মাসেও এই ভিডিয়োটি মণিপুরের ঘটনা বলে ভাইরাল হয়েছিল। তখনও ইন্ডিয়া টুডের পক্ষ থেকে এর ফ্যাক্ট চেক করা হয়। 

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে, কীভাবে মায়ানমারের একটি অসম্পর্কিত ঘটনা মণিপুরের বলে ছড়ানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

ফ্যাক্ট চেক

facebook users

দাবি

ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে মণিপুরে এক মহিলার সঙ্গে নির্যাতন করা হচ্ছে।

ফলাফল

ভাইরাল ভিডিয়োটি মণিপুরের নয়, বরং মায়ানমারের। তামু শহরে ২০২২ সালের জুন মাসে ঘটনাটি ঘটেছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
TAGS:
Advertisement