রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দিকে আঙ্গুল তুলে থাকে বিরোধীরা। কিন্তু সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের হাসপাতালই পেল দেশের সেরা জেলা শাসপাতালের শিরোপা। কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগ এই স্বীকৃতি দিল টালিগঞ্জের এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালকে।
গোটা দেশের জেলা হাসপাতালগুলির কাজকর্ম নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছিল নীতি আয়োগ। ২০১৮-১৯ সালের সেই সমীক্ষাতেই এম আর বাঙ্গুরকে সেরার শিরোপা দিল নীতি আয়োগ। সোমবার সন্ধেয় রাজ্য সরকারকে ওই খবর জানিয়েছে নীতি আয়োগ।
এক্ষেত্রে মাথায় রাখা হয়েছে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা, অসুস্থের সেবা ও পরিষেবার মান। আইসিইউ শয্যা, অস্ত্রোপচার ও অন্যান্য চিকিৎসার বিষয়গুলি। বাঙ্গুরে রয়েছে মোট ৭১৩টি শয্যা। ৩০০-এর বেশি শয্যা আছে, এমন হাসপাতালের তালিকাতেই দেশের সেরা বাঙ্গুর।
করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে এই রোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে টালিগঞ্জের এই হাসপাতাল। ২০২০ সালের প্রায় গোড়া থেকে কোভিড হাসপাতালের তকমা পাওয়া বাঙ্গুর হাসপাতাল সেই থেকেই করোনা যুদ্ধে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। বহু মানুষকে সুস্থ করেছে, কত মরণাপন্ন রোগীকে জীবনের পথে ফিরিয়েছে – তার হিসেব নেই।
এক সময় টালিগঞ্জের এই এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল স্থানীয়দের মুখে ভাঙ্গর হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত ছিল। কথিত ছিল, এই হাসপাতালের কেউ ঢুকলে জীবিত হয়ে আর বেরোয় না। ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছিল এই হাসপাতাল। কিন্তু গত প্রায় দু'দশক ধরে এই হাসপাতালের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। আর প্রায় গত দেড় বছর ধরে করোনা চিকিৎসায় এই হাসপাতাল শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। গরিব নিম্নবিত্ত মানুষ শুধু নয় মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত শ্রেণির মানুষের কাছেও করোনা চিকিৎসার অন্যতম ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই হাসপাতাল।
এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালের সুপারিন্টেনডেন্ট ডক্টর শিশির নস্কর জানিয়েছেন, CCU, ICU, SDU, গাইনোকোলজি, ইমারজেন্সি সব বিভাগেই নীতি আয়োগের প্রশংসা কুড়িয়েছে বাঙ্গুর হাসপাতাল।
হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর আরও জানিয়েছেন, 'হাসপাতালের একেবারে নীচুতলরা কর্মী থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স, শীর্ষ আধিকারিক-সকলেই এই কৃতীত্বের ভাগিদার। কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগের এই সম্মান আমাদের কাছে অত্যন্ত সম্মানে। আমরা সব সময়ই ভাল কাজ করতে বদ্ধপরিকর।'