বড়দিন (25 December) মানেই কলকাতায় পার্কস্ট্রিটে (Park Street) ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল (Christmas Festival 2024)। গত ১৯ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্কস্ট্রিটে অ্যালেন পার্কে ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করে দিয়েছেন। আলোয় মুড়ে দেওয়া হয়েছে পার্কস্ট্রিট।
ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যাল মানেই বাঙালির কাছে এখন ডেস্টিনেশন পার্কস্ট্রিট। কোভিড-কালেও পার্কস্ট্রিটে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ের ছবি ভাইরাল হয়েছিল। কোভিড-এর ওই রকম অতিমারির মধ্যেও যদিও লাখ লাখ মানুষের ভিড় হয়, তাহলে এবার কী হতে পারে, ভেবে নিন।
আপনিও কি বড়দিনে পার্কস্ট্রিটে হাঁটার প্ল্যান করেছেন? আজকের যে পার্কস্ট্রিট দেখে আমরা মন্ত্রমুগ্ধ হই, কলকাতার সবচেয়ে ধনী এলাকার অন্যতম, সেই পার্কস্ট্রিট দিয়েই এককালে কেউ যাতায়াত করতে ভয় পেত। তার মূলে ছিল কবরস্থান।
আসলে ষপ্তদশ শতকে ওই রাস্তাটিই ছিল কবরস্থানে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। রাত-বিরেতে পাল্কিবাহকরাও ওই রাস্তা মাড়াতে চাইতেন না। গা ছমছমে ব্যাপার।
কারণ, কলকাতায় যখন ইংরেজরা ঘাঁটি জমাতে শুরু করেন, তখন নানা কারণে প্রচুর ইংরেজের মৃত্যু হত। ম্যালেরিয়া, কলেরা, প্লেগের মতো রোগ তো ছিলই, সঙ্গে আবহাওয়া। ফলে কম বয়সেই প্রাণ হারাতেন বহু সাহেব, মেমসাহেব।
১৭৫৭ সালে পলাশি যুদ্ধের পরে কলকাতা পুরোপুরি হয়ে যায় ব্রিটিশদের দখলে। কলকাতায় এখনও অবধি আবিষ্কৃত প্রাচীন ব্রিটিশ সমাধিস্থান ছিল সেই জমিতে, যেখানে আজ সেন্ট জোনস গির্জা দাঁড়িয়ে আছে। ১৬৯৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় প্রয়াত জোব চার্নকের সমাধিও আছে এখানে।
১৭৬৭ সালে নানা কারণে ওই কবরস্থান বন্ধ করে দিতে হয়। ওই বছরই অগাস্টে নতুন কবরস্থান শুরু হয়। সেকালে নাম ছিল বাদামতলা। কবরস্থান হওয়ায় নাম হয়ে যায় ‘বেরিয়াল গ্রাউন্ড রোড’। বেঙ্গল অ্যান্ড আগরা ডিরেক্টরি ১৮৫০ অনুযায়ী এর নাম ছিল ‘গোরস্থান কা রাস্তা’।
ওই রাস্তায় ছিল গভর্নর হেনরি ভ্যান্সিটার্টের বাসভবন। ১৭৫৯ থেকে ১৭৬৪ পর্যন্ত তিনি ছিলেন বাংলার গভর্নর।পরে এই ভবনে বাস করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রথম প্রধান বিচারপতি এলাইজা ইম্পে।
তাঁর এই বাসভবনের বাগানে ঘুরে বেড়াত পোষা হরিণ। সেই ‘ডিয়ার পার্ক’ থেকেই রাস্তার নাম ক্রমে হয়ে গেল ‘পার্ক স্ট্রিট’।
বড়দিনের পার্কস্ট্রিটে ব্রেকফাস্ট কোথায় করবেন? ১৯২৭ সালে ব্রিটিশদের চায়ের ঠেক হিসেবে খুলেছিল ফ্লুরিজ (Flurys)। সেই ফ্লুরিজ এখন অন্যতম আকর্ষণ পার্কস্ট্রিটে।