বাজারে এসে গেছে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মার ইলিশ। বুধবার বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ইলিশ ভর্তি ট্রাক ঢোকে উত্তর ২৪ পরগণার পেট্রাপোল স্থল বন্দরে। সেখান থেকে ওইদিন রাতেই হাওড়া স্টেশন লাগোয়া পাইকারি মাছ বাজারে নিয়ে আসা হয় মাছ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাওড়ার এই বাজারে খুচরো মাছ ব্যবসায়ীরা সেই মাছ সংগ্রহ করার জন্য নিলামে অংশ নেন।
বাজারে এসে গেছে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মার ইলিশ। বুধবার বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ইলিশ ভর্তি ট্রাক ঢোকে উত্তর ২৪ পরগণার পেট্রাপোল স্থল বন্দরে। সেখান থেকে ওইদিন রাতেই হাওড়া স্টেশন লাগোয়া পাইকারি মাছ বাজারে নিয়ে আসা হয় মাছ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাওড়ার এই বাজারে খুচরো মাছ ব্যবসায়ীরা সেই মাছ সংগ্রহ করার জন্য নিলামে অংশ নেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, শারদোৎসবের আগেই ভারতে পদ্মার ইলিশ পাঠানো হবে। সব মিলিয়ে ১২০০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ ভারতে আসার কথা।
ইলিশ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দুর্গাপুজোর সময়ে ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ রফতানি হয়ে আসছে গত বেশ কয়েক বছর ধরে। গত বছর পুজোর মরসুমে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক ২,৪২০ টন ইলিশ ভারতে পাঠানোর অনুমতি দিলেও পাঠানো হয়েছিল মাত্র ৫৭৭ টন। এবছর আরও কমিয়ে ১,২০০ টন রফতানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। প্রতি কেজি ইলিশ ন্যূনতম সাড়ে ১২ ডলারে (ভারতীয় মুদ্রায় ১০৫৭ টাকা) রফতানি করা হবে বলে জানানো হয়েছে পদ্মাপারের দেশ থেকে।
তবে এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ পরিমাণ ইলিশ এসে পৌঁছায়নি এপার বাংলায়। পদ্মার ইলিশের ঘাটতি থাকায় দাম এখনও বেশ চড়া। এখনও পর্যন্ত ২৪০ টন রূপোলি শষ্য এসে পৌঁছেছে ভারতে।
এখনও পর্যন্ত যে ইলিশ মাছ এসেছে বাংলাদেশ থেকে, তার মধ্যে ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির মাছ রয়েছে। হাওড়ার পাইকারি বাজারে এখন দাম রয়েছে ১৬০০-১৭০০ টাকা। খুচরো বাজারে দাম আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে কলকাতা এবং শহরতলিতে পদ্মার ইলিশের দাম উঠেছে প্রায় ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা। তবে যোগান বাড়লে দাম কমতে পারে বলেই আশা করছেন ক্রেতারা।
এপার বাংলার বাজারে আগে থেকেই রয়েছে ডায়মন্ড হারবার, গুজরাত আর মায়ানমারের ইলিশ। এত মাছের মধ্যে খাঁটি পদ্মার ইলিশ চিনবেন কী করে? ইলিশের অপর নামই রূপোলি শষ্য। তবে রূপোলি আঁশের সঙ্গে লালচে গোলাপি আভাও থাকে পদ্মার ইলিশে । যদিও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা ইলিশে কৃত্রিম ভাবে এই লালচে আভা আনার চেষ্টা করেন। তাই কেনার সময় ভালো করে দেখে নিতে হবে। মেঘনা এবং পদ্মা নদীর ইলিশ পটল আকারের হয়। এই আকার দেখেও চেনা যায় পদ্মার ইলিশ।
উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা শহরে এমন কয়েকটা বাজার আছে যেখানে গেলেই পৌঁছে যাবেন মাছের স্বর্গরাজ্যে। জানেন শহরের সেরা ইলিশ মাছ কোথায় পাওয়া যায়?
মানিকতলা বাজার - শিয়ালদহ থেকে সোজা শ্যামবাজারের দিকে এগোলেই বিবেকানন্দ রোডের ক্রসিংয়ে বিশাল এই বাজার কলকাতার অন্যতম সেরা বাজার। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় সাড়ে ৫ টা থেকেই শুরু হয় ক্রেতাদের আনাগোনা। আর বিক্রেতারাও ডালি সাজিয়ে বসেন। এমন কোনও মাছ নেই যা এখানে পাওয়া যাবে না। খাঁটি ইলিশ খেতে হলে যেতে পারেন এই বাজারে।
গড়িয়াহাট বাজার - গড়িয়াহাটে পাওয়া যায় না এমন কোনও জিনিস বোধহয় এই কলকাতায় নেই। তবে এইখানে যে মাছের সম্ভারটিও বেশ তা জানেন না অনেকেই। পাথরের স্ল্যাবের উপরে ঢালাও পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। এখান থেকে মনের সুখে ইলিশ কিনে আনুন।
লেক মার্কেট - লেক মার্কেটের আশেপাশের ফুলের দোকানে চোখ গেলেই ভরে যায় মন। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দাদের কাছে তা বেশ জনপ্রিয় বটে। আর সেই ফুলের বাজারের থেকেও বেশি জনপ্রিয় লেক মলের তলার মাছের বাজার। সকাল হোক বা সন্ধে সব সময় উপচে পড়ছে ভিড়। এখানেও নানা সাইজের ইলিশ মাছ পাবেন। তাই এখান থেকেও সেরা ইলিশ কিনে আনতে পারেন।
পাতিপুকুর মাছের বাজার - পাতিপুকুর রেল ব্রিজের তলায় বিশাল এই মাছের বাজার। ভোর রাত থেকেই শুরু হয় ক্রেতাদের ভিড়। আসলে এটা মাছের পাইকারি বাজার। এখানে যেতে হলে কিন্তু ভোরবেলাই যেতে হবে। খুচরো মাছ বিক্রেতেরা এখানে গিয়েই মাছ কিনে আনে। তাই বেলা বাড়তেই কিন্তু সব মাছ শেষ হয়ে যায়। এখানে গেলে অনান্য বাজারের তুলনায় সস্তায় ভাল মাছ পাবেন। খাঁটি ইলিশ খেতে হলে এখানে যেতে পারেন।
যদুবাবুর বাজার - ভবানীপুরে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোড সংলগ্ন এলাকায় অনেকটা জায়গা জুড়ে বসে এই বাজার। বাজারের বেশ কিছুটা অংশ ছাউনির নীচে। আবার কিছু দোকান রয়েছে খোলা জায়গাতেই। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শতাব্দীপ্রাচীন এই বাজারে চলে কেনাকাটা। এখানকার মাছের দোকানে ছুটির দিনে উপচে পড়ে ভিড়। সস্তা-দামি সমস্ত মূল্যেরই টাটকা মাছ আপনি পাবেন এই বাজারে। এখানে প্রতিদিনই ১ কিলো বা তার চেয়েও বেশি ওজনের ইলিশ পেয়ে যাবেন।
নিউ মার্কেট মাছ বাজার - ৫০ বর্গফুট জায়গা জুড়ে মধ্য কলকাতার বুকে বিশাল মাছের বাজার। দুর্গাপুজো, নববর্ষ হোক বা বড়দিন সব সময় উপচে পড়া ভিড় এখানে। বিশেষ করে অনুষ্ঠান বাড়িতে বড় বড় অর্ডারের মাছ যায় এখানকার দোকানগুলি থেকে। শহরবাসীদের মাছ কেনার জন্য আরও এক সেরা গন্তব্য হতে পারে এই বাজারও। পুজোয় একটা দিন ইলিশ খেতে চাইলে এই বাজার থেকে কিনতে পারেন।