আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা এবার অন্যদিকে মোড় নিল। দেশজুড়ে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেই ১৪ অগাস্ট মধ্যরাতে হঠাত্ আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে ভাঙচুর চালাল একদল দুষ্কৃতী।
যার নির্যাস, আজ অর্থাত্ বৃহস্পতিবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এমার্জেন্সি পরিষেবাও ব্যাহত। কারণ, দুষ্কৃতীরা এমার্জেন্সি রুমেও ভাঙচুর চালিয়েছে।
কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে দেশের অনেক জায়গায় 'রিক্লেইম দ্য নাইট' নামে প্রতিবাদ শুরু হয়। বাংলায় যে প্রতিবাদের নাম, 'মেয়েরা রাত দখল করো'।
কিছুক্ষণের মধ্যেই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলাকালীন হঠাত্ খবর আসে, আরজি কর হাসপাতালে হামলা চালিয়েছ দুষ্কৃতীরা।
হাসপাতালের কয়েক কর্মীর অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা রড, লাঠি নিয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালানো শুরু করে। তখন নিরাপত্তায় থাকা পুলিশকর্মীরা পালিয়ে যান ভয়ে।
মধ্যরাতে বিক্ষুব্ধ জনতা ব্যারিকেড ভেঙে হাসপাতালের এমার্জেন্সি রুমে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। রাত ১২টার দিকে হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
চিকিৎসকদের মারধর করা হয়। হাসপাতাল চত্বরে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের প্রতিবাদ স্থলেও দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর করে। চেয়ার ও ফ্যান ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে।
ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের ভিতরে কিছু অবশিষ্ট নেই। জানালা, বিছানা থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে।
এমনকী, হাসপাতালের ভেতরে নির্মিত পুলিশ ব্যারাকও গুঁড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। বিচারের দাবিতে প্রথমে হাসপাতালের বাইরে স্লোগান দেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়।
এই জনতা হঠাৎ করেই হাসপাতালে হামলা চালায়। যে জরুরি ভবনে একজন নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছিল সেখানেও হামলা চালানো হয়। ভবনের প্রতিটি কোণায় লুকিয়ে ছিল অপরাধের আলামত। গভীর রাতে একই ভবন ভেঙে ফেলা হয়।
বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।
প্রায় ৪০ জনের একটি দল বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিল। এই একই লোকেরা হাসপাতালে হিংসাত্মক হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের গাড়ি ও কিছু বাইকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।