গ্রীষ্মে চোখ থাকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায়, শীতের যাবতীয় অঙ্ক সর্বনিম্ন তাপমাত্রাকে ঘিরে। তবে কলকাতায় রাতের দিকে শীতের আমেজ বজায় থাকলেও কনকনে ঠান্ডা এখনও অধরা।
গতকাল ডিসেম্বরের প্রথম দিনেই শীতের আমেজ উপভোগ করেছে বঙ্গবাসী। তাপমাত্রা আর না-নামলেও কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় ঠান্ডার আমেজ অনুভূত হয়েছে। পশ্চিমের জেলা ও তরাই ডুয়ার্সে কনকনে ঠান্ডা উপভোগ করছেন মানুষ। দার্জিলিঙেও ঠান্ডায় মজেছেন পর্যটকেরা। পাহাড়ে জবুথবু অবস্থা।
বুধবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক বলেই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। অন্যদিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার সর্বোচ্চ পরিমাণ থাকবে ৯৬ শতাংশ। সর্বনিম্ন ৩৮ শতাংশ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা কমবে। পাশাপাশি জেলাগুলির তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির নিচে নেমে যাবে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।তবে শীত কিছুটা বাধা পেতে পারে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নয়া নিম্নচাপের কারণে।
আবহাওয়ার দফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির আবহাওয়া সাধারণভাবে শুকনো থাকবে। আগামী ২ থেকে ৩ দিন রাতের তাপমাত্রা সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না।
হাওয়া অফিস বলছে, আগামী ৪৮ গাঙ্গেয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলির আবহাওয়া শুকনো থাকবে। আগামী দুই থেকে তিন দিন রাতের তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না।
এদিকে দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং সন্নিহিত দক্ষিণ আন্দামান সাগরে সুনির্দিষ্ট নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। যার জেরে আন্দামান সাগরে ঘন্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই এলাকায় মৎস্যজীবীদেরও সমুদ্রে না বেরনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তামিলনাড়ু এবং পদুচেরিতে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় নিভার-এর তাণ্ডবের ‘ক্ষত’ এখনও মেলায়নি। এরই মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে বুরেভি। ৪ তারিখ সেটি তামিলনাড়ু উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। যার জেরে তামিলনাড়ু এবং সংলগ্ন একায় বৃষ্টি সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এই নিম্নচাপের এর কোনও প্রভাব পড়বে না পশ্চিমবঙ্গে। চলতি সপ্তাহে রাজ্যে তাপমাত্রারও খুব একটা হেরফের হচ্ছে না বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
এদিকে উত্তর ভারত জুড়ে কনকনে ঠান্ডা অব্যাহত। অক্টোবর-নভেম্বর থেকেই হাড়কাঁপানো ঠান্ডা উত্তর ভারতে। গত দু'মাসেই বেশ কয়েকটি পুরোনো রেকর্ড ভেঙেছে দিল্লিতে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঠান্ডার দাপট সবচেয়ে বেশি হবে রাজস্থানে। এছাড়া দিল্লি, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, ওডিশা, মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ, মারাঠাওয়াড়াও অন্যান্য বারের তুলনায় দাপুটে ঠান্ডার সাক্ষী হবে। সেই তুলনায় বিহার, ঝাড়খণ্ডে এবার ঠান্ডা কিছুটা কম থাকবে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও ঠান্ডার দাপট ভালোই থাকবে।