scorecardresearch
 
Advertisement
কলকাতা

কেমন বছর কাটল? হিসেব-নিকেশ বঙ্গ রাজনীতির এই ১০ চরিত্রের

ফিরে দেখা ২০২১
  • 1/11

দেখতে দেখতে কেটে গেল আরও একটা বছর। বাংলার রাজনীতির ইতিহাসে একুশ হয়ে থাকল স্মরণীয়। নানা চরিত্রের উত্থান-পতন হল এই বিগত ৩৬৫ দিনে। তেমনই ১০ নেতানেত্রীকে আজকের ফিরে দেখা। ঠিক কেমন গেল তাঁদের একুশ? 
 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
  • 2/11

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: সেই আটের দশকে যাদবপুরে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে রাজনীতির জায়ান্ট কিলার হয়েছিলেন নেত্রী। তার পর নানা ঘাত-প্রতিঘাতে বয়ে চলেছে তাঁর রাজনৈতিক জীবন। ১৯৯৮ সালে তৃণমূল প্রতিষ্ঠার পর ২০১১ সালে বামেদের হারিয়ে ক্ষমতার দখল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে কঠিন লড়াই ছিল ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন। বছরের শুরুতে মমতার দলকে সুবিধাজনক অবস্থায় দেখতে পাচ্ছিলেন রাজনীতির কারবারিরা। বিজেপির আগ্রাসী প্রচারে মনে হচ্ছিল, একুশেরই বুঝি শেষ মমতার জমানা। উত্তুঙ্গ প্রচার, শাহের রণকৌশল, একের পর এক নেতার দলত্য়াগ, তার সঙ্গে দুর্নীতির মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির তৎপরতা- সব সামলেও নেত্রী লক্ষ্যে অবিচল। হুইলচেয়ারে চষে বেড়িয়েছেন বাংলার এক প্রান্ত থেকে আর একপ্রান্ত। একুশ ফিরিয়ে দিল অতীতের 'স্ট্রিট ফাইটার'কে। যাবতীয় উৎকণ্ঠাকে 'বাপি বাড়ি যা' করে তৃতীয়বার মসনদে কালীঘাট নিবাসী। বছরের শেষে মমতার লক্ষ্য, ২৪-র দিল্লি।   

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
  • 3/11

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়: তৃণমূল শাসক দলে থাকাকালীন অভিষেকের রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু। ২০১৪ সালে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ হন। দলের যুব সভাপতির দায়িত্বও সামলাচ্ছিলেন। এই পর্যন্ত মমতার ভাইপোই তাঁর পরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। একুশের ভোটে ভাইপো থেকে নেতায় উত্তরণ হল অভিষেকের। শরীরের মেদ যেমন ঝড়িয়েছেন তেমনই রাজনীতির প্যাঁজ-পয়জার রপ্ত করেছেন। গত বিধানসভা ভোটে মমতার পর তৃণমূলের প্রচারে রথারূঢ অভিষেক। মোদী-শাহ 'ভাইপো' তুলে ক্রমাগত আক্রমণ করে গিয়েছেন। যেটা তাঁকে আরও রাজনৈতিক উচ্চতা দিয়েছে। প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে অভিষেক দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভোটের ফলপ্রকাশের পর ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে পুরস্কৃতও করেছেন মমতা। তিনি হয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দায়িত্ব পেয়ে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেক ঘোষণা করলেন, অন্য রাজ্যেও যাবে তৃণমূল। শুধুমাত্র একটা-দুটো আসন পেতে নয় বরং ক্ষমতা দখল করবে। বছরের শেষে ত্রিপুরা, গোয়ায় সংগঠন বিস্তারে অভিষেকই হয়ে উঠেছেন তৃণমূলের অন্যতম মুখ। মেঘালয়ে কংগ্রেসের ১২ বিধায়ক ভাঙিয়ে তারা বিরোধী দল। 

Advertisement
প্রশান্ত কিশোর
  • 4/11

প্রশান্ত কিশোর: স্বাধীনতার পর সেই বিধানচন্দ্র রায় থেকে শুরু। তার পর সিদ্ধার্থশংকর রায়, জ্যোতি বসু ও বুদ্ধ ভট্টাচার্য হয়ে মমতা বন্দ্যোপ্য়াধ্যায়। ব্যক্তিই টেনে গিয়েছে বাংলার রাজনীতিকে। বাঁক বদল করিয়ে। কিন্তু রাজনীতিতে 'অরাজনৈতিক' ব্যক্তির প্রবেশ প্রথম দেখল বাংলা। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপির ১৮ আসন প্রাপ্তির পর ভোটকৌশলীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে তৃণমূল। মমতা ও অভিষেকের সঙ্গে প্রশান্ত- এই ত্রয়ীর ফলায় ছিন্নভিন্ন বিজেপির। মোদী-শাহের অশ্বমেধের ঘোড়া থেমে গিয়েছে বাংলায়। 'দিদিকে বলো' থেকে 'বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়'- একের পর চালে জনসংযোগ করেছেন পিকে। দলের প্রচারকৌশল সাজিয়েছেন। ভার্চুয়াল বিশ্বের সঙ্গে  সড়গড় করিয়েছেন তৃণমূলকে। এমনকি দলের নেতানেত্রীদের সম্পর্কেও প্রশান্তের পরামর্শ মেনে নিয়েছেন মমতা। নিটফল, বিজেপির মতো প্রবল শক্তিধর প্রতিপক্ষকে অনায়াসে মাত দিয়ে ক্ষমতায় মমতার দল। এবার আরও বড় লক্ষ্য প্রশান্তের- ২০২৪ সালে মোদীকে হঠানো!

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
  • 5/11

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়: বিজেপি ক্ষমতায় আসলে তিনিই হবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। গতবছর থেকে প্রবল হয়েছিল এমন জল্পনা। যদিও সৌরভ সরাসরি কোনও কথাই বলেননি। কিন্তু যা রটে তা কিছুটা ঘটে! ভোটের আগে হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মহারাজ। মুখ্যমন্ত্রীকে থেকে প্রধানমন্ত্রী খোঁজ নিয়েছেন তাঁর। নানা মহলে চর্চা শুরু হয়, বিজেপির চাপেই কি এই হাল প্রিন্স অব ক্যালকাটার? যাই হোক শেষপর্যন্ত বিজেপি ক্ষমতায় আসেনি। ফলপ্রকাশের পর সৌরভকে জল্পনারই ইতি হয়। বছর শেষে সৌরভ ফের আলোচনার কেন্দ্রে। এবার প্রসঙ্গ- বিরাট কোহলির সঙ্গে তাঁর দ্বৈরথ।                                
 

শুভেন্দু অধিকারী
  • 6/11

শুভেন্দু অধিকারী: ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শিশির-পুত্র। বিধানসভা ভোটে তাঁর নন্দীগ্রাম হয়ে উঠেছিল হেভিওয়েট কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রীকে আধ লাখ ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন শুভেন্দু। ব্যবধান ততটা হয়নি। তবে নন্দীগ্রামে মমতাকে হারিয়েছেন শুভেন্দু। যদিও তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ করেছেন, ভোটগণনায় গড়মিল করা হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় আসেনি। তবে বিরোধী দলনেতা হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর রাজ্য রাজনীতি এখন তিনিই কার্যত বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ।

দিলীপ ঘোষ
  • 7/11

দিলীপ ঘোষ: বছরের শুরুতে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। ভোরে ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণ থেকে শুরু হয় তাঁর কথার বাণ। দিলীপ মানেই গতানুগতিকের বাইরে এক চরিত্র। নিতান্ত মেঠো ভাষায় তাঁর বক্তব্য হাততালি কুড়িয়েছে বিজেপি সমর্থকদের। ভোটে প্রার্থী না হলেও চষে বেরিয়েছেন গোটা রাজ্যে। বিজেপি ক্ষমতায় আসলে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে থাকতেন। বছরটা অবশ্য তেমন গেল না দিলীপের। দলীয় নিয়মে সভাপতির পদ হারিয়েছেন। বিজেপিও ক্ষমতায় আসতে পারেনি। 

Advertisement
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়
  • 8/11

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়: ২০২১ সালের প্রথম মাসেই নেত্রীর ছবি নিয়ে তৃণমূল ছাড়েন অশ্রুসজল রাজীব। বিজেপির দেওয়া চার্টার্ড বিমানে দিল্লি গিয়ে যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে। এরপর ভোট প্রচারে তৃণমূলকে নিশানা করে গিয়েছেন। ভোটে ডোমজুড়ে হারার পর আর বিজেপির সঙ্গে দেখা যায়নি তাঁকে। বরং নেট মাধ্যমে দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনা করেন রাজীব। এরপর বছর ঘোরার আগেই তৃণমূলে 'ঘরওয়াপসি'। সেই একটা বছরেই তৃণমূল থেকে বিজেপি, বিজেপি থেকে তৃণমূল হওয়ার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করলেন রাজীব।
 

আব্বাস সিদ্দিকী
  • 9/11


আব্বাস সিদ্দিকী: বিধানসভা ভোটের আগে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা। সেই দলের সঙ্গে জোট করে বামেরা। বিধানসভা ভোটের আগে ব্রিগেডের ময়দানে আবির্ভাব হয় সংযুক্ত মোর্চার। আব্বাসের সঙ্গে হাত মেলানোর পর সিপিএমের বিরুদ্ধে ওঠে ধর্মীয় রাজনীতির অভিযোগ। তৃণমূল দাবি করে, সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে চায় আইএসএফ। ভোটের প্রচারে আব্বাস সিদ্দিকীর গরম গরম ভাষণ শুনতে ভিড় করেছিলেন প্রচুর মানুষ। সংখ্যালঘু এলাকায় প্রচারে গিয়ে মাতিয়ে দিয়েছিলেন সিদ্দিকী। বাংলায় এই প্রথম ধর্মীয় নেতা রাজনীতির মঞ্চে! কিন্তু ভোটের ফল বলে দিচ্ছে, সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করতে পারেনি আইএসএফ। বাম ও কংগ্রেস শূন্য়। একটি আসন পেয়ে সংযুক্ত মোর্চার মুখরক্ষা করেছে আব্বাস। বছরের শুরুতে চর্চিত পীরজাদাই ডিসেম্বরের শীত আসার আগে ভ্যানিশ!           

অমিত শাহ
  • 10/11

অমিত শাহ: বলে বলে বাজি জিতেছেন। আধুনিক চাণক্য হিসেবেও খ্যাতি পেয়েছেন। এহেন চাণক্য-ভক্তের কৌশল খাটেনি বাংলায়। দুশোর বেশি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে কী না করেছেন! সাজিয়েছিলেন নির্বাচনের যাবতীয় রণনীতি। বাংলায় নামিয়ে দিয়েছিলেন বিভিন্ন প্রান্তের নেতাদের। মোদীকে দিয়ে অন্তত দু'ডজন সভা করিয়েছেন।  অথচ সাফল্য আসেনি। মাত্র ৭৭ আসনেই থমকে যায় বিজেপি। বাংলায় প্রধান বিরোধী দল হলেও রাজ্য দখলের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। অথচ বছরের শুরুতে মনে হচ্ছিল, বিজেপিই বোধহয় ক্ষমতায় আসছে।     

খেলা হবে:
  • 11/11

খেলা হবে: কোনও চরিত্র নয়। তবে তৃণমূলের 'খেলা হবে' লব্জই একটা আস্ত চরিত্র হয়ে উঠেছে একুশে বাংলার রাজনীতিতে। ভাঙা পায়েও সভায় সভায় ফুটবল বিলি করেছেন মমতা। মুষ্টিবদ্ধ হাতে স্লোগান দিয়েছেন, 'খেলা হবে'। তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের 'খেলা হবে' গান কাঁপিয়েছে ভোটের আকাশ-বাতাস। খেলায় বিজেপি হেরেছে। কিন্তু একুশে জুলাইয়ের সভায় মমতা ঘোষণা করেছেন, খেলা এখানেই শেষ হয়। বরং এবার দেশে খেলা হবে। ২০২৪ সালে দিল্লিতে সরকার গড়বে বিরোধীরা। একুশের বাংলায় হিট 'খেলা হবে' পৌঁছে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে। অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি স্লোগান তুলেছে,'খদেরা হবে'।   

Advertisement