ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশে ভাষণ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং চার কেন্দ্রের বিধানসভা উপনির্বাচনে সাফল্য পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল। তার পর এই প্রথম কোনও বড় জনসভা তৃণমূলের। নির্বাচনের সাফল্যকে উদ্যাপন করা হল ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে। দুপুর ১টা ১০ মিনিট নাগাদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্মতলার সভাস্থলে পৌঁছন। সঙ্গে ছিলেন অখিলেশ যাদবও। তাঁকে দেখেই ধর্মতলার ভিড় থেকে উল্লাসধ্বনি ওঠে। হাততালি দিয়ে মমতাকে স্বাগত জানান উপস্থিত সকলে।
মমতার ভাষণ:
অখিলেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তৃতা শুরু করলেন মমতা। তারপর বলেন, 'দিল্লিতে ভয় দেখিয়ে সরকার তৈরি হয়েছে। এই সরকার বেশিদিন চলবে না, পড়ে য়াবে। দিল্লির সরকার বেশিদিন টিকবে না।'
বিজেপির ইস্তফা দেওয়া উচিত ছিল। দিল্লির সরকারের আয়ু বেশিদিন নয়। নির্বাচন কমিশন একতরফা আচরণ করেছে। এজেন্সি দিয়ে ধমকানো-চমকানো হয়েছে। এতকিছুর পরেও আমরা লোকসভা ও বিধানসভায় জিতেছি। আমরা যত জিতব, তত দায়িত্ব বাড়বে। যত জিতব, তত নম্র হতে হবে। আমরা বিত্তবান হতে চাই না, বিবেকবান হতে চাই।
উত্তরবঙ্গে আমরা ভাল ফল করিনি। যারা এখন সমর্থন করেনি, আগামীতে তারাও সমর্থন করবে। মালদাতে আমরা আগামীতে ভাল ফল করব। বিশ্বাস করি, ২০২৬ সালে মালদার আমসত্ত্ব আমরা পাব। আমরা একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা লোকসভায় ৩৮ শতাংশ নির্বাচিত প্রতিনিধি পাঠিয়ে দিয়েছি।
আমরা দায়িত্বে আসার আগে দারিদ্রসীমার নীচে ছিলেন ৫৭.৬ শতাংশ মানুষ। তৃণমূলের আমলে বাংলায় দারিদ্র কমেছে ৪০ শতাংশ।
আমার হাতে ১০ লক্ষ চাকরি রেডি আছে। কোর্টে কেস করে চাকরি আটকাচ্ছে। ২ কোটির বেশি মানুষকে ওবিসি সার্টিফিকেট দিয়েছি। ওবিসি সংরক্ষণ উঠবে না, কারও চাকরি যাবে না। আদালতে আমাদের লড়াই চলবে। পিআইএল করে চাকরি আটকাচ্ছে বিজেপি। অন্যায় করলে আমি তৃণমূলকেও ছাড়ি না।
বিজেপির সংখ্য়াগরিষ্ঠতা পায়নি। কাউকে কাউকে কিনে নিয়েছে। শেয়ার দিয়ে কিনে নিয়েছে। তাও ওরা পারবে না। যারা বিক্রি হয়েছে তাদের নৈতিকতা নেই।
মানুষকে পরিষেবা দেওয়া সবচেয়ে বড় কাজ আমাদের। যারা নির্বাচিত হয়েও কাজ করবেন না, তাদের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক রাখব না। যেন কারও বিরুদ্ধে দল কোনও অভিযোগ না পায়। অভিযোগ পেলে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। আমি চাই আপনারা গরিব থাকুন। তার মানে ঘরে যা আছে, সেটা খেয়ে বেঁচে থাকুন। লোভ করার দরকার নেই।
যেখানে আমরা জিততে পারিনি সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবেন। বলবেন, আমাদের খামতির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
ডিসেম্বর থেকে আমরা বাড়ির টাকা দেব। পুজোর পরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বাকি থাকা আবেদনে অনুমোদন দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে যদি কেউ থেকে থাকে, তাহলে চিন্তা করবেন না। সরকার দেখে নেবে। আমি বাংলাদেশের বিষয়ে কিছু বলতে পারি না। এটা ওদের বিষয়। তবে অসহায় কেউ দরজায় খটখট করলে আমি আশ্রয় দেব। এটা রাষ্ট্রসংঘের নিয়মে আছে। বাংলাদেশ নিয়ে কেউ প্ররোচনাতে পা দেবেন না।