Chandra Grahan 7 September Time: হিন্দু ধর্মে চন্দ্রগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। এটি একটি জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত ঘটনা, যার ধর্মীয় তাৎপর্যও রয়েছে। বছরের দ্বিতীয় এবং শেষ চন্দ্রগ্রহণ ৭ সেপ্টেম্বর ভাদ্রপদ পূর্ণিমায় অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ে চাঁদ লাল রঙের দেখা যাবে বলে এটিকে ব্লাড মুন বলা হচ্ছে। এই চন্দ্রগ্রহণ ভারতে সম্পূর্ণরূপে দৃশ্যমান হবে। ভারতে দেখা যাওয়ার কারণে, এর সূতক সময়কালও বৈধ হবে। সূতক সময়কালে, মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ থাকে। জেনে নিন বছরের দ্বিতীয় চন্দ্রগ্রহণের সময় কী হতে চলেছে, এটি কোন সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে এবং সূতক সময়কাল সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রগ্রহণ কতক্ষণ থেকে কতক্ষণ পর্যন্ত চলবে
৭ সেপ্টেম্বর ভাদ্রপদ পূর্ণিমার দিন চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে এবং ৮ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে শেষ হবে। এবার এটি ৭ সেপ্টেম্বর রাত ০৯:৫৭ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভোর ১:২৬ পর্যন্ত স্থায়ী হবে। চন্দ্রগ্রহণের মোট সময়কাল ৩ ঘন্টা ২৯ মিনিট।
কখন চন্দ্রগ্রহণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে
বৈদিক ক্যালেন্ডার অনুসারে, এই চন্দ্রগ্রহণ রাত ১১টা থেকে ১২:২২ মিনিট পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে।
চন্দ্রগ্রহণের সূতক কাল কখন শুরু হবে
৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২:৫৭ মিনিটে চন্দ্রগ্রহণের সূতক কাল শুরু হবে। সূতক কাল শেষ হয় গ্রহণের সমাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ।
চন্দ্রগ্রহণের সময় কী করবেন না
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, চন্দ্রগ্রহণের সময় খাবার রান্না করা বা খাওয়া উচিত নয়। এই সময় সূঁচ, কাঁচি, ছুরি ইত্যাদি ধারালো জিনিস ব্যবহার করা উচিত নয়। গ্রহণের সময় পুজো নিষিদ্ধ।
ভারতে কোথায় চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে
ভারত ছাড়াও বিশ্বের অনেক জায়গায় চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। ভারতে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, পুনে, লখনউ, হায়দরাবাদ এবং চণ্ডীগড়ে এই গ্রহণ দেখা যাবে। এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড, ফিজি দ্বীপপুঞ্জ এবং অ্যান্টার্কটিকার কিছু অংশে এই গ্রহণ দেখা যাবে। ৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার, ভাদ্রপদ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে চন্দ্রগ্রহণ ঘটতে চলেছে। এই চন্দ্রগ্রহণ সমগ্র ইউরোপ, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আফ্রিকার পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পূর্বাঞ্চলে দৃশ্যমান হবে। ভারতীয় সময় অনুসারে, এই চন্দ্রগ্রহণ রাত ৯:৫৭ মিনিটে শুরু হবে এবং রাত ১১:০১ থেকে ১:২৬ পর্যন্ত গ্রহণ তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে। ভারতে এই চন্দ্রগ্রহণের সময়কাল হবে ৩ ঘন্টা ২৯ মিনিট, যা অনেক দীর্ঘ হবে। পূর্বভাদ্রপদ নক্ষত্রে চাঁদ যখন কুম্ভ রাশিতে থাকে তখন এই চন্দ্রগ্রহণ ঘটবে।
বাংলায় ৮২ মিনিট ধরে গ্রহণ দেখা যাবে
৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রগ্রহণের সময় টকটকে লাল রঙের চাঁদ দেখা যাবে। দেশের প্রায় বেশিরভাগ জায়গা থেকেই এই গ্রহণ প্রত্যক্ষ করা যাবে। তবে আকাশে মেঘ, ধোঁয়াশা ও দূষণের উপর নির্ভর করবে কতটা স্পষ্ট ভাবে আপনি গ্রহণ দেখতে পাবেন। যে সব জায়গায় দূষণের ধুলো ধোঁয়া কম, সেই সব জায়গায় ছাদ বা খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট ভাবে খালি চোখেই গ্রহণ দেখা সম্ভব। সূর্যগ্রহণের মতো চন্দ্রগ্রহণ দেখতে কোনও বিশেষ চশমার প্রয়োজন পড়ে না। কলকাতা-সহ গোটা বাংলাও লাল চাঁদ দেখবে ১ ঘণ্টা ২২ মিনিট ধরে। এই দৃশ্য দেখা যাবে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে। সাম্প্রতিক সময়ে এত ক্ষণ ধরে চন্দ্রগ্রহণ সে ভাবে হয়নি। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণকে অনেক সময় ‘ব্লাড মুন’-ও বলা হয়ে থাকে। কারণ গ্রহণের ফলে চাঁদের রং হয় লাল। ওই সময়ে চাঁদের রং থাকবে টকটকে লাল। দীর্ঘ ক্ষণ ধরে এই চন্দ্রগ্রহণ চলবে। যখন চাঁদ এবং সূর্যের ঠিক মাঝখানে চলে আসে পৃথিবী, তখন তার ছায়া পড়ে চাঁদে। সে সময় হয় পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। চাঁদ পুরোপুরি কালো কিন্তু হয় না। বদলে লাল হয়ে ওঠে। সূর্য আর চাঁদের মাঝে পৃথিবী চলে এলে সূর্যের রশ্মি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ধাক্কা খায়। এই বায়ুমণ্ডল ছোট তরঙ্গ (নীল এবং বেগুনি)-কে ছেঁকে নেয়। শুধু দীর্ঘ (লাল, কমলা) তরঙ্গই চাঁদে গিয়ে পৌঁছোয়। সে কারণে গ্রহণে চাঁদকে লাল দেখায়।
প্রসঙ্গত, এবার, পিতৃপক্ষের শুরুতে এবং শেষে উভয় সময়েই গ্রহণ ঘটছে। প্রথমে চন্দ্রগ্রহণ শুরুতে এবং তারপর সূর্যগ্রহণ শেষের দিকে ঘটছে। পিতৃপক্ষ শুরুর ঠিক একদিন আগে, ভাদ্র পূর্ণিমায় পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ ঘটবে। অমাবস্যার দিন অর্থাৎ মহালয়া, পিতৃপক্ষের শেষের দিন, সূর্যগ্রহণ ঘটছে। সেই কারণে এই বছর সেপ্টেম্বর মাসটি খুবই বিশেষ হবে। ২১ সেপ্টেম্বর আংশিক সূর্যগ্রহণ ঘটবে।