নির্যাতিতা নাবালিকার গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন মা-বাবা। আদালত জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞরা সায় দিলেই অনুমোদন দেওয়া হবে। ৩ জানুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি।
মামলাকারী বালির নিশ্চিন্দার বাসিন্দা। পেশায় রাজমিস্ত্রি। স্ত্রী পরিচারিকার কাজ করেন। মা-বাবা কাজে যাওয়াও বাড়িতে একাই থাকত ১৭ বছরের মেয়ে। মাস কয়েক আগে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই নাবালিকা। অভিযোগ, ১৭ বছরের মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মুন্না ধানুকা। গত ১৩ সেপ্টেম্বর হাওড়া বালি নিশ্চিন্দা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মেয়েটির পরিবার। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। নভেম্বরে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের অম্বর হোটেল থেকে নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। ১৬ নভেম্বর হাওড়া আদালতে পেশ করা হয় মুন্না ও নাবালিকাকে। মুন্নাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। নাবালিকাকে পাঠানো হয় হোমে।
অভিযোগ, নাবালিকাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন মুন্না। ৪৫ বছরের মুন্না বিবাহিত। তাঁর সন্তানও আছে। পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে মুন্নার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে ওই নাবালিকা। সে ২২ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গিয়েছে। হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাকে। স্বাভাবিকভাবে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মা-বাবা। দ্বারস্থ হয়েছেন হাইকোর্টের। এ দিন হাইকোর্ট জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট এলেই রায় দেওয়া হবে। নাবালিকার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেবেন বিশেষজ্ঞরা।
হাওড়া জেলা হাসপাতালে সুপারকে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা নির্দেশ দেন, অবিলম্বে প্রসূতি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে ওই নাবালিকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে ৩ জানুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। নাবালিকার গর্ভপাত করানো সম্ভব কিনা, তার উল্লেখ থাকতে হবে। রিপোর্ট দেখে সিদ্ধান্ত জানাবেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন- জলাভূমি বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে নির্দেশ হাইকোর্টের
নাবালিকার আইনজীবী দেব কুমার শর্মা জানান, সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী গর্ভের সন্তানকে না রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নাবালিকা ও তার পরিবার। নিম্ন আদালতে আবেদন করেও লাভ হয়নি। অথচ গর্ভপাত না করালে মেয়েটির শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি হবে। সঙ্কটে পড়বে তার ভবিষ্যৎও। তাই আদালতে সুবিচার চাইছেন অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন- ফের শহরে ওমিক্রনের থাবা, বিদেশ থেকে ফিরেই পজিটিভ যুবক