আলিপুরে ১১ বছরের কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। আলমারির থেকে মিলল দেহ। এই ঘটনায় কালীপুজোর পরদিনই বিদ্যাসাগর কলোনিতে নেমে এল শোকের ছায়া। উল্লেখ্য, মৃত কিশোরী আরজি কর ধর্ষণ ও খুন মামলায় দোষী সব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি। অর্থাৎ, সঞ্জয়ের বড় দিদির মেয়ে। জানা গিয়েছে, সঞ্জয়ের বড় দিদির মৃত্যুর পর তাঁর ছোট বোন, অর্থাৎ শ্যালিকাই কিশোরীর দেখভাল করতেন। পরে কিশোরীর বাবা শ্যালিকাকে বিয়ে করেন।
পরিবারের দাবি, রবিবার রাত থেকেই ওই কিশোরীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। কিছুক্ষণ পর ঘরের দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হয়। ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া না পেয়ে দরজা ভাঙেন পরিবারের সদস্যরা। ভেতরে ঢুকেই দেখেন, আলমারির কাঠামো থেকে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে কিশোরীর দেহ। দ্রুত তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আত্মহত্যা না রহস্য? এই ঘটনার তদন্তে নেমেছেন পুলিশকর্মীরা। পুলিশ আধিকারিকরা বলছেন ‘পার্শিয়াল হ্যাংগিং’ হয়েছে। অর্থাৎ পুরোপুরি ঝুলন্ত নয়, মেয়েটির পা মাটিতে ছোঁয়াই ছিল। আলমারির কাঠামো থেকেই দড়ি বাঁধা ছিল। আর সেই কারণেই বাড়ছে রহস্য। ১১ বছরের কিশোরী কীভাবে আলমারি থেকে ঝুলে আত্মঘাতী হতে পারে, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
সোমবার এসএসকেএম হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত হয়। প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গলায় ফাঁস থেকেই মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসার পরিভাষায় একে অ্যান্টিমর্টেম ডেথ বলে, অর্থাৎ জীবিত অবস্থাতেই ফাঁস লেগেছিল।
তবে অন্য রহস্যের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুলিশ আধিকারিকরা। আলিপুর থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। তদন্তকারীরা বলছেন, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
মৃত কিশোরীর ঠাকুমা বলছেন, 'ওর বয়স তো মাত্র ১১। ও নিজে থেকে গলায় দড়ি দিতে পারে? এটা বিশ্বাস হয় না।' তিনি আরও দাবি করেন, 'ছেলের প্রথম স্ত্রী, অর্থাৎ ওর মা, আগেই আত্মহত্যা করেছিল। পরে ছেলে শ্যালিকাকে বিয়ে করে। তার পর থেকেই মেয়েটাকে আমাদের থেকে দূরে রাখা হত।'
এলাকার অনেকেই বলছেন, কিশোরী স্বভাবে খুবই শান্ত এবং হাসিখুশি ছিল। তার এই পরিণতি মানতে পারছেন না কেউই।