সমাসন্ন ২০২৬ বিধানসভা ভোট। হাতে আর কয়েক মাস। সদ্য কলকাতা সফরে এসে দলের রণকৌশল ঠিক করলেন অমিত শাহ। বিজেপি সূত্রের খবর, শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে শাহের গোপন বৈঠক হয়েছে। কী রণনীতি তৈরি হয়েছে?
বিজেপি সূত্রে খবর, শুভেন্দু অধিকারী-সুকান্ত মজুমদার সঙ্গে দীর্ঘ ২ ঘন্টা ধরে বৈঠক করেন অমিত শাহ। আলোচ্য বিষয়- ২০২৬ সালে রাজ্য বিজেপি কোন কৌশলে ভোটযুদ্ধে নামবে? ওই বৈঠকে শুভেন্দু একটি রিপোর্টও তুলে দেন শাহের হাতে। রাজ্যে দলের সাংগঠনিক অবস্থার খোঁজখবর নেন প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি।
ভোটের হারে জয়-পরাজয়
বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্য বিধানসভায় ২৯৪ টি আসন। জাদুসংখ্যা ১৪৮। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপি ১৫০-এর বেশি আসনে তৃণমূলের থেকে মাত্র ৪-৫ শতাংশ ভোটে পিছিয়ে আছে। এই রাজ্যে সম্প্রতিকালে নির্বাচনে বিজেপির ভোটের হার ৪০ শতাংশের কাছাকাছিছে। এখান ৩-৪ শতাংশ ভোট বেশি পেলেই কেল্লাফতে। অন্তত ১৫০ আসনে তৃণমূলকে হারানো যাবে। শাহের কাছে এই পাটিগণিতই পেশ করেছেন শুভেন্দু।
ঘটনাচক্রে, নেতাজি ইন্ডোরে দলের কর্মিসভায় রাজ্য দখলে অমিত শাহের মুখেও শোনা গিয়েছে একই কথা। তিনি বলেন,'আর ৪-৫ শতাংশ ভোট বাড়াতে হবে'।
বুথ সংগঠন
বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্যে বুথের সংখ্যা কমবেশি ৮০ হাজার। এর মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার বুথে ৯০ শতাংশ বা তারও বেশি ভোটার মুসলিম। সেই সব এলাকায় বুথ কমিটি গঠন করার কথা বিজেপি ভাবছেই না। এর বাইরেও প্রায় ৯,০০০ বুথ রয়েছে, যেখানে শাসক দলে শক্তিশালী। সেখানেও বুথ কমিটি দখল একপ্রকার অসম্ভব। বিজেপিও চাইছে না শক্তিক্ষয় করতে। বরং বাকি ৫৭ হাজার বুথে নজর দিচ্ছে তারা। সেই সব বুথে যাতে পূর্ণাঙ্গ বুথ কমিটি থাকে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন বনসলরা। সেই লক্ষ্য মোটামুটি ছুঁয়ে ফেলা গেলে বাকি বুথগুলিতেও শক্তিবৃদ্ধি দিকে নজর দেওয়া হবে।
হিন্দুত্বের লাইন
কলকাতায় এসে সাধুসন্তদের সঙ্গেও রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলায় হিন্দুত্বের লাইনেই হাঁটছেন শুভেন্দু-সুকান্তরা। অমিত শাহের সঙ্গে সাধুসন্তদের বৈঠকও সেই ধারাতেই সংযোজন। অনেকেই মনে করছেন, আগামী গেরুয়া সংগঠনগুলির কর্মসূচির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। লক্ষ্য, হিন্দু ভোট এক জায়গায় আনা।
ইস্যু অনুপ্রবেশ
ওই বৈঠকে অমিত শাহ স্পষ্ট করেছেন, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই বাংলার ক্ষমতায় আসতে চায় বিজেপি। প্রণিধানযোগ্য, নেতাজি ইন্ডোরের সভায় 'অনুপ্রবেশ' নিয়ে খড়্গহস্ত ছিলেন অমিত শাহ। বলেছিলেন,'অনুপ্রবেশকারীদের ভোটেই ক্ষমতায় আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ভোটেই ভাইপোকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করতে চান। তবে সেটা হবে না'।