অবশেষে আনন্দপুরের খালে পঞ্চান্নগ্রামের নিখোঁজ তরুণীর দেহ উদ্ধার হল। আগেই খাল থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণীর সঙ্গীর দেহ। স্কুটার চালানো শিখতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন তরুণ-তরুণী। সোমবার রাতে দুজনে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, এরপর আর ফেরেননি। তরুণীর পরিবারের অভিযোগ ছিল, তাঁদের মেয়েকে মারধর করে খালে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু খালে তল্লাশি চালালে প্রথমে উদ্ধার হয় নিখোঁজ যুবকের দেহ। এবার মিলল ওই তরুণীর দেহও।
সোমবার সন্ধ্যায় নতুন কেনা স্কুটি চালানো শিখতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রনিতা বৈদ্য নামে ওই তরুণী৷ এর পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি৷ পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ আনন্দপুর থানায় খবর আসে, এক তরুণ এবং তরুণীকে স্থানীয় খালে ঝাঁপ দিতে দেখা গিয়েছে৷ এর পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিখোঁজ দু জনের খোঁজ শুরু করে পুলিশ৷ সোমবার রাত থেকে ডুবুরি নামানো হয় তরুণীকে খোঁজার উদ্দেশ্যে। মঙ্গলবার খাল থেকে প্রথমে উদ্ধার হয় এক যুবকের দেহ। সেই দেহ ছিল রোহিত আগরওয়ালের। তাঁর হাতের মুঠোয় পাওয়া গিয়েছে স্কুটির চাবি।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিখোঁজ তরুণীর নাম রনিতা বৈদ্য (২৩)। স্কুটার চালানো শিখবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে গেছিলেন প্রশিক্ষক বন্ধু রোহিত আগারওয়াল। মেয়ে বাড়ি না ফেরায় তরুণীর পরিবারের সদস্যদের দুশ্চিন্তা হয়। ফোন করলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কয়েকঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। শেষে আনন্দপুরে একটি খালের ধারে স্কুটার ও মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুটি শেখাতে এসে দুজনের মধ্যে বচসা বাঁধে। রনিতাকে মারধর করে ধাক্কা দিয়ে খালে ফেলে দেয় রোহিত। তারপর হঠাৎ কেউই নেই। পড়ে রয়েছে স্কুটি ও একটি মোবাইল ফোন। স্থানীয়দের সন্দেহ হয় যে, তরুণীকে খালে ধাক্কা মেরে ফেলে পালিয়েছেন যুবক। এরপর খবর দেওয়া হয় আনন্দপুর থানায়। ঘটনাস্থলে এসে পুরো বিষয় জানার পর ডাকা হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও ডুবুরি। সোমবার রাত সাড়ে ১২ টায় খালে নামানো হয় ডুবুরি। পঞ্চান্নগ্রাম এলাকা থেকে ঘটনাস্থলে চলে আসেন যুবতীর পরিবারের সদস্যরাও।
অবশেষে আনন্দপুরের খালে পঞ্চান্নগ্রামের নিখোঁজ তরুণীর দেহ উদ্ধার হল। আগেই খাল থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণীর সঙ্গীর মৃতদেহ। গতকাল রাত থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। এদিন সকালেও চলে। সেই তল্লাশিতে এর আগে যুবকের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। যে জায়গায় যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে, তার কয়েকশো মিটার দূরে লোহার ব্রিজের কাছে পাওয়া যায় যুবতীরদেহও। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, নিখোঁজ তরুণীরই মৃতদেহ এটি। বেশকিছু সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশ ইতিমধ্যে পেয়েছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সিসি টিভি ফুটেজ থেকে যেটা জানা যাচ্ছে, গতকাল এই ঘটনা ঘটার ঠিক ৪৫ মিনিট আগে রাস্তার ধারে তাঁদের মধ্যে বচসা বাধে, একপ্রকার হাতাহাতির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তারপর দৌড়ে ওই তরুণী খালের কিনারায় চলে আসেন। ওই যুবককেও পিছন পিছন আসতে দেখা যায়। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন, কেউ কি সেই সময় খালে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ? নাকি রয়েছে অন্য কোনও রহস্য ? ওই যুবক এগিয়ে এলে দুজনেই জলে পড়ে যান। তারপরই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যদিও, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তদন্তকারীরা। কারণ, তদন্তকারীরা বলছেন, বাইরে থেকে শরীরে কোনও আঘাত দেখা যায়নি। জলে ডুবেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে কি না বিষয়টি ময়নাতদন্তের পর স্পষ্ট হবে। আপাতত,দেহ দুটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে আনন্দপুর থানার পুলিশ।