গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী আমির খানের আরও সম্পত্তির হদিশ মিলল। গেমিং অ্যাপ-কাণ্ডে আমির খানকে আগেই গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। কিছুদিন আগেই আমিরের সল্টলেকের অফিসে হানা দিয়ে ১৫০০ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছিল পুলিশ। অ্যাকাউন্টগুলি থেকে সম্প্রতী ২০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল তদন্তকারীরা। এবার দেশ-বিদেশের ১৬০০ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা ৩২ কোটি টাকা ফ্রিজ করল লালবাজার। পুলিশ সূত্রে খবর, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ও বিদেশ থেকে এই অ্যাকাউন্টগুলিতে লেনদেন করা হত।
এই অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমেই টাকার অবৈধ লেনদেন করা হত বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও টাকা বিনিয়োগ করা হত। অ্যাকাউন্টগুলির নথিপত্র যাচাই করেই এই বিপুল অর্থের খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। গত ১০ সেপ্টেম্বর একটি মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগের তদন্তে নেমে গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলি, পার্ক স্ট্রিট, মোমিনপুরের বন্দর এলাকা, নিউটাউন-সহ শহরের ছ'টি জায়গায় অভিযান শুরু করেছিল ইডি।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও আমির খানের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। গার্ডেনরিচে আমির খানের বাড়ির খাটের তলা থেকে প্রায় ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। রপর একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে আমির খানের ২০ কোটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এবার আরও ৩২ কোটি টাকা ফ্রিজ করল লালবাজার। পাশাপাশি বিট কয়েনে বিনিয়োগ করা ১০০ কোটি টাকারও হদিশ পায় পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয় প্রচুর বিট কয়েনও।
লেনদেনকারীদের বিষয় তথ্য জানতে মরিয়া লালবাজারের গোয়েন্দারা। এর সঙ্গে আমির খান সঙ্গী শুভজিৎ শ্রীমাণির যোগ রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে উঠে আসছে কলকাতা ছাড়াও গোটা রাজ্য, মধ্যপ্রাচ্য এবং বাংলাদেশের একাধিক যুবকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে আমির খান। গোয়েন্দাদের কাছে জেরায় আমির জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ওই বিপুল পরিমাণ টাকা সে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে রেখেছিল। বিটকয়েন ভাঙিয়েই ১৭ কোটি টাকা বাড়িতে রাখা হয়েছিল।
কেমন করে ঘটনা প্রকাশ্যে আসে?
ইডি সূত্রে খবর, একটি মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে বহু গ্রাহককে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছিল আমির খানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, আমির খান–সহ একাধিক ব্যক্তি এই প্রতারণা কাজের সঙ্গে জড়িত। খেলার ফাঁদে ফেলে মানুষজনকে প্রতারিত করার অভিযোর রয়েছে আমির খানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্ক স্ট্রিট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এই ঘটনায় আগেই ৬জনকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। তবে পরে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে তদন্ত নামে ইডি। গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলি, পার্ক স্ট্রিট, মোমিনপুরের বন্দর এলাকা, নিউটাউন–সহ শহরের একাধিক জায়গায় অভিযান চালায় ইডি। আর তারপরই আমিরের ঘরের খাটের তলা থেকে মোট ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়। কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (ইডি) আমিরের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে। আমিরকে জিজ্ঞাসাবাদের ফলে ধীরে ধীরে খুলছে এই মামলার জট।