scorecardresearch
 

কামারহাটি গণপিটুনি: 'গ্রেফতারি'র রক্ষাকবচ চেয়ে হাইকোর্টে ভিডিও পোস্ট করা সেই যুবক

পুলিশি তলবের পর নিরাপত্তা চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে গেলেন রামপুরহাটের ওই যুবক। বৃহস্পতিবার ওই যুবক ও আরও এক ব্যক্তি কলকাতা হাইকোর্টে যান। আদালতের সামনে, উভয় ব্যক্তি বলেন, পুলিশ তাদের জরুরিভাবে বেলঘরিয়া থানায় হাজির হওয়ার জন্য তলব করেছে। পুলিশ এফআইআর দায়ের করে গ্রেফতার করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। রক্ষাকবচ তারা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

Advertisement
গ্রেফতার হতে পারেন আশঙ্কা আড়িয়াদহের ভিডিও পোস্ট করা যুবকের গ্রেফতার হতে পারেন আশঙ্কা আড়িয়াদহের ভিডিও পোস্ট করা যুবকের

গত ১ জুলাই আড়িয়াদহে মা ও ছেলেকে মারধরের ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিশ জয়ন্ত সিং, সৈকত মান্না ও সুদীপ সাহাকে গ্রেফতার করেছে। এরপর জয়ন্ত-বাহিনীর বর্বরতার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে অভিষেক বর্মণ, সুভাষ বেরা এবং সুমন দে-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ভাইরাল ভিডিওতে বর্বর অত্যাচারে যুক্তদের মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে,  আদালতের নির্দেশে তাদেরই পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।  এর মাঝেই কামারহাটির আড়িয়াদহের তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবকে নিয়ে প্রকাশ্যে এসেছে  আরও একটি  চাঞ্চল্যকর ভিডিও। সেখানে দেখা গেছে , এক নাবালককে বিবস্ত্র করে চলছে নারকীয় অত্যাচার। ঘটনার নেপথ্যে উঠেছে  জয়ন্ত সিং বাহিনীর নাম। কামারহাটির আড়িয়াদহের মা, ছেলেকে পিটুনির ঘটনায় অভিযুক্ত জয়ন্ত সিংও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। 

এদিকে জয়ন্ত-বাহিনীর হাতে আড়িয়াদহের কলেজ ছাত্র ও তাঁর মাকে নির্মম মারধরের ঘটনার ভিডিও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন রামপুরহাটের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের যে যুবক, তাঁকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে রামপুরহাট থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। বর্বরতার দৃশ্য দেখে ক্ষুব্ধ রামপুরহাটের স্নাতোকোত্তর উত্তীর্ণ এক  যুবক  ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন, যা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে নির্দিষ্টভাবে রামপুরহাট থানাকে সেই বিষয়ে অবগত করা হয়। বিস্ময়করভাবে রামপুরহাট থানার তরফে মঙ্গলবার গভীর রাতে শুভমকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শুভম জানিয়েছেন, কেন তিনি এই পোস্ট করেছেন, তার উত্তর চাওয়ার পাশাপাশি এই ধরনের পোস্ট করা থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে কোনও খারাপ ব্যবহার করা হয়নি পুলিশের তরফে। 

এদিকে পুলিশি তলবের পর নিরাপত্তা চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে গেলেন রামপুরহাটের ওই যুবক। বৃহস্পতিবার ওই যুবক ও আরও এক ব্যক্তি কলকাতা হাইকোর্টে যান। আদালতের সামনে, উভয় ব্যক্তি বলেন, পুলিশ তাদের জরুরিভাবে বেলঘরিয়া থানায় হাজির হওয়ার জন্য তলব করেছে। পুলিশ এফআইআর দায়ের করে গ্রেফতার করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। রক্ষাকবচ  তারা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। 

আরও পড়ুন

Advertisement

নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ওই যুব বলেন, আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় আড়িয়াদহের একটি ক্লাবে চুরির সন্দেহে একজন নিরস্ত্র মহিলার একটি পুরানো ভিডিও পোস্ট করেছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি ১৮ জুলাই প্রায় ৮টা ৩০ মিনিটে ভিডিওটি পোস্ট করেছি। ভিডিওটি ১৬  লাখ ভিউ হয়েছে। পুলিশ আমাকে ডেকে ভিডিওটির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। আমি ছাত্র হিসাবে সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের  আদালতে নির্দিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রয়েছে। একজন মহিলাকে এমন নৃশংসভাবে মারধর দেখে আমরা  হতবাক। আমাদের বাড়িতেও মা বোন আছে।  এভাবে চলতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা থাকবে না। তাই ভিডিওটি পোস্ট করলাম। আর ব্যারাকপুর পুলিশ স্বীকার করেছে যে ভিডিওটি আসল কিন্তু পুরনো ভিডিও। তারা স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপও নিয়েছে।

আড়িয়াদহে জয়ন্ত  বাহিনীর অত্যাচারের ভিডিও পোস্ট করায় বেলঘরিয়া থানায় আজই তলব করা হয়েছে ওই দুই যুবককে, গ্রেফতারির আশঙ্কায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ  রয়েছেন তাঁরা। এই নিয়ে মামলা দায়েরের অনুমতি বিচারপতি অমৃতা সিন্হা।

Advertisement