scorecardresearch
 

Arpita Mukherjee: টাকা-গয়না-ফ্ল্যাট অর্পিতার থেকে উদ্ধার বিপুল সম্পত্তির ভবিষ্যত কী? কোথায় রাখা হবে

Arpita Mukherjee: ২৩ জুলাই প্রথমবার অর্পিতার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় ইডি। এই সময়ে ইডি প্রায় ২১ কোটি টাকা নগদ পেয়েছে। শুধু তাই নয়, অর্পিতার বাড়ি থেকে প্রায় ২০টি মোবাইল এবং ৫০ লক্ষ টাকার গয়নাও উদ্ধার করেছে ইডি। অর্পিতার বাড়ি থেকে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার বৈদেশিক মুদ্রাও পেয়েছে ইডি।

Advertisement
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ফাইল ছবি অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • টাকা-গয়না-ফ্ল্যাট অর্পিতার থেকে উদ্ধার বিপুল সম্পত্তির ভবিষ্যত কী
  • কোথায় রাখা হবে
  • জানুন বিস্তারিত তথ্য

Arpita Mukherjee: অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এখন শিরোনামে। বিপুল পরিমাণে সম্পত্তি এবং টাকা তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করেছে ইডি। আদালতের নির্দেশে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় আগামী ৩রা অগাস্ট পর্যন্ত ইডি হেফাজতে থাকবেন। এখনও পর্যন্ত অর্পিতার ৪টি ফ্ল্যাট, জমি, ৩টে কোম্পানি, সোনা, ৫০ কোটি মতো নগদ টাকা, মূল্যবান সামগ্রীর হদিশ পেয়েছে ইডি। অর্পিতার চারটি গাড়ি তাঁর ডায়মন্ড সিটি কমপ্লেক্স থেকে নিখোঁজও বলে জানা গেছে। এই চারটি গাড়ি হল মার্সিডিজ বেঞ্জ, অডি এ৪, হোন্ডা সিআরভি এবং হোন্ডা সিটি। এর মধ্যে দুটি গাড়ি - একটি হোন্ডা সিটি এবং অন্যটি অডি অর্পিতার নামে। গাড়িগুলির খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।

কত টাকা উদ্ধার হয়েছে

প্রথম অভিযান
নগদ - ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা
সোনা- ৭০ লাখ টাকা

দ্বিতীয় অভিযান
নগদ - ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা
সোনা- ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা

২৩ জুলাই প্রথমবার অর্পিতার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় ইডি। এই সময়ে ইডি প্রায় ২১ কোটি টাকা নগদ পেয়েছে। শুধু তাই নয়, অর্পিতার বাড়ি থেকে প্রায় ২০টি মোবাইল এবং ৫০ লক্ষ টাকার গয়নাও উদ্ধার করেছে ইডি। অর্পিতার বাড়ি থেকে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার বৈদেশিক মুদ্রাও পেয়েছে ইডি। এরপরই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। ইডির প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু বলা হচ্ছে ৭০ কোটি টাকা এখনও অনেক জায়গায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। 

ইডি-র রাডারে অর্পিতার এই তিনটি সংস্থা-
প্রথম কোম্পানি-
ইডির রাডারে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের প্রথম কোম্পানি হল সিমবায়োসিস মার্চেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড। ২০১১ সালের ২১ মার্চ অর্পিতাকে এই কোম্পানির ডিরেক্টর করা হয়। কাগজে কলমে এই কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পাইকারি ব্যবসা করে। 

Advertisement

দ্বিতীয় কোম্পানি- আরেকটি কোম্পানির নাম সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড। অর্পিতা ২০১১ সালের ৯ নভেম্বর এই কোম্পানিতে পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত হন।এই ফার্মটি ২০০১ সালে ১ কোটি টাকার শেয়ার মূলধন নিয়ে শুরু হয়েছিল। ২০১১ সালে অর্পিতার নিয়োগের পরে ২০১৮ সালে কল্যাণ ধরকেও সংস্থার পরিচালক করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত এই ফার্মে মাত্র দুজন পরিচালক আছেন - অর্পিতা এবং কল্যাণ ধর। কাগজে কলমে, এই কোম্পানি বিশেষ যন্ত্রপাতি তৈরি করে।

অর্পিতার তৃতীয় কোম্পানি- অর্পিতা ইচ্ছা এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। অর্পিতা ছাড়াও কল্যাণ ধরও এই সংস্থার একজন পরিচালক। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অর্পিতা ছাড়াও কল্যাণ ধর তিনটি কোম্পানিতেই একজন পরিচালক।

ইডি-র নিয়ম বলছে
বর্তমানে বিষয়টি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তদন্ত করছে। অতএব, এই কেস সংক্রান্ত যা কিছু নগদ, গয়না, বাড়ি এবং গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে, তা আপাতত ইডি-র দখলে থাকবে। বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত। এ সময় কোনো সম্পত্তি কেনা-বেচা করা যাবে না। বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি হিসেবে বাড়ি থাকলে, আসামিরা সেখানে বসবাস, বিক্রি বা ভাড়া দিতে পারবেন না। নিয়ম অনুসারে, সংযুক্ত সম্পত্তির বিবরণ ইডি PMLA আদালতে দেবে। ED-কে সর্বোচ্চ ৬ মাসের মধ্যে PMLA আইনের অধীনে বাজেয়াপ্ত পণ্যগুলির সম্পূর্ণ তালিকা আদালতে জমা দিতে হবে। যেখানে নগদ টাকা, বাড়িঘর, গহনা ও গাড়ি-সহ অন্যান্য জিনিসপত্রের তালিকা তুলে দিতে হবে। 

আয়কর বিভাগ

আদালতে মামলা চলার আগে পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পত্তি সম্পূর্ণভাবে ইডি-র দখলে থাকবে। অভিযুক্তরা দোষী সাব্যস্ত হলে, ইডি এই সম্পত্তিগুলি সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে। প্রথমে নগদ টাকা স্থানান্তর করা হয়। তবে এই ক্ষেত্রে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় যদি বলেন যে এই বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি তাঁর নিজের, তাহলে তাঁকে এর প্রমাণ দিতে হবে। তাঁকে আদালতে জানাতে হবে এত সম্পদ কোথা থেকে এল, আয়ের উৎস কী? এমনকী মানি লন্ডারিং আইনে ইডি জরিমানা দিতে পারে। এই মামলায় উদ্ধার হওয়া পরিমাণ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে শীঘ্রই আয়কর বিভাগও এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পক্ষে প্রমাণ করা সহজ হবে না যে এই সম্পত্তি তাঁর। এতে তাঁরা ব্যর্থ হলে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির ওপর সরকারের অধিকার থাকবে। নগদ অবিলম্বে সরকারি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হবে এবং সরকার বাকি সম্পত্তি বিক্রি করে অর্থ পাবে। এমন আইনে রয়েছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময় নেয়।

আয়কর বিধি কী বলে?
আয়কর বিধি অনুযায়ী, অপ্রকাশিত আয় সামনে এলে করসহ জরিমানার বিধান রয়েছে। যেখানে ট্যাক্স স্ল্যাব অনুযায়ী ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত কর এবং জরিমানা ধার্য করা যেতে পারে। অঘোষিত সম্পদের ক্ষেত্রে, আয়কর বিভাগ দ্বারা সর্বোচ্চ ৩৩ শতাংশ কর আরোপ করা হয়। যেখানে সারচার্জ রয়েছে ৩ শতাংশ। এর পরে ২০০% পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী, চলতি আর্থিক বছরে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি অধিগ্রহণ করা হলে তার উপর মোট ৮৪ শতাংশ কর ও জরিমানা ধার্য করা হবে। কিন্তু এই কালো টাকা যদি আগের বছরের হয় তাহলে তার উপর ৯৯  শতাংশ পর্যন্ত কর ও জরিমানা ধার্য করা যেতে পারে।

Advertisement